গোলের পর জার্সি খুলে উদযাপনে ব্যস্ত হয়ে গেলেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম। পেছনে ছুটতে থাকা সতীর্থরা ততক্ষণে ইব্রাহিমকে জড়িয়ে ধরেছেন। গ্যালারিতে চলছে আকাশী নীল উল্লাস। সেই আনন্দের রেশ ছিটকে পড়ল আবাহনীর ডাগ আউটেও।
এবারের মৌসুমে বিদেশিহীন আবাহনী। কিন্তু তাদের খেলায় যেন সেই প্রভাব খুব কমই। প্রিমিয়ার লিগে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে। ফেডারেশন কাপে পরপর দুই ম্যাচেই পেল জয় । মঙ্গলবার ১-০ গোলে হারিয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে একমাত্র গোলটি করেছেন ইব্রাহিম।
প্রিমিয়ার লিগে এ মুহূর্তে শীর্ষে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কিন্তু ফেডারেশন কাপে সাদা–কালোদের অবস্থা নড়বড়ে। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জের কাছে হার। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়েছিল। কিন্তু মাত্র এক জয়ের ফলে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচটা হয়ে ওঠেছিল বাঁচা–মরার লড়াই। সেই ম্যাচটা হেরে গিয়ে ফাইনালের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে উঠতে এখন তাদের অনেক ‘যদি, ‘কিন্তুর ওপর নির্ভরশীল হতে হবে। বিপরীতে টানা দুই জয়ে ফাইনালের কোয়ালিফাইয়ার রাউন্ডে ওঠার পথ আরও সহজ হয়েছে আবাহনীর।
মোহামেডান–আবাহনীর লড়াইয়ে দুই বছর ধরেই আধিপত্য মোহামেডানের। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে লিগে সর্বশেষ আবাহনী জেতে মোহামেডানের বিপক্ষে। এরপর লিগ ও ফেডারেশন কাপ মিলিয়ে আবাহনী ৬ ম্যাচে মোহামেডানের বিপক্ষে জয়হীন। মোহামেডান জিতেছে ৩ ম্যাচ, বাকি ৩ ম্যাচ ড্র। প্রিমিয়ার লিগে সম্প্রতি আবাহনীকে হারিয়েছে মোহামেডান। তবে ফেডারেশন কাপে জয় আবাহনীর।
মাঠের লড়াইটা যতোই আবাহনী-মোহামেডানের ফুটবলারদের হোক না কেন, বাইরেও ছিল আরেক লড়াই। মোহামেডান কোচ আলফাজ আহমেদ এবার হেরে গেলেন আবাহনীর মারুফুল হকের কৌশলের কাছে।
মোহামেডানের অন্যতম ভরসা সোলেমান দিয়াবাতে যদিও চোট সেরে এই ম্যাচে ফিরেছেন। কিন্তু হাতে ব্যান্ডেজ বেঁধে খেলেছেন। তাকে বেশিরভাগ সময় আটকে রাখনে আবাহনীর ডিফেন্ডাররা।
যা একটু মোজাফররভ মাঝমাঠে খেলেছেন। যদিও মোহামেডানের ফরোয়ার্ডরাই আক্রমণে ব্যস্ত রাখে আবাহনীর রক্ষণ। কিন্তু গোলপোস্টের নিচে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রইলেন মিতুল মারমা। বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত গোল বাঁচিয়েছেন তিনি। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে মোজাফরভের কর্ণার দারুণ দক্ষতায় মুঠোবন্দী করেন আবাহনীর গোলরক্ষক মিতুল মারমা।
প্রথমার্ধে যদিও বলার মতো তেমন আক্রমণ দুই দলে ছিল না। তবে দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ সামলে আক্রমণে ওঠার কৌশল ছিল আবাহনীর। সেই কৌশলে বেশ সফলই মারুফল হক। ৭২ মিনিটের গোলটা সেই আক্রমণের ফল।
ডান প্রান্ত দিয়ে শাহরিয়ার ইমন এগিয়ে গিয়ে বক্সে ফেলেন নিচু ক্রস। দারুণ ফিনিশিংয়ে ইব্রাহিম স্তব্ধ করে দেন মোহামেডান গ্যালারি।
এরপর আলফাজ আহমেদ একাধিক বদলি নামিয়েছেন। কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি মোহামেডান। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও ওঠে ইব্রাহিমের হাতেই।