জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড ও গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এর মধ্যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ৭৫ জন এবং গত ১৫ বছরের গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২২ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি জানান, যাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রয়েছেন।
শেখ হাসিনা ছাড়া বাকি কাদের পাসপোর্ট বাতিল হয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনই সব নাম বলা যাচ্ছে না। এতটুক তথ্যই পাসপোর্ট অফিস থেকে এসেছে। বাকি তথ্য আসলে তা সময়মতো জানানো হবে।”
ভারতকে শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিলের কথা জানানো হয়েছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত প্রধান উপদেষ্ঠার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “ভারত এরই মধ্যে শেখ হাসিনার জন্য ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করেছে। আমরা তাদের জানিয়েছি। কিন্তু আপনারা জানেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা একটি কূটনৈতিক বিষয়। আমরা সেই কাজ করছি।”
এছাড়া পাসপোর্ট অফিসকে আধুনিক ও দালালমুক্ত করার জন্য সরকারের নির্ধারিত এজেন্ট ঠিক করার সিদ্ধান্তর কথা জানান তিনি।
ই-পাসপোর্ট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, “ই-পাসপোর্টের আবেদন করলে তা হলে দেশের ভিতরে সবাই একটা এসএমএস পান। আগামীকাল (বুধবার) থেকে বাংলাদেশের বাইরে যারা আছেন তারাও আবেদন করলে এই এসএমএস পাবেন।”
এছাড়া মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট দাপ্তরিক জটিলতায় প্রায় দুই লাখ আবেদন জমা পড়েছিল; তাও দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে জানান উপ-প্রেস সচিব।
দেশে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে ১১ কোটি ১ লাখ ৪৪ হাজার পাঠ্যপুস্তক বিতরণ হয়েছে বলে জানান আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, “সকল টেক্সট বুক বিতরণ করা যায়নি; তাতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা এনসিটিবির সাথে কথা বলেছি, তারা আমাদের জানিয়েছে, এই মাসের মধ্যেই সকল পাঠ্যপুস্তক বিতরণ সম্ভব।
“আগের সরকার ভারত থেকে টেক্সট বুক ছাপিয়ে নিয়ে আসত। এবার আমরা বাংলাদেশ থেকেই ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এতে কিছুটা সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু পরবর্তীতে খুব একটা ঝামেলা হবে না।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এসেছিলেন আজকে (মঙ্গলবার) প্রধান উপদেষ্ঠার সাথে দেখা করতে। প্রধান উপদেষ্টার সাথে ওয়ান টু ওয়ান আলোচনা হয়েছে তার। এখানে নির্বাচনী সংস্কার, জাতীয় ঐক্য, ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্ম এসব বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে।