Beta
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫

আর জি কর হত্যাকাণ্ড মামলার রায়ে ক্ষুব্ধ টলিউড তারকারা

টলিউড, আর জি কর হাসপাতাল হত্যাকাণ্ড
[publishpress_authors_box]

কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে গত বছর এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল হয় পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা ভারত।

সোমবার কলকাতার একটি আদালত সঞ্জয় রায় নামে একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন টলিউড তারকারা, খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের বিচার চেয়ে রাজপথে নেমেছিলেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। আটক হয়ে হাজতেও থাকতে হয়েছে তাকে।

রায়ের প্রতিক্রিয়া তিনি বলেন,“অভিনেতা বা নেতা হিসেবে নয়, পশ্চিমবঙ্গের একজন নাগরিক হিসেবে, যারা আন্দোলনে ছিলেন, প্রত্যক্ষ করেছি, তারা এই রায়ে খুশি তো নন, বরং অসন্তুষ্ট। প্রথম কথা হচ্ছে যে রেয়ারেস্ট অব দ্য রেয়ার কেস বলে সিবিআইকে বোঝাতে হবে কেন? এটা প্রমাণের দরকার কী? সম্মানীয় বিচারক, যিনি এই রায় দিয়েছেন তার রায়কে শিরোধার্য।”

হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সরব হয়েছিলেন অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যও।

রাস্তার মিছিলে আর সামাজিক মাধ্যমেও সরব ছিলেন। প্রশ্ন তুলেছেন নারীদের নিরাপত্তা নিয়েও।

“এত দিন ধরে এত তদন্ত করে যদি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে, সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কেউ দোষী নন, সেখানে কিছু বলার নেই।

মানুষ অনেক চেষ্টা করেছে, যথেষ্ট তদন্ত হয়েছে, তারপরও যদি এই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে সঞ্জয়ই দোষী, এজেন্সি, আদালত যদি তেমনটাই মনে করে থাকে, তেমনই রায় দিয়ে থাকে, তবে নিঃসন্দেহে ওই দোষী,” তিনি বলেন।

এই অভিনেত্রী আরও বলেন, “আশা করি, এটা এখানে থেমে থাকবে না, তদন্ত চলবে। দেখা যাক। কিছু তো বলার নেই। কারণ আদালত হচ্ছে সবার ওপরে, তার ওপরে তো কিছু বলার নেই। এত তদন্তের পর যদি আদালত এই সিদ্ধান্ত পৌঁছায়, তবে আমি কী বলব? সাধারণ মানুষ কী বলবে?”

নৃশংস এ ঘটনার বিচার চেয়ে রাজপথে নেমেছিলেন অভিনেতা পরমব্রত চ্যাটার্জিও।

রায় ঘোষণার পর তিনি বলেন, “আমি সব সময় চেয়েছি যাতে বিচার হয়। সুষ্ঠু বিচারের পক্ষে ছিলাম-আছি-থাকব। একটি শহরের কেন্দ্রস্থলে, একটি হাসপাতালে, কিভাবে এ ঘটনা ঘটতে পারে! যারা দায়ী, সে যেকোনো স্তরের প্রশাসন হতে পারে, সর্বস্তরের প্রশাসন হোক কিংবা হাসপাতাল, প্রত্যেককে জবাব দিতে হবে। এটাই চেয়েছিলাম। এরপরও আদালতের বিচারে মনে হয়েছে, সঞ্জয় রায় একমাত্র দোষী। তাই তারা তাকে শাস্তি দিয়েছেন।“

পরমব্রত আরো বলেন, “সাধারণ মানুষের তো বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা না রেখে কোনো উপায় নেই। কারো মনে হতেই পারে এটা করে অনেককে হয়তো আড়াল করা হলো। কিন্তু বিচারব্যবস্থার ওপর থেকে ভরসা উঠে গেলে তো হবে না। তাদের মনে হয়েছে সঞ্জয় একমাত্র না হলেও মূল দোষী, তাই শাস্তি দিয়েছে। যাবজ্জীবন কারাবাস নিঃসন্দেহে বড় একটা শাস্তি।“

মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ায় প্রশ্ন ছুড়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। তার ভাষায়, “সম্মানীয় বিচারক কি জানতেন না রেয়ারেস্ট অব দ্য রেয়ার কেস ? যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল, তার তথ্যদি নিরিখে আজকে সঞ্জয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা হলো, কেন মৃত্যুদণ্ড নয়? আমার অনেক বন্ধুই ফোন করে বলছে, যদি মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা হতো, তাহলে আমি একা মারা যাব কেন, এটা ভেবে সঞ্জয় কি আর সবার নাম বলে দিত? এই প্রশ্নগুলোই জনমানসে উঠছে।”

কলকাতার তারকাদের মধ্যে বিচার চেয়ে প্রথম যে কয়জন সরব হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন শ্রীলেখা মিত্র।
রায় ঘোষণার পর হতাশা ব্যক্ত করে ফেইসবুকে লিখেন তিনি, “তিলোত্তমা, কলকাতার তিলোত্তমার বিচার নাই।”

গেল বছরের ৮ আগস্ট ভোররাতে আর জি কর মেডিকেল কলেজে ধর্ষণের পর খুন করা হয় এক তরুণী চিকিৎসককে। ওই তরুণীর গলার একটি হাড় ভাঙা ছিল। শরীরে মোট দশ স্থানে ক্ষত পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ভারতের অনেক জায়গায় জুনিয়র ডাক্তাররা রোগীদের দেখতে অস্বীকার করেন বিচারের দাবিতে। তারা ভুক্তভোগীর বিচার এবং হাসপাতালে নারীদের নিরাপত্তা দাবি করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত