লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে প্রায় আড়াইশ রকেট ছুড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে শনিবার ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলার পর রবিবার হিজবুল্লাহ এই রকেট হামলা চালায় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্য সঠিক হয়ে থাকলে, সেপ্টেম্বরে লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর পর এটিই এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের ওপর চালানো সবচেয়ে বড় হামলা।
ইরান-সমর্থিত সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াইয়ের অবসান ঘটাতে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলার খবর রবিবার প্রকাশ করে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম, সেদিনই দেশটিতে হিজবুল্লাহর বড় ধরনের রকেট হামলার খবর আসে।
হিজবুল্লাহর ছোড়া রকেটের আঘাতে ইসরায়েলের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে, এমনকি তেল আবিবের কাছাকাছি এলাকাতেও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের পুলিশ বাহিনী।
এর আগে শনিবার বৈরুতে ভয়াবহ ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয় বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া শনিবার সবমিলিয়ে লেবাননে ৮৪ জন নিহত হয়েছে বলেও জানায় তারা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, একটি রকেট আবাসিক এলাকায় সরাসরি আঘাত হানে এবং এতে ওই এলাকার কয়েকটি বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।”
হিজবুল্লাহ বলছে, তারা তেল আবিবের দুটি সামরিক স্থানে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
পরে আইডিএফ জানায়, তারা বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকা দাহিয়েতে হিজবুল্লাহর ১২টি কমান্ড সেন্টারে হামলা চালিয়েছে।
আইডিএফ শনিবার বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে চালানো ভয়াবহ বিমান হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, হিজবুল্লাহর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ হায়দারকে হত্যার লক্ষ্যেই ওই হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আসা ইসরায়েল গত সেপ্টেম্বরে লেবাননেও হিজবুল্লাহর সঙ্গে পুরোমাত্রায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
ইসরায়েল বলছে, হিজবুল্লাহর হামলার কারণে লেবানন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত প্রায় ৬০ হাজার ইসরায়েলিকে তাদের নিজ ঘরে ফেরানোই লেবাননে তাদের সামরিক অভিযানের লক্ষ্য।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লেবাননের অভ্যন্তরে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৭০ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৪০০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।