অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি প্রতিরোধে দেশের সব সরকারি সংস্থাকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সামান্য একটা ভুলের জন্য এতগুলো মানুষ চলে গেল। এর চেয়ে মর্মান্তিক আর কিছু হতে পারে না।
এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে অভিযান চলা উচিত মন্তব্য করে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) আরও সতর্ক হবার অনুরোধ জানান তিনি।
শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন আয়োজিত ২৩তম ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস এবং সায়েন্টিফিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
পরে সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেন, “অন্যদের কিছু বলার অধিকার আমি রাখি না, তবে অনুরোধ করতে পারি। আমি অনুরোধ করছি, গণপূর্ত ও রাজউক আরও সতর্ক হবে। এ ধরনের ভবনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে। এমন ঘটনা ঘটতে পারে না, এত নির্মম কিছু আমরা আর দেখতে চাই না।”
২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তখন থেকেই বলে আসছি। বছরের পর বছর ধরে বলছি। প্লিজ আপনারা সতর্ক হোন।”
অনুষ্ঠানে অবৈধ এবং যন্ত্রপাতিবিহীন হাসপাতাল নিয়েও কথা বলেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “অবৈধ বা যন্ত্রপাতিবিহীন হাসপাতাল বন্ধে অভিযান চলবে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালও থাকবে। নিয়ম মেনে যদি হাসপাতাল চলে তাতে কোনও আপত্তি নেই।”
যেখানে সেখানে আইসিইউ খোলা যায় না জানিয়ে তিনি বলেন, “আইসিইউ খুলতে গেলে সাপোর্টিং অনেক কিছু লাগে। আমরা মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করি। জীবন একটাই। আমাদের অভিযান চলবে। প্রয়োজনে আমিও যাব।”
১৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড
বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকা ১১ জনের চিকিৎসায় ১৭ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আগুনে পোড়া রোগীর চিকিৎসায় অভিজ্ঞ সামন্ত লাল এই বোর্ডের প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয়জনকে শনিবার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ১১ রোগীর মধ্যে ছয়জনকে রিলিজ দেওয়া হয়। শঙ্কামুক্ত না হওয়ায় বাকি পাঁচজন চিকিৎসাধীন থাকবেন।”
আহতদের চিকিৎসার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নজর রাখছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে নিয়ে এসব রোগীর জন্য যতটুকু যত্ন নেওয়া প্রয়োজন তা নিতে বলেছেন। তাদের চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নিজে বহন করবেন। আমাদের এখানে প্রধানমন্ত্রীর একটা ফান্ড আছে। সেই ফান্ডে বেশ কিছু টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।”
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগে। ওই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ৪৬ জন। হতাহতদের মধ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি আছেন পাঁচজন। সামন্ত লাল সেন বলেন, “চিকিৎসাধীন পাঁচজনের শ্বাসনালী ফুলে গেছে। তাদের ফুসফুসে একটু জটিলতা আছে। এ জন্য আমরা তাদের এখনই রিলিজ দিচ্ছি না।”