মিয়ানমারের শান রাজ্যেও বড় ক্ষতির মুখোমুখি দেশটির জান্তা বাহিনী। রাজ্যের নাওংকিও এবং লাউকসক টাউনশিপে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর একের পর এক হামলার শিকার হচ্ছে সেনাবাহিনী।
৩০ নভেম্বর থেকে দক্ষিণ শান রাজ্যের লাউকসকের কিয়াউক্কু গ্রাম এলাকায় দানু পিপলস লিবারেশন আর্মি (ডিপিএলএ) জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে।
ডিপিএলএ ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ শান রাজ্যের দানু পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের সশস্ত্র শাখা।
নভেম্বরের শেষদিন তারা লাউকসক টাউনশিপে ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ২৯২ এবং আর্টিলারি ব্যাটালিয়ন ৩৪৯-এর জান্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সেনাদের আক্রমণ করে।
গত বুধবার ডিপিএলএ-র মুখপাত্র কো আহ মং জানান, কিয়াউক্কু এলাকায় ১০ দিনের সংঘর্ষে অন্তত ৩৪ জান্তা সেনা নিহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “লড়াই থেমে গেছে, তবে উত্তেজনা এখনও রয়েছে। তাউংখাম এলাকায় সংঘর্ষ চলছে।”
আর উত্তর শান রাজ্যের নাওংকিও টাউনশিপের বান্তবয়ে এবং ওম থি গ্রাম এলাকায় ২ ডিসেম্বর থেকে জান্তার বিরুদ্ধে তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং তাদের মিত্র বাহিনীও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
তাউংখাম কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি উত্তর এবং দক্ষিণ শান রাজ্যের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ফলে জান্তা কেন্দ্রগুলো, যেমন পিনউলউইন এবং মান্দালয় শহর, আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।
টিএনএলএ সূত্র জানায়, জান্তা বাহিনী বান্তবয়ে এবং ওম থি গ্রাম এলাকায় একের পর এক গোলাবর্ষণ করে এলাকাটি শক্তভাবে রক্ষা করছে।
নাওংকিও টাউনশিপের তাউংখামে টিএনএলএ এবং ডিপিএলএ একযোগে আক্রমণ চালিয়ে জান্তার অবশিষ্ট শক্ত ঘাঁটিগুলো দখল করেছে। এর মধ্যে আর্টিলারি ব্যাটালিয়ন ৩৫৪ এবং আর্টিলারি কমান্ড ৯০২ রয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রের সূত্র জানিয়েছে, প্রায় ২০ জান্তা সেনাকে আটক করা হয়েছে।
আগস্ট মাসে টিএনএলএ তাউংখামের আর্টিলারি ব্যাটালিয়ন ৪০৬ এবং ২০৬ দখল করেছিল, যা নাওংকিও থেকে ৩২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
জান্তা বাহিনী মান্দালয় অঞ্চলের পিনউলউইন থেকে বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণের মাধ্যমে পাল্টা জবাব দিচ্ছে।
তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) মিয়ানমারের জাতিগত বিদ্রোহীদের জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য।
জোটটি গত বছরের অক্টোবরে ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু করার পর থেকে তারা উত্তর শান রাজ্যের অধিকাংশ এলাকার দখল নিয়েছে। এবার দক্ষিণ শান রাজ্যেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে।
জোটের আরেক সদস্য আরাকান আর্মিও (এএ) তাদের নিজ রাজ্য রাখাইনে জান্তা সরকারকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছে।
গত বছরের নভেম্বরে আরাকান আর্মি (এএ) এই অভিযান তাদের নিজ রাজ্য রাখাইনেও সম্প্রসারিত করে। এরপর থেকে এএ রাখাইন রাজ্যের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে প্রায় ১৩টি এবং পাশের চিন রাজ্যের পালেতোয়া টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
গত রবিবার এএ বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্তেরও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
তথসূত্র: দ্য ইরাবতী।