পূর্বমধ্য বঙ্গোসাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই আভাস দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্কতা বাড়ানোর কথাও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় (১৮.৪° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.০° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি (৮৯ মিলিমিটার বা তার বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।
এতে আরও জানানো হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর আগে বুধবার ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টার মধ্যে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে ভারতের পুরি ও সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এসময় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছাতে পারে।