Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

‘আমরা কি সরকারের বোঝা হয়ে গেলাম’

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের দেখা না পাওয়ায় পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে আহতদের একাংশ।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের দেখা না পাওয়ায় পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে আহতদের একাংশ।
[publishpress_authors_box]

ঢাকার উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র মো. রাকিব উদ্দিন। আর দশটা সহপাঠীর মতো তারও এখন ক্লাস করার কথা। তাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে, খেলাধুলা করে সময় কাটানোর কথা। কিন্তু কিছুই করতে পারছে না সে। পড়ে আছে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) এক বেডে।

জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অন্য অনেক স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর মতো রাকিবও রাজপথে নেমেছিল। স্লোগান দিয়েছিল। পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতেছিল। ঘাতকের গুলি একদিন তাকেও বিদ্ধ করে। সেই থেকে পঙ্গু হাসপাতালের তৃতীয় তলার ডান দিকের ওয়ার্ডের একেবারে শেষ সারির বেড তার ঠিকানা।

এই কয় মাসে রাকিবের ভেতরে একটু একটু করে ক্ষোভের পাহাড় জমা হয়েছে। সে আশা করেছিল, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের অবস্থা পাল্টাবে। মানুষকে মানুষের মর্যাদা দেওয়া হবে।

বিশেষ করে গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা ভয়কে জয় করে রাজপথে নেমেছিল, কারফিউ তোয়াক্কা না করে পুলিশ-সেনাবাহিনীর তাক করা বন্দুকের সামনে মিছিল করেছিল, সেই তারা যখন আহত হলো, তাদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করবে নতুন সরকার।

রাকিব দেখল, সেই আশায় গুড়েবালি। অর্থের অভাবে সুচিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে আহতরা। তারা জানে না, তাদের ভবিষ্যৎ কী। সরকার থেকে আহতদের দেখভালের আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে তেমন কোনও প্রতিফলন নেই। আহতদের অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে বলা হলেও তা সেভাবে চোখে পড়ছে না।  

তাই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাকিবের প্রশ্ন, “আমরা কি আপনাদের কাছে বোঝা হয়ে গেলাম? সারাদেশে আমরা ছিলাম। আমরা বুকে পেতেছি বলে আপনারা আজ ক্ষমতায়।”

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের তিনদিন পর শপথ নেয় অর্ন্তবর্তী সরকার। রাকিবের মতো এমন অনেক আহত রয়েছে, যারা তার আগে থেকেই অর্থাৎ জুলাইয়ের মাঝামাঝি বা আগস্টের শুরু থেকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দিন কাটাচ্ছে।

রাকিবের ভাষ্য, এই ৩ মাসে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পা একবারের জন্যও পড়েনি কোনও হাসপাতালে। ৩ মাস পর ১৩ নভেম্বর তিনি পঙ্গু হাসপাতালে আসার মতো সময় করতে পারলেও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। হাতেগোণা কয়েকজনকে কিছু সময় দিয়েই দায়িত্ব সারেন। এতে আগে থেকেই ক্ষুব্ধ আহতরা আরও ক্ষেপে যায়। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে তারা তার পথরোধ করে। সৃষ্টি হয় অনভিপ্রেত পরিস্থিতি।

উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র রাকিব অভিমান করে জানায়, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বোধহয় এতদিন তাদের দেখতে আসার প্রয়োজন মনে করেননি। আর যদিওবা সেদিন এলেন, তার সময়ের অভাব ছিল সবাইকে দেখার।

রাকিব আক্ষেপ করে বলে, “দেশের হাসপাতালগুলোতে এত এত আহত রয়েছে, তাদের চিকিৎসা কীভাবে হচ্ছে, এত খরচ কীভাবে মেটানো হচ্ছে? বছরের পর বছর ধরে মানুষগুলো এভাবে পড়ে থাকলে তাদের পরিবারের কী হবে- এসব নিয়ে সেদিন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বসে আলোচনা করা যেত। উপায় বের করা যেত।

“কিন্তু সেদিন তিনি আমাদের সঙ্গে এসব নিয়ে কোনও আলোচনাই করেননি। তাই ক্ষোভ থেকে আহতরা সেদিন ফুঁসে ওঠে। আমরা একে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে দেখছি।”

আন্দোলনে দু’হাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এক তরুণ।

কী ঘটেছিল সেদিন

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুককে নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম গত ১৩ নভেম্বর পঙ্গু হাসপাতালে যান গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে।

তারা হাসপাতালে ভর্তি সবার সঙ্গে দেখা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আহতদের কয়েকজন। এক পর্যায়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের গাড়ি আটকে রাখার ঘটনা ঘটে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার গাড়ির ওপরও একজনকে উঠে পড়তে দেখা যায়। কেউ কেউ তার গাড়ির সামনে শুয়েও পড়ে।  

এমন পরিস্থিতিতে সারাহ কুক ও নূরজাহান বেগম অন্য গাড়িতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। তারা চলে যাওয়ার পর সেদিন মধ্যরাত পর্যন্ত পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা সড়ক অবরোধ করে। পরে তাদের সঙ্গে বিক্ষোভে যুক্ত হয় পাশের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে থাকা আহতরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সড়ক অবরোধ করে রাখা আহতদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা তাদের কথা শোনেনি। আহতরা দাবি করেন, উপদেষ্টাদের তাদের কাছে আসতে হবে, তাদের কথা শুনতে হবে।  

পরে গভীর রাতে ঘটনাস্থলে যান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বিভিন্ন দাবি নিয়ে এই চার উপদেষ্টা কথা বলেন এবং পরদিন সচিবালয়ে আহতদের সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাস দিলে আহতরা সড়ক ছাড়ে। পরদিন সচিবালয়ে আহতদের সঙ্গে বৈঠক হয় ছয় উপদেষ্টার।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান গণঅভ্যুত্থানে আহতদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও বিভিন্ন অংশীদারদের সমন্বয়ে আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ারও নিশ্চয়তা দেন তিনি।   

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহতদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারের ছয় উপদেষ্টা। ছবি : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মৃতি ধরে রাখতে, তাদের পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করতে এবং আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে গত ১২ সেপ্টেম্বর গঠন করা হয় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মোহাম্মদ স্নিগ্ধ।

বাইরের ‘উসকানি’ থেকে ঘটনার সূত্রপাত?

পঙ্গু হাসপাতালে গত ১৩ নভেম্বর যা ঘটেছিল, তাতে বাইরের মানুষের উসকানি ছিল বলে মনে করছে আহতদের একাংশ।

তাদের একজন মাহমুদুল হাসান জুবায়ের সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এই হাসপাতালে তৃতীয় ও চতুর্থ তলার দুটো ওয়ার্ড আন্দোলনে আহতদের জন্য ডেডিকেটেড। সেদিন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম চারতলার কয়েকজন রোগীকে দেখে চলে যাচ্ছিলেন। এতে তিনতলার রোগীরা ক্ষুব্ধ হয়।

“সরকারের সঙ্গে আসা কেউ একজন সেসময় চতুর্থ তলায় আহতদের একজনকে ধাক্কা দেয়। ঘটনার শুরু সেখান থেকেই। এরপর উপদেষ্টার চলে যাওয়া- এসব কিছু মিলিয়ে আহতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।”

তবে আহতদের মধ্যে কেউ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার গাড়ি আটকিয়েছে বা গাড়ির ওপর উঠে বসেছে- এই অভিযোগ মানতে নারাজ জুবায়ের। পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাসুম মিয়াও মনে করেন, আহতরা এই কাজ করেননি।      

তিনি বলেন, “আমাদের কারও হাত নেই। কারও পা নেই। কারও কারও ক্ষত এখনও শুকায়নি। এই শরীরে আমাদের কেউ গাড়ির ওপর কীভাবে উঠবে? গাড়ি কীভাবে ভাঙচুর করবে?

“এতদিন একসঙ্গে থাকার কারণে আমরা এখানে প্রায় সবাই সবাইকে চিনি। কিন্তু সেদিন যারা একাজ করেছে, তাদের কাউকে আমরা চিনি না।

“আমার মনে হয়, এখানে বাইরের কেউ উসকানি দিয়েছে। এমনও হতে পারে তৃতীয় কোনও পক্ষ সুযোগ নিতে চেয়েছে।”

ঢাকার শিশু মেলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে জুলাই আন্দোলনে আহতরা।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মাসুম মিয়া একবার নয়, দু-দুবার আহত হয়। প্রথমবার জুলাইয়ে, পরেরবার ৫ আগস্টে, যেদিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।   

মাসুম মিয়া বলেন, “আহতদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এতদিন ধরে আমরা হাসপাতালে অথচ তিনি (স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম) একদিনও এসে আমাদের সঙ্গে একটু কথা বললেন না, দেখতে এলেন না। আমরা আজ এখানে (হাসপাতালে) বলেই তারা আজ ওখানে (সরকার)।”

মাসুম মিয়ার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হওয়ার সময় সেখানে ভিড় করে আহত অনেকে। তাদেরই একজন রিয়াদ হোসেন। তিনিও মনে করেন, বাইরের কেউ ১৩ নভেম্বরের ঘটনার জন্য দায়ী।

রিয়াদ হোসেন বলেন, “কে বা কারা সেদিন এমন করেছে, তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারের।”

পঙ্গু হাসপাতালে আহতরা সেদিনকার ঘটনায় ‍তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। আবার আহতরাও সেদিন বেশ ক্ষুব্ধ ছিল। এই দুই মিলে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ে বলে মনে করছে তারা। আর এজন্য সরকারের উদাসীনতা ও অবহেলাকে দায়ী করছে তারা।

আহতদের সড়ক অবরোধে যান চলাচল থেমে যায়।

পুনর্বাসন চায় আহতরা

পোশাক কারখানায় কাজ করেন মো. রায়হান ইসলাম। তার স্ত্রী গর্ভবতী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ তিনি।

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় গত ১৮ জুলাই ছাত্রলীগের ধারাল অস্ত্রের কোপ পড়ে রায়হানের বাম পায়ের হাঁটুর নিচে। এতে পায়ের রগ ছিড়ে যায়। কয়েকবার অস্ত্রোপচার করা হলেও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি।

সরকারের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে রায়হান বলেন, “রবিবার আমার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের দিন। অথচ গত তিন মাস ধরে হাসপাতালে পড়ে আছি আমি।

“আমার সংসার কীভাবে চলছে, চিকিৎসায় কত টাকা খরচ হচ্ছে, সেই টাকা কোথা থেকে আসছে- এসব নিয়ে সরকারের কোনও মাথাব্যথা নাই। তারা নাকি কী সব সংস্কার করছেন। অথচ আমার পরিবার এদিকে না খেয়ে আছে। আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করার টাকা কে দেবে?”

তিনি বলেন, “একটু আগে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছিল। কিছু পাওয়ার জন্য আমার মতো সাধারণ মানুষ আন্দোলনে যায় নাই। কিন্তু দেশ তো স্বাধীন হয়েছে আমাদের রক্তের বিনিময়ে। তাহলে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) আমাদের দেখবে না? খোঁজ নেবে না?”

চিকিৎসকরা বলছেন, রায়হানের পুরোপুরি সুস্থ হতে অন্তত আড়াই থেকে তিন বছর সময় লাগবে। একই অবস্থা আরও অনেকের। তারা প্রত্যেকেই তাদের পুনর্বাসনের দাবি তুলছে।

আন্দোলনে আহতদের প্রতিনিধিদলের হয়ে ১৪ নভেম্বর সচিবালয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র রাকিব।

সে বলে, “সরকার থেকে যদি পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা না হয়, তাহলে আমাদের প্রতি অবিচার করা হবে।”

পঙ্গু হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক আহত তরুণ।

জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ সহায়তা আহতরা পেয়েছে কি না জানতে চাইলে রাকিব বলে, “অনেকেই পেয়েছে, আবার অনেকেই পায়নি। যারা পায়নি তাদের দেওয়া তথ্যে ভুল থাকার কারণে অর্থ সহায়তা পেতে দেরি হচ্ছে বলে মনে করি।”

অর্থ সহায়তা পেতে দেরি হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ভরসা রাখতে চান মাহমুদুল হাসান জুবায়ের।

তিনি বলেন, “ছেলেবেলায় অনেক ফুটবল খেলতাম। বাবার কাছে এজন্য অনেক মার খেয়েছি। সেই বাবাই এখন কাঁদেন আমার পায়ের জন্য।

“আন্দোলনে গিয়েছি বিবেকের তাড়নায়। তখন টাকা-পয়সার ভাবনা শুধু আমার না, কারও মধ্যেই ছিল না। কিন্তু এখন তো এভাবে আর চলছে না। সরকারকে বলতে চাই, এখনও আস্থা আছে আপনাদের ওপর। বিশ্বাস করি, আমাদের জন্য আপনারা কিছু করবেন। তবে সেটা যেন বেশি দেরি হয়ে না যায়।”

আহত পোশাক কর্মী রায়হান জানান, ধারদেনা করে চিকিৎসা করেছেন। প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ লাখ টাকা পেয়ে ৮০ হাজার টাকা দেনা শোধ করেছেন। তবে কেবল টাকা নয়, স্থায়ী সমাধান চান তিনি, যেন পরিবার নিয়ে বাঁচতে পারেন।

দুই দফায় আহত মাসুম মিয়া বলেন, “পুনর্বাসনটা আমাদের জন্য খুব জরুরি। আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সামর্থ্য কারও নেই। হাত হারানো, পা হারানো, চোখ হারানোর কোনও ক্ষতিপূরণ হয় না।

“কিন্তু ভালোভাবে যাতে বাঁচতে পারি, সেটা দেখা দরকার। বিশ্বাস রাখতে চাই, আমাদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি সরকার বাস্তবায়ন করবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত