ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলার প্রতিবাদ ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর দপ্তরে তাকে তলব করা হয়।
সে অনুযায়ী, বিকাল ৪টার কিছু সময় আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেছেন প্রণয় ভার্মা।
এর আগে সোমবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালানো হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সমর্থকেরা এ হামলা চালান।
একই দিন মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের কাছাকাছি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) আয়োজনে কয়েক ‘শ লোক বিক্ষোভ করেন। হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি এই ভিএইচপির সহযোগী সংগঠন।
আগরতলার এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তি কোনও অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।
এ ঘটনায় ত্রিপুরায় মঙ্গলবার সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
আগরতলার হামলার বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হামলার ঘটনা বাংলাদেশ সরকারকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। ঘটনাপ্রবাহ দেখে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত।”
এ ঘটনা কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা সনদের লঙ্ঘণ বলেও মনে করছে বাংলাদেশ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশ সরকার আরও জোর দিয়ে বলতে চায়, বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই নৃশংস হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর কলকাতায় একই ধরনের সহিংস বিক্ষোভের একটি প্যাটার্ন তৈরি হয়েছে।”
যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি থেকে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে রক্ষা করা স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে এই ঘটনা মোকাবেলায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর বিরুদ্ধে আরও যেকোনো সহিংসতা রোধ করা এবং কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সুরক্ষারও দাবি জানানো হয়েছে।