ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ-প্রতারণার মামলার পর আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে আড়াই বিলিয়ন বা ২৫০ কোটি ডলারের দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে কেনিয়া।
এর মধ্যে একটি চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এ ছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল। চুক্তিটির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি ডলার।
রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো দেশটির পার্লামেন্টে এক ভাষণে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এ ছাড়া রুটো বলেছেন, তিনি আদানি গ্রুপের একটি কোম্পানির সঙ্গে গত মাসে কেনিয়ার জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সই করা ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের একটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ চুক্তিও (পিপিপি) বাতিল করছেন। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য এই চুক্তি হয়েছিল।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি ও তার কয়েকজন সহযোগীকে অভিযুক্ত করেন। একই দিনে গৌতম আদানি ও তার ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।
এরপর বৃহস্পতিবারই কেনিয়া আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিল।
বিদ্যুৎ আমদানির জন্য গৌতম আদানির মালিকানাধীন কোম্পানি আদানি পাওয়ারের সঙ্গে চুক্তি আছে বাংলাদেশেরও। ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২৫ বছরের চুক্তিটি করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।
সর্বোচ্চ গোপনীয়তা অনুসরণ করে করা এই চুক্তির আওতায় আদানি গ্রুপের কোম্পানির কাছ থেক বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার এই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়গুলো কীভাবে সম্পাদন করা হয়েছে, তাতে কোনও ত্রুটি ছিল কি না, শুল্ক পরিহার বা প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে কি না; এমন আরও প্রশ্ন সামনে রেখে তদন্তে নামছে বাংলাদেশের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরও।
গৌতম আদানি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর খুবই ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তিনি অনৈতিক ব্যবসায়িক সুবিধা পেয়ে আসছেন বলে দেশটির বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদেরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে। অবশ্য আদানি বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।