Beta
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

শ্রমিক ভালো থাকলে কারখানা ভালো থাকবে : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্ত্রে জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি : পিআইডি
[publishpress_authors_box]

শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শ্রমিকদের উৎপাদনমুখী শিল্পের চালিকাশক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারখানা ও শ্রমিক একে অন্যের পরিপূরক। শ্রমিক ভালো থাকলে কারখানা ভালো থাকবে।

মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্ত্রে জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মনে রাখতে হবে আপনারা শুধু মুনাফার জন্য ব্যবসা পরিচালনা করছেন না। সামাজিক দায়িত্বের বিষয়টিকেও গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।”

আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় বৈদেশিক বাণিজ্য এখন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং, প্রতিযোগিতামূলক এবং জ্ঞান ও নীতিমালাভিত্তিক বলে মত দেন রাষ্ট্রপতি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যবসায়ী নেতাদের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।

বলেন, “উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বিশ্বের সম্ভাব্য সকল স্থানে আমাদের রপ্তানি পণ্যের বাজারকে ছড়িয়ে দিতে হবে।”

তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষম, শক্তিশালী, নিরাপদ ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকারের প্রতিজ্ঞার কথাও উল্লেখ করেন মো. সাহাবুদ্দিন।

বস্ত্র খাতে বিনিয়োগ, উৎপাদনশীলতা, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে শিল্পপতি, শিল্প উদ্যোক্তাসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “দেশের অর্থনীতিতে বস্ত্রখাত প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী। সরকার এই খাতের অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়নকে গতিশীল রাখতে চায়।”

বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পে বিশ্বে যে কয়টি পরিবেশবান্ধব কারখানা রয়েছে তার মধ্যে ২০৬টেই বাংলাদেশে বলে জানান তিনি।

পরে জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষে বস্ত্রখাতের উন্নয়ন, উৎকর্ষতা সাধন, বস্ত্র শিক্ষার সম্প্রসারণ ও রপ্তানি বাড়াতে ভূমিকা রাখায় ১১ সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংশ্লিষ্টদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন।

পুরস্কার পাওয়া সংগঠনগুলো হলো-বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ স্পেশালাইজড টেক্সটাইল মিলস অ্যান্ড পাওয়ারলুম ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিএসটিএমপিআইএ), বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ), বাংলাদেশে গার্মেন্ট বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ), বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স), বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমএ), বাংলাদেশ এমব্রয়ডারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইএমইএ) এবং বাংলাদেশ তাঁতী সমিতি।

পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়। একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ সম্মাননা ঘরে তুলেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে বুটেক্সের উপাচার্য মো. আলিমুজ্জান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “টেক্সটাইল বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যই এই স্বীকৃতি।

“বর্তমানে দেশে টেক্সটাইল খাতের যে অগ্রগতি তাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। প্রত্যেক বছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হওয়া ইঞ্জিনিয়াররা দেশের এই শিল্প খাতকে সমৃদ্ধ করছে।”

ভবিষ্যতে বিশ্বের টেক্সটাইল শিল্প গবেষণায় বুটেক্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।

প্রথমবার সম্মাননা পেল বিইএমইএ

সম্মাননা পাওয়া সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের মথ্যে প্রথমবার পুরস্কার ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ এমব্রয়ডারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইএমইএ)।

প্রায় ২৫ বছর আগে গড়ে ওঠা এই সংগঠনের সভাপতি শাহনেওয়াজ চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয় সকাল সন্ধ্যার। তিনি বলেন, “সরকারের কাছ থেকে এরকম সম্মাননা পাওয়া বিশেষ গুরুত্বের। এতে আমরা আনন্দিত এবং গর্বিত। এই সম্মাননা ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।”

বিইএমইএ’র অধীন কারখানার সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। কারখানাগুলো শতভাগ রপ্তানিনির্ভর কাজ করে। গত বছর প্রায় ১৫০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এই খাত।

শাহনেওয়াজ চৌধুরী বলেন, “এই খাতকে বিকশিত করতে আমাদের বেশ কিছু দাবি-দাওয়া আছে। আশা করি এখন সেগুলো সহজেই পূরণ করতে পারব।”

তৈরি পোশাক শিল্পের মতো এমব্রয়ডারি শিল্পের জন্যও আলাদা শিল্পপল্লী তৈরির দাবি জানান তিনি

সংগঠনের সহ-সভাপতি আহসান হাবিব দুলাল বলেন, “এক সময় আমাদের দেশে এমব্রয়ডারি কাজের জন্য নির্ভর করতে হতো পাকিস্তান বা ভারতের উপর। আমরা যারা রপ্তানি কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের বাইরেও কারখানা গড়ে উঠছে। সেসব কারখানার কারণে এখন বিদেশ থেকে আমাদের কোনোকিছুই আমদানি করতে হয় না।”

তবে এখনও কাঁচামাল আমদানি করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যথাযথ সহায়তা করলে এই শিল্প খাত আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত