Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড আটকাতে করা রিট প্রত্যাহার হাসনাতদের

high court
[publishpress_authors_box]

আওয়ামী লীগসহ ১১ দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আটকানোর দাবিতে উচ্চ আদালতে দুটি রিট আবেদন করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক।

আবেদনে ভুলভ্রান্তি সামনে এলে পরে তা সংশোধনের কথাও বলেছিলেন তিন রিটকারী ও তাদের আইনজীবী।

সোমবার হাইকোর্টের এক বেঞ্চ থেকে রিট দুটি মঙ্গলবার আরেক বেঞ্চের কার্যতালিকাতেও উঠেছিল।

কিন্তু মঙ্গলবার সকালে রিটকারীদের আইনজীবী আদালতকে জানান, আবেদনকারীদের ইচ্ছায় দুটি রিটই প্রত্যাহার চান তারা। এ সময় দুই বিচারকসহ উপস্থিত আইনজীবীরা হেসে ফেলেন। এরপরই সেগুলো কার্যতালিকা থেকে ‘আউট অব লিস্ট’ করার আদেশ দেয় আদালত।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম ও মো. হাসিবুল ইসলাম গত রবিবার হাইকোর্টে রিট আবেদন দুটি করেন।

আবেদনে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল (দিলীপ বড়ুয়া), বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলকে (বাসদ) বিবাদী করা হয়।

রিট আবেদনে আওয়ামী লীগসহ ওই ১১ দলকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা ও এসব দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচনে এসব দল যাতে অংশ নিতে না পারে, সে নির্দেশনার কথাও বলা হয়েছিল।

পৃথক আরেক রিটে দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ ওই ১১টি রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের প্রাপ্ত সুবিধা (প্লট, কর ও শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি, বেতন-ভাতা) পুনরুদ্ধারের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

এসব রাজনৈতিক দলের অধিকাংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে থাকলেও সিপিবি, বাসদ, এলডিপি সেই জোটে নেই। বরং এই তিন দল আওয়ামী লীগ সরকার হটানোর দাবিতে আন্দোলনে ছিল।

এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী আহসানুল করিম সোমবার বলেছিলেন, তারা বিবাদীদের তালিকা সংশোধন করবেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। ফাইল ছবি

সোমবার বিকালে রাজধানীর বিজয়নগরে একটি সভায় অংশগ্রহণ শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের কাছে রিট দুটি নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।

তখন তিনি বলেছিলেন, রিট দুটি সম্পূর্ণ করে কাল-পরশুর মধ্যে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে।

এরই মধ্যে মঙ্গলবার বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় রিট দুটি ২০৮ ও ২০৯ ক্রমিকে আসে।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী আহসানুল করিম এ আদালতে উপস্থিত হয়ে দুটি আবেদনের বিষয়ে বলেন, ক্লায়েন্টদের ইচ্ছায় তারা দুটি রিটই ‘নন প্রসিকিউশন’ চান। এর মানে তারা মামলা চালাবেন না।

পরে এই আইনজীবী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “রিটকারীরা চিন্তা-ভাবনা করে দেখেছেন যে, দেশের স্বার্থে এই রিট প্রসিড (অগ্রসর) করা ঠিক হবে না। এজন্য দুটি রিটই আদালতের কার্যতালিকা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।”

এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করেছিল বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

মানবাধিকার সংস্থা সারদা সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া গত ১৯ আগস্ট জনস্বার্থে ওই রিট করেছিলেন। এতে জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে হত্যার ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

গত ২৭ আগস্ট ওই রিটের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান হাইকোর্টকে রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার ইচ্ছা বর্তমান সরকারের নেই।”

অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান অনুযায়ী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে বলেও সেদিন হাইকোর্টকে জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত