গীতিকার-গায়ক বব ডিলানের সাড়া তোলা গান মিস্টার ট্যাম্বোরিন ম্যান-এর প্রথম খসড়াসহ বেশ কিছু স্মৃতিচিহ্ন উঠেছিল নিলামে আমেরিকা ‘সঙ্গীতের শহর’ খ্যাত বলে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিলে।
১৯৬৫ সালে প্রকাশিত মিস্টার ট্যাম্বোরিন ম্যান বব ডিলানের অন্যতম হিট গানগুলোর একটি। সে বছরের ২২ মার্চ মুক্তি পাওয়া গানটি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে চার্টে শীর্ষ স্থানে ছিল।
টাইপরাইটারে লেখা লিরিক্সটি গানটির প্রথম খসড়া, কারণ মার্জিনে এই ‘গানের কবি’ এর হাতে লেখা বেশকিছু সংযোজন ও বিয়োজন দেখা যাচ্ছে।
হলদেটে রঙের কাগজে দুই পাতার এই প্রথম খসড়া নিলামে বিক্রি হয়েছে পাঁচ লাখ ডলারের কিছু বেশি দামে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
১৯৬৮ সালে আঁকা এবং সই করা ডিলানের একটি তৈলচিত্র এবং গায়কের ব্যবহার করা ১৯৮৩ সালের একটি ফেন্ডার টেলিকাস্টার গিটারও নিলাম উঠা ডিলানের স্মৃতিচিহ্নের মধ্যে ছিল বলে জুলিয়েনস অকশনস জানিয়েছে।
নিলামঘরটি জানিয়েছে, ডিলানের আঁকা বেশকিছু স্কেচ প্রত্যাশিত দামের থেকে বহুগুণ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। একটি স্কেচ যার বিক্রয়মুল্য দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার ডলার ধারণা করা হয়েছিল তা বিক্রি হয়েছে প্রায় ৮৯ হাজার ডলারে!
এছাড়া লিভাইস-এর তৈরি একটি ডেনিম জ্যাকেট, যেটি ১৯৮৭ সালের একটি মিউজিক্যাল ড্রামা সিনেমাতে ডিলানকে পরতে দেখা যায়, বিক্রি হয়েছে ২৫ হাজার ডলারের বেশি দামে।
জুলিয়েনস অকশনস জানিয়েছে বব ডিলানের স্মৃতিচিহ্নের নিলাম থেকে আয় হয়েছে সাড়ে দশ লাখ ডলার।
বব ডিলানের গানের খসড়া ও অন্যান্য স্মৃতিচিহ্ন জুলিয়েন’স অকশনসের হাতে আসার পেছনে আছে একটি গল্প।
এই জিনিসগুলো সাংবাদিক অ্যাল অ্যারোনোভিটজের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছিল। মিস্টার ট্যাম্বোরিন ম্যান -এর খসড়া প্রথম খুঁজে পান অ্যারোনোভিটজ।
এই সাংবাদিক ডিলানসহ আরো বহু তারকার বন্ধু ছিলেন। অ্যারোনোভিটজ “রক সাংবাদিকতার গডফাদার” হিসেবেও পরিচিত।
অ্যারোনোভিটজের লেখা একটি প্রবন্ধ থেকে জানা গেছে, তিনি ডিলানকে তার বাড়িতে বসে গানের লিরিক্স লিখতে দেখেছেন।
অ্যারোনোভিটজ তার প্রবন্ধে লিখেছেন, “একটি পোর্টেবল টাইপরাইটার ব্যবহার করে ডিলান এই গানটি (মিস্টার ট্যাম্বোরিন ম্যান ) রচনা করেন। ঘরে তখন এক রাশ সিগারেটের ধোঁয়া। আমি দেখছিলম লম্বা নখের হাড্ডিসার আঙুলগুলো দ্রুত হাতে লিখে চলেছে।“
ঘরে রাখা একটি আবর্জনার ঝুড়িতে দুমড়ানো অবস্থায় গানটির কিছু লিরিক খুঁজে পেয়েছিলেন বলে তার প্রবন্ধে জানান অ্যারনোভিটজ।
অ্যারোনোভিটজের ছেলে মাইলস এক বিবৃতিতে বলেন, তার বাবাকে কেবল একজন সাংবাদিক ভাবা হলে সেটি ঠিক হবে না।
“তিনি তার থেকেও বেশি ছিলেন। তিনি বুঝতেন, এই শিল্পীরা কী করতে চাইতেন,” তিনি বলেন।