গাজার শিশুদের জন্য পোলিও টিকা কার্যক্রম চালাতে কয়েক দফায় যুদ্ধ বন্ধে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) শুক্রবার তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।
রবিবার থেকে গাজা উপত্যকার ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
সংস্থাটির কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন বিবিসিকে জানিয়েছেন, বেশ কয়েক ধাপে গাজার শিশুদের পোলিও টিকা দেওয়া হবে। আর প্রতি ধাপেই ইসরায়েল তিনদিন করে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। ওই তিনদিন স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে যুদ্ধবিরতি।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তিন দিনের এই বিরতিকে ‘যুদ্ধবিরতি’ বলতে নারাজ।
২৫ বছর পর সম্প্রতি গাজায় ১০ মাস বয়সী এক শিশু পোলিওতে আক্রান্ত হয়। এতে শিশুটির শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়। এরপরই মূলত পোলিওর বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।
গাজার এরই মধ্যে পোলিও ভ্যাকসিন টাইপ ২ এর ১২ লাখ ৬০ হাজার ডোজ মজুদ আছে। আরও ৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন অচিরেই সেখানে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছে ডব্লিউিএইচও।
পোলিও টিকা কার্যক্রম চালাবে জাতিসংঘ ও স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মীদের একাধিক দল। এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে দুই হাজার স্বাস্থ্য ও কমিউনিটি কর্মীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
গাজায় জাতিসংঘের মুখপাত্র লুইস ওয়াটারিজ টিকা কার্যক্রম চালানোর জন্য যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “টিকা কার্যক্রমের সময় সেনা অভিযান চললে শিশুদের কাছে টিকা পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাবে। এই সপ্তাহে গাজার শিশুদের দুই ডোজ করে মুখে খাওয়ার টিকা দেওয়া হবে। চার সপ্তাহ পর ফের আরও এক ডোজ টিকা দিতে হবে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবার গাজা উপত্যকার ৯০ শতাংশ এলাকায় টিকা কার্যক্রম চালাতে চাইছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
পোলিওভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক এবং প্রায়শই পয়ঃনিষ্কাশন ও দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়ায়। এটি পক্ষাঘাতগ্রস্ততার সৃষ্টি করতে পারে। এটি প্রধানত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের আক্রান্ত করে।
ডব্লিউএইচও বলছে, গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে টিকাদানের হার সংঘাতের আগে বেশ ভালো ছিল। ২০২২ সালে সেখানকার ৯৯ শতাংশ এলাকা পোলিও টিকার অধীনে ছিল। কিন্তু সর্বশেষ তথ্য বলছে, গাজার ৮৯ শতাংশ এলাকা এখন পোলিও ঝুঁকিতে রয়েছে।
ইসরায়েল তাদের সেনা সদস্যদের গত জুলাইয়ে পোলিও টিকা দিয়েছে।
হামাসের মুখপাত্র বাসেম নাঈম রয়টার্সকে বলেন, “পোলিও টিকা কার্যক্রমের সুরক্ষায় আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।”