হঠাৎ শীত বাড়ায় জমে ওঠেনি বাণিজ্য মেলা। মেলা শুরুর পর ৩ জানুয়ারি শুক্রবার ছিল প্রথম ছুটির দিন। এদিন সকালে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়লেও তা ছিল অন্যান্য বছরের ছুটির দিনের তুলনায় কম।
ঢাকার পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) গত ১ জানুয়ারি ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার সকাল ১০টায় মেলার প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হয় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য। মেলা ঘুরে দেখা যায়, বেশ কিছু স্টলে নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। কোনও কোনও স্টলে চলছে পণ্য গোছানোর প্রস্তুতি।
মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত শীতের প্রভাবে ক্রেতা-দর্শনার্থী কিছুটা কম। শীত কমলে উপস্থিতি বাড়বে বলে তারা আশা করছেন।
অবশ্য গত ১ জানুয়ারি মেলা শুরুর দিনই হঠাৎ শীত বাড়তে শুরু করে। এবার শীত দেরিতে পড়তে শুরু করায় তা জেঁকে বসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মেলায় প্রতিবছর অংশ নেয় চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান দিল্লি অ্যালুমিনিয়াম।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার আখতারুজ্জামান রিপন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মেলার প্রথম সপ্তাহে ক্রেতা সমাগম একটু কমই থাকে। ব্যবসায়ীরা এ সময়টায় যার যার স্টল গোছাতে ব্যস্ত থাকেন। এবার হঠাৎ শীত পড়ায় একটু বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। এই শীতে লোকজন খুব প্রয়োজন না হলে ঘর থেকেই বের হয় না। একারণে শুক্রবার ক্রেতা সমাগম কম।”
তবে শীত উপেক্ষা করেও অনেকে এসেছেন পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে। তাদের অনেকে ঘুরে বেড়ান মেলা প্রাঙ্গণ। নানা ধরনের ছাড়ে দেশি খাদ্যপণ্য ও প্ল্যাস্টিক সামগ্রী কিনছিলেন তারা।
সুজন আহমেদ নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী দর্শনার্থী সকাল সন্ধ্যাকে জানান, সারা সপ্তাহ তিনি কর্মব্যস্ত থাকেন। শুক্রবার ছুটি; সন্তানদের স্কুলও বন্ধ। একারণে শীত উপেক্ষা করে পরিবার নিয়ে এসেছেন বাণিজ্য মেলায়।
এই মেলা সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার খোলা রাত ১০টা পর্যন্ত।
দেশীয় পণ্যের উৎপাদন, প্রচার, প্রসার, বিপণন ও রপ্তানিতে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে আসছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত এই মেলা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে হয়।
করোনা মহামারির কারণে এক বছর মেলার আয়োজন করা হয়নি। মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হয়।
মেলায় এবার ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের। বাকি ১১টি ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া এই সাত দেশের।
মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের টিকিট ৫০ টাকা; ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকিট ২৫ টাকা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনা মূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারছেন।