যুক্তরাজ্যে এবারের মা দিবসে সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত তিন সন্তানসহ নিজের ছবিটি নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন। তিনি স্বীকার করেছেন, ছবিটি সম্পাদনা করা হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যে রবিবার মা দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে সেদিন তিন সন্তান প্রিন্স জর্জ, প্রিন্স লুইস ও প্রিন্সেস শার্লটকে সঙ্গে নিয়ে কেটের হাস্যোজ্জ্বল মুখের একটি ছবি উইলিয়াম ও কেট দম্পতির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করে কেনসিংটন প্রাসাদ। জানানো হয় যে ছবিটি তুলেছিলেন প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়াম।
ব্রিটিশ রাজপরিবারের রীতি অনুসারে কেটের সেই ছবি একই সঙ্গে বিভিন্ন বার্তা সংস্থা ও ছবি সংস্থায় পাঠানো হয়। বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ পত্রিকা ও সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে কেটের ওই ছবি ছেপেওছিল।
সিএনএন ও বিবিসি জানিয়েছে, তবে ছাপার কয়েক ঘণ্টা পর রবিবার বিকালে ছবি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। চারটি শীর্ষস্থানীয় বার্তা সংস্থা জানায়, কেটের ছবিটি আসল নয়, এটি সম্পাদনা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) পক্ষ থেকে বলা হয়, উৎস ছবিটি পরিবর্তন করেছে। অন্যদিকে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুসরণ করে তারা ছবিটি তাদের সাইট থেকে সরিয়ে ফেলছে।
গেটি ইমেজেস ও পিএ ইমেজেসকেও ছবিটি সরিয়ে ফেলতে দেখা যায়।
ছবিটিতে যে কারসাজি করা হয়েছে, তার পক্ষে বার্তা সংস্থাগুলো বেশ কয়েকটি প্রমাণও হাজির করে। কেটের মেয়ে প্রিন্সেস শার্লটের হাতার শেষ প্রান্ত আর কেটের জ্যাকেটের বামদিকের জিপার- এই দুই খাপছাড়া অংশ খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করলে কারসাজিটি সহজে ধরা পড়ে।
বার্তা সংস্থা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের জেরে পরের দিন সোমবার প্রকাশিত ছবিতে কারসাজির দায় পুরোটাই নিজের কাঁধে নেন কেট।
এক্সে তিনি লিখেছেন, “অনেক অপেশাদার ফটোগ্রাফারের মতো আমিও মাঝেমধ্যে ছবি সম্পাদনা করি। আমাদের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা পারিবারিক ছবিটিও সম্পাদিত। আমার কারণে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য ক্ষমা চাইছি।”
সোমবার কেটের একটি ছবি প্রকাশিত হয় যেখানে দেখা যায়, স্বামী প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়ামের সঙ্গে গাড়িতে করে উইন্ডসর প্রাসাদ ছাড়ছেন তিনি।
উইলিয়াম-কেট দম্পতি প্রতি বছরই মা দিবস উদযাপন করে। তবে এ বছর মা দিবসকে ঘিরে কেটের সম্পাদিত ছবিটি যুক্তরাজ্যবাসীকে আলাদা বার্তা দিয়েছিল। তারা ভেবেছিল, কেট তাহলে সুস্থই আছেন।
এ বছরের জানুয়ারিতে মধ্য লন্ডনের একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন ৪২ বছর বয়সী কেট। সেখানে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়। সব মিলে ১৩ রাত ওই ক্লিনিকে ছিলেন তিনি।
কেটের ঠিক কী হয়েছিল, এ নিয়ে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে কিছু বলা না হলেও তারা নিশ্চিত করে জানিয়েছিল, কেটের শারীরিক সমস্যা ক্যান্সারজনিত নয়।
কেটের পুরোপুরি সুস্থ হতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে বলে কেনসিংটন প্রাসাদ থেকে জানানো হলেও এ নিয়ে নানা গুজবে মেতে ওঠে লোকজন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তানদের সঙ্গে হাসিমুখে তোলা ছবি কেটের স্বাস্থ্যবিষয়ক গুজবকে উড়িয়ে দিতে পারত। সেটা না হয়ে উল্টো তাকে নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।