Beta
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান ভারতের

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।
[publishpress_authors_box]

সম্প্রতি চট্টগ্রামে হিন্দুদের উপর হামলার কথা উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে ভারত। দেশটি বলছে, এই ধরনের ঘটনা হিন্দুদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ায়।

বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।  

রণধীর বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে। তাদের সম্পত্তি লুট করা হয়েছে। তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে লক্ষ্য করে সোশাল মিডিয়ায় উষ্কানিমূলক পোস্টের পর এসব হয়েছে।”

তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ‘চরমপন্থীদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান।  

রণধীর বলেন, “এটা বোঝা যায় যে, এই ধরনের পোস্ট এবং এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পিছনে চরমপন্থী উপদান রয়েছে। এটি হিন্দুদের মধ্যে আরও উদ্বেগ-উত্তেজনা তৈরি করতে বাধ্য। আমরা আবারও বাংলাদেশ সরকারকে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম নগরীর টেরিবাজার এলাকায় হিন্দু অধ্যুষিত হাজারী গলিতে ‘ইসকন নিয়ে ফেইসবুকে দেওয়া পোস্ট’ কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার সংঘটিত ঘটনার পর সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী সেখানে অভিযান চালায়, সেই কথাও উল্লেখ করেন রণধীর।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারে প্রায় দেড়শর মতো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ জুয়েলারি ব্যবসা করে। সেখানেই জুয়েলারি বাক্স, মালা, মালায় ব্যবহৃত স্টোন এবং রূপার ব্যবসা করেন এক মুসলিম ব্যবসায়ী।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ইসকনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ উল্লেখ করে ওই মুসলীম ব্যবসায়ীর ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দেওয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা তৈরি হয়। 

এরপর সেদিন রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েক ঘণ্টা ধরে উত্তেজনা চলে ও একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পরে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়া ব্যক্তিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সেখানেই দোকানের ভেতরে ঘিরে ফেলে। এ সময় সেই দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে।

বিক্ষুব্ধ লোকজন দোকানের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। স্থানীয়রা বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়।

যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ফেইসবুকে পোস্টদাতা ব্যক্তিকে দোকান থেকে উদ্ধারের সময় বিক্ষোভকারীরা বাধা দেয়। তারা যৌথবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে যৌথবাহিনী ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এ সময় পুলিশ ও সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে জুয়েলারির কাজে ব্যবহৃত এসিড ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যৌথবাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তখন যৌথবাহিনীকে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার যৌথবাহিনীর সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকালে ওসমান আলী নামে একজন ব্যক্তির ইসকন বিরোধী একটি ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে হাজারী লেইনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং ৫০০/৬০০ দুষ্কৃতিকারী সেখানে ওসমান আলী ও তার ভাইকে হত্যা ও দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জড়ো হয়।

“মব জাস্টিস রোধে যৌথবাহিনী ওসমান আলী ও তার ভাইকে ওই এলাকা থেকে উদ্ধার করে। উত্তেজিত জনতাকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধানে আশ্বস্ত করার পরও এক পর্যায়ে উগ্র বিশৃঙ্খলাকারীরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। দুর্বৃত্তরা এ সময় যৌথবাহিনীর ওপর অতর্কিতভাবে জুয়েলারির কাজে ব্যবহৃত এসিড হামলা চালায় এবং ভারী ইট পাটকেলসহ ভাঙা কাঁচের বোতল ছুড়তে শুরু করে,” ব্রিফিংয়ে বলা হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত