ফাস্ট বোলারদের সাহস লাগে। পার্থে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে জাসপ্রিত বুমরা দেখালেন দুঃসাহস। এমনিতেই ম্যাচের আগে বৃষ্টি ছিল দুই দিন। স্যাঁতস্যাঁতে কন্ডিশনে নতুন বল হাতে চোখ চকচকে করার কথা পেসারদের। সবাইকে বিস্মিত করে রোহিত শর্মার অনুপস্থিতে নেতৃত্ব দেওয়া বুমরা নিলেন ব্যাটিং।
দেশের মাটিতেই নিউজিল্যান্ডের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়া ভারত পার্থের গতিময় উইকেটে উড়ে গেল একপ্রকার। চা বিরতির আগেই অলআউট ১৫০ রানে। তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার যে ঝড়টা উঠেছিল তার সারমর্ম, ‘‘বুমরা, তুমি জেনেশুনে বিষ করেছো পান।’’
বিষের সেই পেয়ালাটা শুধু অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের হাতেই ছিল না। ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর জাসপ্রিত বুমরা বল হাতে ঝড় তুলে জানালেন,‘‘ইট ছুঁড়লে পাটকেল আছে তার হাতেও।’’
এজন্যই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক মিডিয়াম পেসার বলায় মজা করে বলেছিলেন, ‘‘ভাই আমি ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করি, অন্তত ফাস্ট বোলার তো বলুন।’’
প্রথম উইকেটটা নিয়েছেন অবশ্য ঘণ্টায় ১৩৮ কিলোমিটার গতিতে বল করে। নাথান ম্যাকসুয়েনিকে করেন এলবিডব্লিউ। এরপর টানা দুই বলে ফেরান উসমান খাজা ও স্টিভেন স্মিথকে। ২০১৪ সালে ডেল স্টেইনের পর আজই (শুক্রবার) প্রথম গোল্ডেন ডাক পেলেন স্মিথ।
বুমরার প্রথম স্পেল ৬-২-৯-৩। দিন শেষ করেছেন ৪ উইকেট নিয়ে। বোলিং ফিগার ১০-৩-১৭-৪। প্রথম স্পেলের পরই ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর ‘এক্স’-এ লিখেন গুগলও এখন খেলতে পারবে না বুমরাহকে, ‘‘ওকে গুগল প্লে জাসপ্রিত বুমরা/সরি (গুগলের জবাব),জাসপ্রিত বুমরা আনপ্লেয়েবল’’!
আগে থেকেই বুমরার ভক্ত পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম। ধারাভাষ্যে তিনি আরও একবার প্রিয় বোলারটিকে প্রশংসায় ভাসিয়ে বললেন, ‘‘বিশ্বের সেরা বোলার ও।’’ লাসিথ মালিঙ্গাও ভারতীয় এই পেসারের প্রশংসায় লিখেছেন, ‘‘জাসপ্রিত ‘বিশ্বের সেরা’ বুমরা’’।
পরিসংখ্যানও সে কথা বলছে। ৪১ টেস্টে বুমরার উইকেট ১৭৭টি, গড় ২০.১৭। এখনও খেলছেন এমন বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো গড় তার। শুধু তাই নয়, গড়ের হিসেবে টেস্ট ইতিহাসেই তিনি দ্বিতীয় সেরা।
১৬.৪৩ গড় নিয়ে সামনে কেবল সিডনি বার্নস। এছাড়া অ্যালান ডেভিডসনের গড় ২০.৫৩, ম্যালকম মার্শালের ২০.৯৪ আর জোয়েল গার্নারের ২০.৯৭।