বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তার ছেলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশকসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করেন দৈনিক কালের কণ্ঠের সাবেক সিলেট ব্যুরো প্রধান আহমেদ নূর।
আদালতের বিচারক আবদুল মোমেন মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, কালের কণ্ঠের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরী, বর্তমান সম্পাদক হাসান হাফিজ, চেক স্বাক্ষরকারী শাহেদ মুহাম্মদ আলী ও নঈম নিজাম এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে কালের কণ্ঠ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ থেকে প্রকাশিত দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ১২ বছর সিনিয়র রিপোর্টার পদমর্যাদায় সিলেট অফিসের ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন আহমেদ নূর। চাকরি ছাড়ার পর ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী দীর্ঘদিনের সার্ভিস বেনিফিট পরিশোধ করতে কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করে। এক পর্যায়ে বেনিফিটের টাকা পরিশোধে সম্মত হয় এবং কিছু টাকা পরিশোধ করে।
এছাড়া প্রতি মাসে একটি চেক নগদায়নের তারিখ দিয়ে গত জানুয়ারি মাসে ১০টি চেক দেয়। এর মধ্যে দুটি চেক অনার হলেও আটটি চেক ডিজঅনার হয়। যার অর্থের পরিমাণ ৬ লাখ এক হাজার ৮২৪ টাকা।
বাদি আইনজীবীর মাধ্যমে উকিল নোটিশ পাঠালে আসামিরা এর জবাবে শিগগিরই টাকা পরিশোধের বিষয়টি তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে জানান।
কিন্তু তারপরও কোনো টাকা পরিশোধের কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় মঙ্গলবার সাতটি চেক ডিজঅনারের মামলা করেন। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর একটি চেক ডিজঅনারের মামলা একই আদালতে করা হয়েছিল। আদালত ওই মামলায়ও আসামিদের আদালতে হাজিরের জন্য সমন পাঠিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ বা কালের কণ্ঠের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি।
বাদির পক্ষে আদালতে মামলাটি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এমাদ উল্ল্যাহ শহীদুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী হুমায়ুন রশিদ সোয়েব, মোহাম্মদ বুরহান উদ্দিন এবং সৈয়দ মোহাম্মদ রাহাত।
এমাদ উল্ল্যাহ শহীদুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মামলার বাদী আহমেদ নূর সিলেটের একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক। দৈনিক ভোরের কাগজ ও দৈনিক প্রথম আলোতেও প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে কাজ করেছেন। সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন। তার মতো একজন সিনিয়র সাংবাদিকের পারিশ্রমিকের টাকার চেক দিয়েও পরিশোধ না করা প্রতারণার শামিল এবং দেশের সংবাদ মাধ্যমের জন্যও সম্মানজনক নয়। আদালত শুনানি শেষে নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮/১৪০ ধারা অনুযায়ী মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।”
মামলার বাদি দৈনিক সিলেট মিররের সম্পাদক আহমেদ নূর সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “যে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করেছি তার বিরুদ্ধে ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য মামলা করতে হয়েছে এটা দুঃখজনক। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে নিজের জন্য গ্লানিরও। ঢাকার বাইরে কর্মরত সাংবাদিকদের প্রতি মিডিয়া হাউসগুলো কি ধরনের আচরণ করে এটা বড় উদাহরণ। আমি পেশার মর্যাদার জন্য এবং মুখ বুজে যাতে এমন অন্যায় কেউ সহ্য না করেন তার জন্য এই আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”