বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানোর পর তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে শিগগিরই কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার ঢাকার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন দলটির মহাসচিব।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হৃদযন্ত্রের জটিলতা ছাড়াও ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস, ফুসফুস, লিভার, কিডনি সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে ঢাকার গুলশানে বাসায় ছিলেন। সেখানে অসুস্থতা বাড়লে শুক্রবার রাতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। রবিবার তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি ছিলেন। সেখানে তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। তবে সিসিইউতে তিনি অ্যাডজাস্ট করতে পারেননি। এ কারণে সোমবার সিসিইউর ফ্যাসিলিটিজগুলো কেবিনে নিয়ে তাকে সেখানে শিফট করা হয়।”
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত এই মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিন।
তারা সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনার পাশাপাশি খালেদার পুত্রবধূ লন্ডনে থাকা ডা. জোবায়েদা রহমানের মতামতও নেন বলে বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য সরকারকে দায়ী করে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। সেই কারণে তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়। কারাগারে নেওয়া হয়।
“দুই বছর একটা পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে থেকে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। বারবার চেষ্টা করার পরও সেখানে ভালো চিকিৎসক পাঠানো হয়নি। বহু চেষ্টার পর তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও বিএনপি চেয়ারপারসন সুষ্ঠু চিকিৎসা পাননি।”
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং সংবিধানবিরোধী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।