Beta
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

ভোটে আওয়ামী লীগ থাকবে? কঠোর বার্তা হাসনাত-সারজিসের

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
[publishpress_authors_box]

অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতভেদ আবার প্রকাশ্য হলো।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রশ্নের মীমাংসা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্য থেকে এসেছে ভিন্ন বার্তা।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে ভোটে যে কোনোভাবে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ঠেকানোর ঘোষণা এসেছে।

সমন্বয়ক সারজিস আলম মঙ্গলবার রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, “গণহত্যার বিচারের পূর্বে আওয়ামী লীগকে কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিব না। প্রয়োজনে ২য় অভ্যুত্থান হবে।”

ভারতের সংবাদপত্র দ্য হিন্দুকে দেওয়া ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার প্রকাশের পরপরই এই পোস্ট দেন সারজিস, যিনি বর্তমানে সরকারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জুলাই ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারের পর নির্বাচন আয়োজন হবে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কি না- হিন্দুর সাংবাদিকের সেই প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেছিলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত আমরা নিতে চাই না। বিএনপি এরই মধ্যে বলেছে, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হওয়া উচিৎ। সুতরাং তারা একটি রায় দিয়েই দিয়েছে। আর আমরা বড় দলগুলোর মতের বিপক্ষে গিয়ে কিছু করব না।”

‘ফ্যাসিবাদী’ দল হিসাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে উঠলেও তা নিয়ে ভিন্নমত এরই মধ্যে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ড. ইউনূসের সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া তারেক বলেছেন, বিএনপি কোনও দল নিষিদ্ধের পক্ষপাতি নয়। বরং তিনি চান, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণই সেই ফয়সালা দিক।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : দি হিন্দুর সৌজন্যে
ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : দি হিন্দুর সৌজন্যে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রশ্নে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এরমধ্যে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগবিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন।

তিনি মঙ্গলবার রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, “ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার নিশ্চিতকরণে এই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের ঐক্য অপরিহার্য।

“সুতরাং আমরা পারস্পরিক রেষারেষি, অবিশ্বাস ও দলাদলির বদলে একতা ও ঐক্যের দৃষ্টান্ত কায়েম করব। একই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দল-মত নির্বিশেষে আমরা সবাই আগামীতে এক হয়ে কাজ করব।

বিভাজন নয়, ঐক্য চাই। ফ্যাসিবাদ বিলোপে ঐক্য চাই।”

পোস্টে গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগের শাসনকালে বিএনপি-জামায়াতের ওপর দমন-পীড়নের কথাও তুলে ধরেন হাসনাত।

এরপর জুলাই আন্দোলনে দমন-পীড়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কোনও ঠাঁই নেই।

“দল হিসেবে যে আওয়ামী লীগ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের আপামর মানুষের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করে গুম-খুন ও অন্যায়-অবিচারের রাজত্ব কায়েম করেছিল, সেই আওয়ামী লীগের আগামীর ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করার বিন্দুমাত্র সুযোগ অবশিষ্ট নেই।”

অভ্যুত্থানের পর গত আগস্টে ক্ষমতা হারিয়ে এখন ছন্নছাড়া অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ।

দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলার বিচার শুরু হচ্ছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাদের কেউ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে, অন্যরা পালিয়ে রয়েছেন।

ফেইসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেইজে দলের পক্ষে নানা বিবৃতি আসছে। গত ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবস পালনে দলটি ঢাকার জিরো পয়েন্টে কর্মসূচি দিলেও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সেখানে অবস্থান নিয়েছিলেন বলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের কাউকে সেখানে দেখা যায়নি।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের ছাড়া কোনও নির্বাচন বাংলাদেশে গ্রহণেযাগ্য হবে না।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত