Beta
মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪

দুই বছরে যা করা যায়নি তা এক বছরে কীভাবে সম্ভব, প্রশ্ন সিপিডির

বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সিপিডি। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সিপিডি। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট অর্থমন্ত্রী পেশ করেছেন তা দেশের বর্তমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট নয় বলে মনে করছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গত দুই বছরেও যেখানে মূল্যস্ফীতি কমানো যায়নি, সেখানে এক বছরে কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণে নেবে সরকার, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণার পর সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথাই বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, “গত ২৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই করছে। কিন্তু কীভাবে তা এক বছরের মধ্যে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে তা বোঝা মুশকিল। যা দুই বছরে করা যায়নি তা কীভাবে এক বছরে সরকার করবে, তার কোনও সঠিক দিক নির্দেশনাও এই বাজেটে নেই।”

বাজেটে নেওয়া লক্ষ্যমাত্রাগুলো বাস্তবসম্মত নয় বলেও মত দেন তিনি। তার মতে, অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবতা বিবর্জিত। এসব কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না।

সরকার মূলত আইএমএফের ঠিক করে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার চেষ্টা করছে, যার কোনও যুক্তি নেই; বলেন তিনি।

কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ এবারে বাজেটে রাখা হয়েছে তা নিয়েও কথা বলেন ফাহমিদা খাতুন।

মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিলেই কালো টাকা সাদা হবে, এই সিদ্ধান্ত নৈতিকতা বির্বজিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, “এটি অর্থনৈতিক ভাবেও ঠিক নয়। এটা কোনও গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। এতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না।”

সরকার বার বার সুযোগ দেওয়ার পরেও উল্লেখযোগ্য পরিমান টাকা কোনোদিনই আসেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সরকারের সামাজিক সুরক্ষা খাতকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর সমালোচনা করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “গতবার বাজেটে ১৭ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৪ শতাংশ ছিল সামাজিক সুরক্ষা খাতে। এবার তা হয়েছে বাজেটের ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। কিন্তু সামাজিক সুরক্ষা খাতের ভেতর পেনশনের টাকা, সঞ্চয়পত্রের সুদ, কৃষিতে ভুর্তকি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা রাখা হয়েছে। এসব বাদ দিলে সামাজিক সুরক্ষায় দেওয়া হয়েছে জাতীয় বাজেটের ৯ শতাংশ এবং জিডিপির এক শতাংশ। যা কোনোভাবেই যথেষ্ট নয় বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায়।”

সরকারের এই নীতির কারণে দরিদ্র, নিম্নবিত্তসহ মধ্যবিত্তদের জন্য জীবন পরিচালনা করা কঠিন হবে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সিপিডি।

এবারও বাজেটে ঘাটতি মেটানোর জন্য ব্যাংক ঋণের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার সমালোচনা করেন ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, “সরকার গত কয়েক বছর ধরে একাধারে ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে কষ্ট হয়েছে। এবারও একই রকম রাখা হলো। তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে কীভাবে? বিনিয়োগ না বাড়লে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ কীভাবে সরকার অর্জন করবে এই প্রশ্ন রাখতে চাই আমরা।”

গত দুই অর্থবছর ধরে দেশের অর্থনীতি প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। সে কারণে আমরা সবাই তাকিয়ে ছিলাম আগামী অর্থবছরের বাজেটটি কেমন হয়।”

এমন পরিস্থিতিতে কোমল পানীয়, বিনোদন পার্ক, মোবাইল কলরেটসহ সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য আরও অনেক পণ্যের উপর ট্যাক্স আরোপ সাধারণ মানুষকে আরো বিপদে ফেলবে, আশঙ্কা তার। তিনি বলেন, “এসবের ট্যাক্স বাড়ানোর চাপ কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ওপরই পড়বে। মূল্যস্ফীতির এই বাজারে মানুষকে আরও বিপদে ফেলার কোন মানে হয় না।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত