সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান করার বিষয়টি দেশটির সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসাবে দেখছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, সরকার জানতে পেরেছে হাসিনাকে ভারত ফেরত দেবে না।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি, যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান থেকে এখন উপদেষ্টার ভূমিকায়।
বেশ কিছুদিন কথা-বার্তার পর শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক বার্তাও দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নরেন্দ্র মোদী সরকার সেই বার্তা পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। ফলে শেখ হাসিনাকে ফিরতে হবেই কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রবিবার পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের পরিচালনায় ‘নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা : অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও পররাষ্ট্রনীতি’ শীর্ষক পররাষ্ট্র নীতি সংলাপে অংশ নেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সেখানে তিনি বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান জোরদারে বাস্তবমুখী পররাষ্ট্রনীতির আহ্বান জানিয়েছেন।
অতীতের ‘নতজানু পররাষ্ট্রনীতি’ থেকে বেরিয়ে এসে সব দেশের সঙ্গে ‘বাস্তবসম্মত’ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ওপরও জোর দিয়েছেন মাহফুজ আলম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দর কষাকষির শক্তি বাড়াতে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে চাই।”
তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আলোচনার ক্ষেত্রে দেশের সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। পররাষ্ট্রনীতিতে কোনও দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কোনও রাজনৈতিক দল বা ধর্মের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করে বাংলাদেশের সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করতে হবে বলে আহ্বান জানান মাহফুজ।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ এটাকে ভারত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা শুনছি যে, তাকে (হাসিনা) প্রত্যর্পণ করা হবে না।”
উপদেষ্টা মাহফুজ পররাষ্ট্র নীতির সব বিষয়ে বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সংলাপে অংশ নিয়ে অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও বৈদেশিক নীতির উদ্দেশ্য সাধনে সরকারের সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আগামী দিনে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।
তথ্যসূত্র : বাসস