Beta
মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫

খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন মঙ্গলবার

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা রবিবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা রবিবার রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান।
[publishpress_authors_box]

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে এসে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন তার নেত্রী।

রোববার রাতে ঢাকার গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’য় যান ফখরুলসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। সেখান থেকে বেরিয়ে এই খবর দেন ফখরুল।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মঙ্গলবার রাতে লন্ডন রওনা হবেন খালেদা জিয়া।

‘ফিরোজা’ থেকে বেরিয়ে ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, “আল্লাহতালার অশেষ রহমতে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী, যিনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীন, তিনি তার চিকিৎসার জন্যে আগামী ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সেই কারণে আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সকল সদস্য উনার কাছে এসেছিলাম শুভেচ্ছা জানাতে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের পর খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে কোনও বাধা না থাকলেও শারীরিক সক্ষমতার কারণে এতদিন তিনি যাননি, এমন কথা বলা হচ্ছিল বিএনপির পক্ষ থেকে।

পরে তার চিকিৎসক ও বিএনপি নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানুয়ারির শুরুতে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার কথা বললেও সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ এই প্রথখম জানানো হলো।

খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান সপরিবারে লন্ডন রয়েছেন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, লন্ডনে ছেলের বাসায় কয়েকদিন থাকার পর লিভারের উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন খালেদা জিয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হসপিটালের মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি কেয়ার ইউনিটে লিভারের জটিলতার চিকিৎসা নেবেন তিনি। ইতোমধ্যে তার যাবতীয় চিকিৎসার কাগজপত্র, বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট সেখানে পাঠানো হয়েছে।

এই হাসপাতালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত ২৬ অক্টোবর ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার লিভার ও পেটের ফ্লুইড জমা ও রক্তক্ষরণ রোধে চিকিৎসা দিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করাবেন।

চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে খালেদা জিয়া দেশে ফিরে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।

কবে নাগাদ ফিরবেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা তো চিকিৎসকরা বলতে পারেন। আমরা তো বলতে পারি না। আমরা আশা করি, উনি চিকিৎসা শেষে খুব শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন।”

খালেদা জিয়া কী নির্দেশনা রেখে যাচ্ছেন- জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “ম্যাডাম নির্দেশনা দিয়েছেন যে এক সাথে কাজ কর, জনগণের পক্ষে কাজ কর, গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ কর।”

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হাম্মাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে রাজকীয় বহরের বিমানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এই বিমানে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে।

রাত ৯টায় খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’য় একে একে ঢোকেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হেসেন, মুহাম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

তার আগে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেন।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস,কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

আওয়ামী লীগ সসরকার আমলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। দুই বছরের মাথায় ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হলে শর্ত সাপেক্ষে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। তবে তার বিদেশ যাওয়ার পথ বন্ধই ছিল।

এরমধ্যে তার লিভার সিরোসি ধরা পড়ে, সেজন্য অস্ত্রোপচারের টেবিলে যেতে হয় তাকে। হৃদযন্ত্রের জটিলতার কারণে গত বছরের মাঝামাঝিতে পেসমেকারও বসাতে হয় তাকে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে খালেদা জিয়া পুরোপুরি মুক্তি পান। এরপর তাকে বিদেশ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর কথা বলা হলেও পাঁচ মাস পর তা ঘটতে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত