Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫

চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেন খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়ার ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সপরিবারে লন্ডনে রয়েছেন। বিমানবন্দর থেকে তিনিই মাকে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাবে, যেখানে হবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। ছবি : মেরিনা মিতু
খালেদা জিয়ার ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সপরিবারে লন্ডনে রয়েছেন। বিমানবন্দর থেকে তিনিই মাকে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে যাবে, যেখানে হবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। ছবি : মেরিনা মিতু
[publishpress_authors_box]

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বন্দিদশা থেকে মুক্তির পাঁচ মাস বাদে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য গেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

কাতারের আমিরের পাঠানো একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের পথে রওনা হন তিনি।

এই উড়োজাহাজের রাত ১০টায় ঢাকা ছাড়ার কথা থাকলেও গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসা থেকে শুরু করে বিমানবন্দর পর্যন্ত থেমে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঢলে ধীরে ধীরে চলছিল তার গাড়ি।

গাড়িতে পাশে বসা ছিলেন তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান। নেতা-কর্মী-সমর্থকদের শুভেচ্ছার বার্তা নিয়ে শুলশান থেকে বিমানবকন্দরে পৌঁছতে তাদের দুই ঘণ্টা লেগে যায়।   

এর মধ্য দিয়ে সাত বছর পর বিদেশ সফরে গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। লন্ডনে রয়েছেন তার বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সাত বছর পর ছেলের সঙ্গেও মিলিত হবেন তিনি।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই খালেদা জিয়া লন্ডন গেলে বিমানবন্দর থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে তাকে তারেক রহমান তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন।

এবার অবশ্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে পৌঁছনোর পর বিমানবন্দর থেকে সরাসরি নেওয়া হবে হাসপাতালে।

সেবার যুক্তরাজ্য থেকে ফেরার সাত মাস পরই দুর্নীতির একটি মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। এরপর আরেকটি মামলায় দণ্ডিত হন তিনি।

২০১৮ সালে কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পর দেশে কোভিড মহামারি দেখা দিলে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেয়। তবে শর্ত দেয়, তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আগে থেকেই নানা রোগে ভুগছিলেন। বন্দি থাকা অবস্থায় লিভার সিরোসিসসহ হৃদযন্ত্রের জটিলতায় আক্রান্ত হন।

তখন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে খালেদা জিয়ার পরিবার অনেকবার সরকারের কাছে আবেদন করলেও তাতে সাড়া মেলেনি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনও বলেছিলেন, তাকে যে বাসায় থাকতে দিয়েছি, এই বেশি।

কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশছাড়া হওয়ার পরপরই মুক্তির স্বাদ পান খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের রাজর্নীতিতে দ্বৈরথের জন্য যাদের ‘ব্যাটলিং বেগমস’ বলে আসছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম।   

খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করে রাষ্ট্রপতি তাকে মুক্তি দিলেও আইনিভাবেও বিভিন্ন মামলায় নিষ্কৃতি পেতে থাকেন তিনি। তার পাশাপাশি ছেলে তারেক রহমানও বিভিন্ন মামলায় খালাস পেতে থাকেন।

খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার বাধা আগস্টে কাটলেও তাকে নেওয়ার বিষয়ে দেরি হচ্ছিল। তখন বিএনপি নেতারা এমনও বলেছিলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে যাবেন, তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।

কিন্তু তারেক রহমানের ফেরার কোনও তোড়জোড় না থাকার মধ্যে খালেদা জিয়ার যাত্রায় দেরির জন্য তার বিমানযাত্রার ধকল সামলানোর সামর্থ্য না থাকার কথা জানানো হয়।

এরমধ্যে গত ২ জানুয়ারি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামান বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে আসার তিন দিন পর বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৭ জানুয়ারি লন্ডন রওনা হবেন তাদের নেত্রী।

তারেক রহমানের আসার আগেই খালেদা জিয়ার যাত্রা সন্দেহের চোখে দেখছেন বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী। তাদের মনে ওয়ান-ইলেভেনের ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ উঁকি দিলেও বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা তা উড়িয়ে দিচ্ছেন।

কীসের চিকিৎসা

খালেদা জিয়া হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে।

বন্দি হওয়ার পর তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। এজন্য দুই বছর আগে ঢাকায় তার অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। হৃদপিণ্ডে স্টেন্ট পরানো হয় তাকে, বসানো হয় পেসমেকারও।

তবে এবার ‍মূলত লিভারের পরবর্তী চিকিৎসার জন্যই তার বিদেশযাত্রা।

খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “ম্যাডামের নানা শারীরিক জটিলতা রয়েছে, যা আমরা বিভিন্ন সময়ে বলেছি। সর্বোপরি উনার লিভারের জটিলতাটা অর্থাৎ লিভার সিরোসিস পরবর্তীতে কম্পেনসেন্টারি লিভার ডিজিজ বলে গ্রেড-টু, সেটার জন্য টিপস (চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশেষ পদ্ধতি টিআইপিস-টিপস) করা হয়েছে।

“টিপসের কিছু টেকনিক্যাল আসপেক্ট আছে, এডজাস্টমেন্টের বিষয় আছে …. এই জিনিসগুলো তো আমরা করতে পারি নাই।”

অন্য সমস্যাগুলো নিয়ে তিনি বলেন, “হার্টে উনার ব্লক ছিল একাধিক। খালি লাইফসেইভিং যেটুকু পোরশন, সেটুকু করা হয়েছিলো ওই সময়ে। কারণ ওই সময়ে উনার শারীরিক সুস্থতা ওইরকম ছিল না। উনার আরও যে ব্লক আছে, সেটা অ্যাডড্রেস করার দরকার আছে। উনার ক্রনিক কিডনি ডিজিজ যেটা আছে, সেটা অ্যাডড্রেস করতে হবে। উনার করোনা পরবর্তী কিছু জটিলতা হয়েছে, সেগুলো নিরসন করার ব্যবস্থা নিতে হবে।”

যকৃৎ প্রতিস্থাপন নিয়ে ইউরোলজির এই অধ্যাপক বলেন, “লিভার ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখতে হবে উনার যে বয়স … লিভার ট্রান্সপ্লান্টের বিষয়টি সিদ্ধান্ত দেবে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটে যাওয়ার পরে। ওখানে (লন্ডন ক্লিনিক) ওই সুবিধাটা আছে। সো দে উইল ডিসাইড যে, হোয়াট উইল বি দ্য নেক্সট কোর্স অব টিট্রমেন্ট।”

চিকিৎসা কোথায়

আগে বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়ার মূল চিকিৎসা হবে যুক্তরাষ্ট্রে। সোমবার ডা. জাহিদ জানান, লন্ডনের একটি ক্লিনিকেই ভর্তি হবেন তিনি। সেখানেই তার চিকিৎসা চলবে।  

লন্ডন পৌঁছেই ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’ এ ভর্তি হবেন খালেদা জিয়া।

ডা. জাহিদ বলেন, “লন্ডন ক্লিনিক বলে একটা পুরনো ঐতিহ্যবাহী হসপিটাল আছে, সেখানে উনাকে (খালেদা জিয়া) ভর্তি করা হবে। এই হসপিটালে উনি চিকিৎসাধীন থাকবেন।”

দ্য লন্ডন ক্লিনিক।
দ্য লন্ডন ক্লিনিক।

সেন্ট্রাল লন্ডনের ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’ লন্ডনের সবচেয়ে বড় বেসরকারি হাসপাতালের একটি। এটি ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

লন্ডন ক্লিনিক বেছে নেওয়ার বিষয়ে ডা. জাহিদ বলেন, “আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, উই আর হ্যান্ডলিং এ পেসেন্ট মাল্টিপল ডিজিজ যার আছে। সেজন্য আমরা লন্ডন ক্লিনিকে যেটি মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যাডভান্সড সেন্টার, সেখানে নিয়ে যাচ্ছি।”

যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “যদি ওখানে (লন্ডন ক্লিনিক) সুপারিশ করেন যে, ইয়েস সি নিডস …. তাদের এখানে নাই, জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। তখন হয়ত যাওয়ার একটা প্রশ্ন আসবে। সেখানকার চিকিৎসকরা উনাকে দেখে তারপরে ডিসিশন হবে উনার নেক্সক্ট কোর্স অফ ডিসিশন কী হবে?”

সঙ্গে গেলেন কারা

ঢাকা থেকে যাত্রায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান। দীর্ঘদিনের পরিচর্যাকারী গৃহকর্মী ফাতিমা বেগমও গেলেন সঙ্গী হয়ে।

দেশে খালেদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের ছয়জন সদস্য একই বিমানে ‍গেছেন। তারা হলেন- অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিক, অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার ও প্রটোকল অফিসার এস এম পারভেজও খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হয়েছেন।

তাকে বিদায় জানাতে নেতা-কর্মীদের ঢল নেমেছে ঢাকার গুলশানে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ
তাকে বিদায় জানাতে নেতা-কর্মীদের ঢল নেমেছে ঢাকার গুলশানে। ছবি : হারুন-অর-রশীদ

বিমান পাঠালেন কাতারের আমির

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হাম্মাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছে।

ডা. জাহিদ বলেন, “কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার জেনে রাজকীয় বহরের এই বিশেষ বিমান দিয়েছেন।”

তিনি জানান, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিতে কাতারের চারজন রাজ-চিকিৎসক এবং প্যারা মেডিকস থাকবেন।

ফিরবেন কবে

খালেদা জিয়া কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন, সেই বিষয়ে কোনও ধারণা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিষয়টি নির্ভর করছে তার চিকিৎসার ওপর।

চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়া ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যাবেন কি না, সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিল বিএনপি নেতা জাহিদের কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, “সুস্থ থাকলেই মানুষ চাইলে কিন্তু ওমরাহ করা যায় না… আল্লাহ চাইতে হয়। হজ এবং ওমরাহ অবশ্যই আল্লাহ চাইতে হবে। টিকেট করার পরে, যাওয়ার পরও এমনও হয়েছে যে অনেকে করতে পারেন না।

“উনি (খালেদা) একজন ধার্মিক মানুষ… মনের ইচ্ছা আছে। উনি সুযোগ পেলে হজ করেছেন, ওমরাহ করেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেশ কয়েকবার। এত নির্যাতন-অত্যাচার, কষ্টের পরে শুকরিয়া আদায় করার জন্য ডেফিনেটলি উনার ওমরাহ পালনের আগ্রহ আছে।”

সংশয় কোথায়

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া বিদেশ যাবেন, এই দাবি বিএনপিরই ছিল; কিন্তু এমন তাদের কারও কারও মনে নানা সন্দেহ উঁকিঝুঁকি মারছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৮ আগস্ট দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, তারা এখনও ওয়ান-ইলেভেনের কথা ভুলে যাননি। তাই আবার যখন ‘ওই চেহারাগুলো’ সামনে আসে, তখন যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক হয়।

২০০৭ সালে রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে সেনাবাহিনীর সমর্থনে গঠিত হয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকার। তাদের তৎপরতায় ‘মাইনাস টু’ হয়ে উঠেছিল আলোচিত। এর মানে হচ্ছে, দুই নেত্রী খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেওয়া।

তখন চাপের মধ্যেও খালেদা জিয়া দেশ ছাড়তে রাজি হননি বলে পরে বিএনপি নেতাদের কথায় উঠে আসে। শেখ হাসিনা বিদেশ গেলেও বাধা উপেক্ষা করে ফেরার কথা তিনি নিজেই পরে বলেছিলেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা ‘মাইনাস’ হয়েছেন, এখন খালেদা জিয়াকেও কি ‘মাইনাস’ করা হচ্ছে? এসন শঙ্কাও কাজ করছে বিএনপির কর্মীদের মনে।

বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমি তো ঠিক বুঝতে পারছি না, কোন দিকে যাচ্ছে সবকিছু।”

ঢাকা মহানগর উত্তরের এক নেতা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এত বছর অপেক্ষা করলাম, নির্যাতিত হলাম। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটল। কিন্তু আমরা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যেই আছি।

“হাই কমান্ডের কোনও কিছুই আমাদের কাছে স্পষ্ট না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত ম্যাডাম দেশেই থাকবে, তেমনটাই জানতাম। এখন দেখি উলটো। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবে আসবে দেশে, সেটাও জানি না আমরা।”

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে মঙ্গলবার রাতে যাত্রা করেন লন্ডনে। ছবি : মেরিনা মিতু
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে মঙ্গলবার রাতে যাত্রা করেন লন্ডনে। ছবি : মেরিনা মিতু

ঢাকা মহানগরের আরেক নেতা বলেন, “ম্যাডাম যাওয়ার পর আমাদের আর কোনও অভিভাবক থাকবে না।

“বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী ‘মাইনাস টু’ নিয়েও ভাবতে হচ্ছে আমাদের। যদিও দেশের জনগণ, জাতীয়তাবাদী নেতাকর্মীরা এটা হতে দেবে না। তারপরেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”

তবে বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা আশ্বস্ত করছেন, এমন শঙ্কার কোনও কারণ নেই।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “রাজনৈতিক বাজারে কতজন কত কথা বলে, জল ঘোলাও করে। এতে দোষের কিছু নেই।

“ম্যাডামের বিদেশ সফর তার উন্নত চিকিৎসার জন্য। যার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা বলে আসছিলাম। তার পরিবার থেকেই বারবার আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার অবৈধ ভাবে তার বিদেশ যাত্রার আবেদন বাতিল করে দেয়। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে, বিদেশ যাত্রায় বাধা নেই, তাই যাচ্ছেন। এখানে রাজনৈতিক কোনও ইঙ্গিত নেই।”

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাসও এমন শঙ্কা অমূলক বলে উড়িয়ে দেন।

দল চলবে কীভাবে

২০১৮ সালে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পরপরই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে বিএনপি পরিচালনার দায়িত্ব নেন তারেক। তারপর থেকে লন্ডন থেকে তিনিই দল চালাচ্ছেন।

এখনও সেভাবেই চলবে বলে জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব সময় সুযোগ বিবেচনায় দেশে ফিরবেন। আর তার নির্দেশনাতেই দলীয় সমস্ত কিছু এতদিন চলছিল। এখনও সেভাবেই চলবে। বিশেষ কোনও পরিবর্তন তো হচ্ছে না।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত