Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

ইরানে চলছে ভোট গণনা, খামেনির অনুগত জালিলি এগিয়ে

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চার প্রার্থী। বাম থেকে- সাঈদ জালিলি, মাসুদ পেজেশকিয়ান, মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি এবং মোহাম্মদ বাঘার ঘালিবাফ।
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চার প্রার্থী। বাম থেকে- সাঈদ জালিলি, মাসুদ পেজেশকিয়ান, মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি এবং মোহাম্মদ বাঘার ঘালিবাফ।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে গণনা। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অনুগত হিসেবে পরিচিত কট্টরপন্থী প্রার্থী সাঈদ জালিলি স্বল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮০ লাখের বেশি ব্যালট গণনার পর দেখা গেছে, এক সময় দেশটির পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়া সাঈদ জালিলি প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন।

ফল ঘোষণার শুরুর দিকে সংস্কারপন্থী প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান প্রথমদিকে এগিয়ে থাকলেও এক পর্যায়ে তাকে পেছনে ফেলেন জালিলি। এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রাথমিক ফলে মাসুদ পেজেশকিয়ানের প্রাপ্ত ভোটের হার ৪০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির উত্তরসূরী হতে এবারের নির্বাচনে মোট ছয়জন প্রার্থী হয়েছিলেন। তারা হলেন- মোহাম্মদ বাঘার ঘালিবাফ, সাঈদ জালিলি, মাসুদ পেজেশকিয়ান, মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি, আমির-হোসেন কাজিজাদেহ হাশেমি ও আলিরেজা জাকানি।

এদের মধ্যে দুই রক্ষণশীল প্রার্থী আমির-হোসেন কাজিজাদেহ হাশেমি ও আলিরেজা জাকানি তাদের রাজনৈতিক শিবিরে ভোট বিভক্তি এড়াতে বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

ভোটযুদ্ধে থাকা বাকি চার প্রার্থীর মধ্যে মূল লড়াইটি অবশ্য হচ্ছে কট্টরপন্থী সাঈদ জালিলি ও মধ্যপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে।

সাঈদ জালিলি এখন পর্যন্ত ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে থাকলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে তাকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে। আর কোনও প্রার্থী এককভাবে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে নির্বাচন গড়াবে দ্বিতীয় ধাপে। আগামী ৫ জুলাই দ্বিতীয় ধাপের ভোটের দিন ধার্য রয়েছে।

নির্বাচন যদি শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে গড়ায় সেক্ষেত্রে লড়াই হবে প্রথম ধাপে ভোটে এগিয়ে থাকা শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে।

নির্বাচনের আগের জনমত জরিপে ঘালিবাফ, পেজেশকিয়ান ও জালিলির মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত মিলেছিল। ঘালিবাফও জালিলির মতো রক্ষণশীল শিবির থেকে প্রার্থী হয়েছেন। আর মাসুদ পেজেশকিয়ান একমাত্র সংস্কারবাদী প্রার্থী।

গত মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হল দেশটিতে।

গত ১৯ মে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় রাইসির সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আরও সাতজন নিহত হন।

ইরানের কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নৈতিকতা পুলিশের হাতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে ২০২২ সালে বিক্ষোভের বিশাল তরঙ্গে কেঁপে উঠেছিল ইরান।

ওই বিক্ষোভ দমনে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির কঠোর ভূমিকা নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ওই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমন-পীড়নে শতাধিক ইরানি নিহত হন এবং হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আনাদুল এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ৬ কোটি ৪০ লাখ ভোটার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্য ছিলেন। এদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ। ফলে এবারের নির্বাচনে তরুণদের ভোট প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

তবে এবারের নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোট পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মার্চে পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং ২০২১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও ভোটের হার কম ছিল।

২০২১ সালে প্রধান প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করায় সংস্কারপন্থীরা কার্যত নির্বাচন বর্জন করেছিল। তবে এবার সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামিসহ শীর্ষ সংস্কারবাদী নেতারা দেশের মানুষকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তার এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায় দেশের সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

ইরানে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৯ শতাংশ, যা দেশটিতে ইসলামী বিপ্লবের পর সর্বনিম্ন। সংস্কারপন্থীরা ভোট বর্জন করায় গত নির্বাচনে রক্ষণশীল প্রার্থী ইব্রাহিম রাইসি বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন। এর আগে সর্বনিম্ন ভোটার উপস্থিতি ছিল ১৯৯৩ সালে, ৫০ দশমিক ৬ শতাংশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত