জয়া আহসান অভিনীত ‘নকশী কাঁথার’ জমিন মুক্তি পেতে যাচ্ছে বড়পর্দায়। আসছে ২৭ ডিসেম্বর সিনেমাটি মুক্তি পাবে দেশের সিনেমা হলে। অন্যদিকে রটারড্যাম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয়েছে জয়ার ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’।
হাসান আজিজুল হকের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস বিধবাদের কথা অবলম্বনে নকশি কাঁথার জমিন নির্মাণ করেছেন আকরাম খান। অন্যদিকে মানিক বন্দোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস পুতুল নাচের ইতিকথা -কে বড়পর্দায় আনছেন সুমন মুখোপাধ্যায়।
নকশী কাঁথার জমিন চলচ্চিত্রটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক পথ পরিভ্রমণ করে এসেছে। পেয়েছে বেশকিছু পুরস্কারও। তার মধ্যে বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ান কম্পিটিশন বিভাগের পুরস্কারটিও আছে।
এছাড়া চলচ্চিত্রটি ৫৩তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ায় (আইএফএফআই) আইসিএফটি-ইউনেসকো গান্ধী মেডেলের জন্য নমিনেশন পেয়েছিল। পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার ১৪তম বুসান পিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বেস্ট ফিচার ফিল্মের পুরস্কার। লন্ডন বাঙালি চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়েছে এটি।
সিনেমাটির ব্যাপারে প্রসঙ্গে জয়া বলেন, “সাধারণত আমরা গল্পে যেটা দেখে থাকি, মুক্তিযুদ্ধকে কোনো একজন হিরোকে ধরে গ্লোরিফাই করে দেখানো হয় কিংবা যুদ্ধের কিছু দৃশ্য দেখানো হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় গণমানুষের যে অংশগ্রহণ ছিল, সেটা কিন্তু সিনেমাতে কম এসেছে। নকশী কাঁথার জমিন একেবারেই গণমানুষের অংশগ্রহণ, চাষাভুষা, গ্রামের সাধারণ যে মানুষ, তারা কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের জীবনের গল্প।”
নতুন প্রজন্মকে সিনেমাটি দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এই প্রজন্মের মানুষ যারা আছেন, তারা যেন আগের প্রজন্ম তাদের জন্য কী করে গেছেন, কীভাবে আমাদের দেশটার মানচিত্র তৈরি হলো; কত রক্ত, ঘাম, শ্রম এর পেছনে আছে, সেটা যদি তারা দেখতে চান এবং আমরা তো শুধু হিরোদেরকে দেখি, গণমানুষের যে অংশগ্রহণ ছিল, সেটা যদি দেখতে চান, তাহলে এই সিনেমা দেখুন। আমি তো বলব, সবার বিশেষ করে, সিনেমাটি দেখার এক ধরনের দায়িত্ব রয়েছে এই প্রজন্মের মানুষদের।”
নকশি কাঁথার জমিন-এ দুই বোনের চরিত্র অভিনয় করেছেন জয়া আহসান ও সেঁওতি আর দুই ভাইয়ের চরিত্রে ইরেশ যাকের এবং রওনক হাসানকে দেখা যাবে। গুরুত্বপূর্ণ দুই চরিত্রে আছেন দুই ভাই দিব্যজ্যোতি ও সৌম্যজ্যোতি।
দেশের পর্দায় চলচ্চিত্র মুক্তির আবহে জয়া খবর দিলেন তার পুতুল নাচের ইতিকথা-এর আন্তর্জাতিক উৎসবে পরিভ্রমণ ও বড়পর্দায় যাত্রা শুরুর খবর।
চলচ্চিত্রটি রটারড্যাম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিগ স্ক্রিন প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে; ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে এই গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে।
জয়া বলেন, “আন্তর্জাতিক স্তরে এই ছবির যাত্রা যে এইভাবে শুরু হবে এটা কল্পনাতীত ছিল। আমার এত বছরের চলচ্চিত্র জীবনে এ এক বিশেষ প্রাপ্তি।”
তিনি আরও বলেন, “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাসকে ভিত্তি করে এই ছবির পরিকল্পনা করেছি গত ১৬ বছর ধরে। নানা কারণে হয়ে ওঠেনি। শেষে সমীরণ দাস (ছবিটির প্রযোজক) এগিয়ে এলেন এই ছবি করতে। তার প্রতি আমার অসীম কৃতজ্ঞতা। আর অবশ্যই এই ছবির সঙ্গে যুক্ত সমস্ত অভিনেত্রী-অভিনেতা, কলাকুশলীরা তাদের সবটা উজাড় করে দিয়েছেন এই ছবির নির্মাণে। তাদের জানাই আমার কুর্নিশ।”
চলচ্চিত্রটিতে জয়া ছাড়াও অভিনয় করেছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় এবং অনন্যা চট্টোপাধ্যায়।