Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল : পরবর্তী শুনানি ১০ ডিসেম্বর

সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্ট।
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে আংশিক শুনানি হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ঠিক করা হয়েছে।

আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও মোহাম্মদ শিশির মনির। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আলী আজম। পরবর্তী শুনানির দিন নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিত থাকতে বলেছে আদালত।

শুনারি বিষয়ে জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “আপিলের ওপর আজকে আংশিক শ্রুত হিসেবে গণ্য হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির জন্য থাকবে। আজকে মূলত প্রাথমিক পর্যায়ে শুনানি হয়েছে।

“তার মধ্যে এক নম্বর বিষয়ে আমরা বলেছি যে, যারা এই রিট আবেদনটি করেছিলেন (নিবন্ধন বাতিল চেয়ে রিট) তারা জনস্বার্থে করেছিলেন বলেছিলেন। তারা মূলত জনস্বার্থে নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সামনে রেখে রিটটি করেন।”

তিনি বলেন, “রিটকারীদের রিট করার মতো কোনও লোকাস স্ট্যান্ডি (হস্তক্ষেপের অধিকার) ছিল না। জনস্বার্থের কথা বলেছেন। মূলত ব্যক্তি ও রাজনৈতিক স্বার্থে এ রিট করেছিলেন।”

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই রিট আবেদনটি করা হয় জানিয়ে জামায়াতের এই আইনজীবী বলেন, “আমরা বলেছি, এই মেটারটি নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিচারাধীন ছিল। এ প্রক্রিয়া নিষ্পত্তির আগেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে রিটটি করা হয়েছিল।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৮ আগস্ট জামায়াতের আইনজীবীরা দলটির নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল বিভাগে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন।

গত ৩১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবীত (রেস্টোরেশন পিটিশন) করতে আবেদন করা হয়। পরে গত ২২ অক্টোবর শুনানি নিয়ে ২৮৬ দিন বিলম্ব মার্জনা করে নিবন্ধন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে নির্বাচন কমিশন। সে সময় ৩৮টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীও ছিল।

আইন অনুযায়ী শুধু নিবন্ধিত দলগুলোকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়। নিবন্ধন দেওয়ার পরের বছর ২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন।

এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাই কোর্ট একটি রুল জারি করে। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১) (বি) (২) ও ৯০ (সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না- জানতে চাওয়া হয় রুলে।

রুল জারির পর নিবন্ধন বাঁচাতে দলীয় গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন আনে জামায়াত। কিন্তু চূড়ান্ত শুনানির পর সে রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেয় হাই কোর্ট। সংবিধানের সঙ্গে জামায়াতের গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ায় দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয় ওই রায়ে।

পরে হাই কোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিল জামায়াত। কিন্তু ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট সে আবেদন খারিজ হয়। এরপর ওই বছর ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে জামায়াতে ইসলামী, যা পরে আপিল হিসেবে গণ্য করা হয়।

হাই কোর্টের রায়ের পর দশম, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি দলটি।

হাই কোর্ট থেকে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।

এরপর ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালতের এক আদেশে দলটির আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য ১২ নভেম্বর তারিখ রাখা হয়। এদিন জামায়াতের আইনজীবীরা সময় চাইলে আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেয়। সে ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিলটি ফের শুনানিতে ওঠে।

কিন্তু সেদিন জামায়াতের পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না। তবে জামায়াতের আইনজীবী প্রয়াত এ জে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে অন্য এক আইনজীবী সময় আবেদন নিয়ে দাঁড়ান।

আদালত ওই আবেদন গ্রহণ না করে শুনানির সময় কয়েক ঘণ্টা পিছিয়ে দেয়। কিন্তু শুনানির সময় পিছিয়ে দিলেও সেদিন জামায়াতের পক্ষে কোনও আইনজীবী না থাকায় আপিলটি খারিজ করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত