মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সহজলভ্য করে তুলতে কাজ করছে, এমনটাই দাবি লাইফস্প্রিংয়ের। গত বছরের এপ্রিলে সংবাদবিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে তারা দাবি করেছিল, দেশের এক কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক পরামর্শ এরই মধ্যে দিয়েছে তারা। সরাসরি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষকে।
লাইফস্প্রিং জানায়, যে কেউ চাইলেই তাদের টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করে মানসিক সমস্যার কথা জানিয়ে সমাধানের পরমর্শ নিতে পারেন।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটির ফেইসবুক পাতার ব্যানারে লেখা- “ঘরে বসেই সব ধরনের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা!” তার সঙ্গে রয়েছে তাদের নানা প্যাকেজের বিজ্ঞাপন।
ফেইসবুকে এই পাতাটি অনুসরণকারীর সংখ্যা ২০ লাখ, লাইক আছে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ। ইউটিউবে লাইফস্প্রিয়ের সাবস্ক্রাইবার ১১ লাখের বেশি। বোঝাই যায়, সোশাল মিডিয়ায় বেশ পরিচিত তারা।
২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর হেলথ স্টার্টআপ হিসেবে লাইফস্প্রিং ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট (বিআইজি) পেয়েছিল।
তানিয়ে এপ্রিলের সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লাইফস্প্রিংয়ের চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া মো. আমিন বলেছিলেন, “কমিউনিটিভিত্তিক, পেশেন্ট ফার্স্ট পদ্ধতিতে লাইফস্প্রিং দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার লক্ষ্যে কাজ করছে লাইফস্প্রিং।”
লাইফস্প্রিংয়ের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে তাদের চারটি পরিষেবাকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার পান্থপথে দুটি, বনানীতে একটি ও চট্টগ্রামে একটি। আগামী ৫ বছরের মধ্যে সারাদেশে আরও ২০টি চালুর পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
২০১৭ সাল থেকেই লাইফস্প্রিংয়ের হয়ে মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিতে নিয়মিত হাজির হন ইয়াহিয়া আমিন। নিজেকে লাইফস্প্রিংয়ের ‘লিড সাইকোলজিস্ট’ হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। তার ফেইসবুক পাতায়ও পরিচয়ে লেখা আছে ‘সাইকোলজিস্ট’। দাবি করেছেন, মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে।
অভিযোগ উঠেছে, মনোবিজ্ঞানের কোনও ডিগ্রিই নেই ইয়াহিয়া আমিনের। মনোরোগ চিকিৎসা দেওয়ারও কোনও ডিগ্রি কিংবা প্রশিক্ষণ নেই তার।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে যে কেউ মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেবে, তা হতে পারে না। এটা আইনবহির্ভূত।
এদিকে দেশের স্বাস্থ্য খাতের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ইয়াহিয়া আমিন যেহেতু চিকিৎসকই নন, তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও তাদের নেই।
ইয়াহিয়া আমিনের যোগ্যতা কী?
লাইফস্প্রিংয়ের ‘লিড সাইকোলজিস্ট’ হিসেবে ইয়াহিয়া আমিন রোগী দেখেন, ব্যবস্থাপত্র দেন, পরামর্শ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইয়াহিয়া আমিন ২০২০ সালে বেসরকারি এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন।
তবে এখন প্রশ্ন ওঠায় ইয়াহিয়া আমিন সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তিনি নিজেকে কখনও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট কিংবা সাইকিয়াট্রিস্ট হিসেবে দাবি করেননি, আর চিকিৎসক হিসেবে তো নয়ই।
অথচ ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল ইয়াহিয়া আমিন নিজের ফেইসবুক পাতায়ই একটি ভিডিও দিয়েছিলেন। সেখানে এক ব্যক্তি তার অভিজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন যে কীভাবে তিনি ইয়াহিয়া আমিনের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।
ওই ব্যক্তি বলেন যে তিনি ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন এবং ইয়াহিয়া আমিন তাকে যে ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেই ওষুধ সেবন করে তিনি সেরে ওঠেন।
ফলে সেই প্রশ্ন আসে, ইয়াহিয়া আমিন সাইকিয়াট্রিস্ট না হলে কীভাবে ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন?
তিনি যে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরামর্শ দেন, তা দেওয়ার এখতিয়ারও কি তার আছে কি না, সেই প্রশ্নও আসছে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পান্থপথে লাইফস্প্রিংয়ের কার্যালয়ে গিয়ে ছয় তলায় লিফট থেকে নামতেই চোখ যায় সামনের দেয়ালে; সেখানে বড় করে লেখা- ‘লাইফস্প্রিং রিডিফাইনিং হেলথকেয়ার’। ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, পুরোটাই স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত কার্যক্রম।
তবে সেখানে ইয়াহিয়া আমিনের সাক্ষাৎ মেলেনি। তার ফোন নম্বরে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে ফোন ধরেন লাইফস্প্রিং ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. সাঈদুল আশরাফ কুশল। এই চিকিৎসকও লাইফস্প্রিংয়ের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
‘লিড সাইকোলজিস্ট’ ইয়াহিয়া আমিনের কোনও চিকিৎসা সনদ না থাকার অভিযোগের বিষয়ে কুশল বলেন, “এ নিয়ে মানুষ ভুল কথাবার্তা বলছে, ও কখনোই এটা করে নাই, সে নন ক্লিনিক্যাল কাজ করছে।
“একটা প্রেসক্রিপশনে ওর সিল রয়েছে, সেটা ফ্রন্ট ডেস্ক থেকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়ত আমি করেছি অথবা অন্য কোনও সাইকিয়াট্রিস্ট করেছে।”
চিকিৎসা দিয়েছে একজন, সিল দেওয়া হলো আরেকজনের, তা কীভাবে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা জাস্ট একটা ছোট মিসটেইক ছিল।”
তাহলে ইয়াহিয়া আমিন কীভাবে লাইফস্প্রিংয়ের ‘লিড সাইকোলজিস্ট’ হন- প্রশ্নে ডা. কুশল বলেন, “এখন মনে হচ্ছে, কিছু ভুল করেছি। তবে সেটাও ছিল মানুষকে উপকার করা। কিন্তু আমাদের দেশে মানুষের উপকার করতে যাওয়াও ভুল।
“সিনিয়ররা যদি মনে করেন, ইয়াহিয়া কাউন্সেলিং থেকে সরে আসবে, তাহলে তাকে সরিয়ে আনা হবে। কিন্তু ব্রিটিশ সাইকোলজি প্রাক্টিশনার অনুযায়ী সে ক্লিনিক্যাল কেইস দেখতে পারে।”
কিন্তু যুক্তরাজ্যের যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ইয়াহিয়া আমিন বলছেন, সেখানে তিনি পড়েননি বলে অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে যোগাযোগ করে জেনেছেন, ইয়াহিয়া আমিন সেখানে পড়েননি।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, বিতর্ক যেহেতু উঠেছে, তাই ইয়াহিয়া আমিনের শিক্ষাগত সব সনদ প্রকাশ করা উচিৎ।
সে বিষয়ে প্রশ্নে ডা. কুশল বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়াতে সার্টিফিকেট দেখানো অশোভন।” তাদের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এমনটা করতে নিষেধ করেছে বলেও জানান তিনি।
স্প্রিংলাইফ নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে দাবি করে ডা. কুশল বলেন, “বাংলাদেশে যারা খুব উগ্র, জঙ্গিবাদী-তারাও আমাদের বিপক্ষে লেগেছে। এখানে ডাক্তার, সাইকোলজিস্ট অনেক পক্ষ জড়িত। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, একটা জিনিস (প্রতিষ্ঠান) যখন বড় হয়, তখন তাদের কিছু হেটার্স তৈরিই হয়, আমাদেরও তাই হয়েছে।”
লাইফস্প্রিং ফাউন্ডেশনের সভাপতির পদে রয়েছেন ইয়াহিয়া আমিন। তিনি লাইফস্প্রিং টেক লিমিটেডেও যুক্ত। এই প্রতিষ্ঠানটি দেশে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্লাটফর্ম বেসিসের (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস) সদস্য।
২০২০ সালে চালু হওয়া লাইফস্প্রিং টেকে পজিটিভ প্যারেন্টিং, ইমোশনাল হিলিংসহ আরও কিছু ই লার্নিং কোর্স করানো হয়, কাউন্সেলিং হয় না। অথচ তার ব্যবসার ধরনে লেখা রয়েছে আইটি, আইসিটি, ওয়েব ডেভলপমেন্ট এবং সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট।
লাইফস্প্রিং টেক নিয়ে প্রশ্নে ডা. কুশল বলেন, “সেটা ইয়াহিয়া দেখে।”
জিনের চিকিৎসা!
লাইফস্প্রিং টেক লিমিটেডের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করা হলে সাইফুল্লাহ নামের একজন ফোন ধরে জানান, এখানে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাউন্সেলিং এবং কনসালটেন্সি করা হয়। সেইসঙ্গে বিভিন্ন কোর্স রয়েছে, তবে কোর্সগুলো রেকর্ডেড।
অর্থাৎ কেউ যদি এখানে কোনও কোর্স করতে চান, তাহলে তাকে কিছু ভিডিও দেওয়া হয়।
সাইফুল্লাহ জানান, ইয়াহিয়া আমিন ‘পিউরিফাই উইদ ইয়াহিয়া আমিন’ এবং ‘রিলেশনশিপ অ্যান্ড ইন্টিমেসি’ নামে দুটি কোর্স করান। সবই রেকর্ডেড ভিডিও। এর সেবার দাম ৫ হাজার টাকা।
‘পিউরিফাই উইদ ইয়াহিয়া আমিন’ এর কোর্সের বিবরণে লেখা রয়েছে, যারা স্পিরিচুয়ালিটির, সাইকোলজি এবং ইসলামিক দর্শনের সংমিশ্রণে নিজের জীবনকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে চান, কোর্সটি তাদেরকে ভীষণভাবে উপকৃত করবে।
সকাল সন্ধ্যার হাতে এসেছে একটি ভিডিও এবং একটি প্রেসক্রিপশন। সেখানে ২০ বছর বয়সী এক নারী বলছেন, তিনি লাইফস্প্রিংয়ে গেলে দুটো ওষুধ আর একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়। আর সেই প্রেসক্রিপশনে তাকে রেফার করা হয়েছে ‘জিনের’ কাছে। ফোন নম্বরে কল করা হলে অন্যপ্রান্তে এক পুরুষ কণ্ঠ তাকে বলে, যদি কোনও জিন-পরীর প্রভাব থাকে, তাহলে তার জন্য তারা চিকিৎসা দিতে পারবে।
তার প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্রে দেখা যায়, সেখানে চিকিৎসকের দুটো সিল দেওয়া এবং দুটোই ডা. সায়েদুল আশরাফ কুশলের।
ব্যবস্থাপত্রে তার জন্য লাইফস্প্রিংয়ে অ্যাঙ্গার ম্যানেজমেন্ট, ক্লিনিক্যাল মেন্টাল হেলথ, হেলথি সেক্স লাইফ, রিলেশনশিপ অ্যান্ড ইন্টিমেসি এবং পিউরিফাই উইদ ইয়াহিয়া আমিনসহ ১০টি কোর্সের সুপারিশ করা হয়।
‘পিউরিফাই উইদ ইয়াহিয়া আমিন’ কোর্সে কী করা হয়- প্রশ্নে ডা. কুশল বলেন, ধর্মের মাধ্যমে মনকে শান্ত করার চেষ্টা করা হয়।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে ধর্মকে টেনে আনা ঠিক কি না- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ ধার্মিক। উন্নত বিশ্নে এগুলো নিয়ে কাজ হয়, সেসব দেশে এটা খুবই ‘অ্যাক্সেপ্টেড’, কিন্তু বাংলাদেশে কখনও কেউ করেনি বলেই এগুলো নিয়ে কথা হচ্ছে বেশি।”
দেখভাল করবে কে?
লাইফস্প্রিং নিয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, দেশে এমনিতেই মানসিক সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া নিয়ে ‘ট্যাবু’ রয়েছে। তার ওপর এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্য এখন সেটা আরও বড় সংকট তৈরি করছে।
মানসিক স্বাস্থ্য গবেষক এস এম ইয়াসির আরাফাত বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “ইয়াহিয়া আমিন রোগী দেখছে, প্রেসক্রিপশন দিচ্ছে! সে তো কাউন্সেলিংই করতে পারে না, প্রেসক্রিপশন তো পরের কথা। এটা সম্পূর্ণ ক্রিমিনাল অফেন্স।”
একে ‘ভয়াবহ প্রতারণা’ আখ্যায়িত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এখন অনেকে কয়েকটি প্রশিক্ষণ নিয়েই সোশাল মিডিয়ায় নিজেদের কাউন্সেলর হিসেবে তুলে ধরে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, “যার যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই চিকিৎসা বা কাউন্সেলিং করছে। কিন্তু সাইকোথেরাপি তো চিকিৎসার ভেতরেই পড়ে। তাহলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এটি দেখবে না কেন?”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লাইফস্প্রিং এবং ইয়াহিয়া আমিনকে নিয়ে কী ভাবছে- জানতে চাইলে অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হাসান মো.মঈনুল আহসান বলেন, “ইয়াহিয়া আমিন তো ডাক্তারই না, তাকে আমরা কীসের ভিত্তিতে ধরব?
“লাইসেন্স দরকার হয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক এবং হাসপাতালের। ওই প্রতিষ্ঠান তো এ তিন ক্যাটাগরির ভেতরে পড়ছে না। এদেরকে ধরার কোনও এখতিয়ার তো আমাদের নেই।”
২০২২ সালে প্রণীত হয় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল। এর আওতায় সাইকোলজিস্ট, কাউন্সেলরদের জন্য একটি তদারকি কর্তৃপক্ষ হওয়ার কথা থাকলেও তা না হওয়ায় সাইকোলজিস্ট এবং কাউন্সেলেরদের কোনও নিয়মের অধীনে আনা যাচ্ছে না।
ওই কর্মকৌশল প্রণয়নে যুক্ত একজন বলেন, “আমাদের জন্য বিএমডিসি রয়েছে। কিন্তু সাইকোলজিস্ট এবং কাউন্সেলররা যদি মিসকন্ডাক্ট করেন, তাহলে কোথায় অভিযোগ জানাবে মানুষ? কারা তাদের তদারকি করবে? দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় সে নিয়ে কিছু বলা নেই।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “যিনি কার্ডিওলজিস্ট বা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, তিনি কিন্তু কেবল এমবিবিএস পাস করলেই হৃদরোগ বিষয়ে চিকিৎসা করতে পারেন না, এরজন্য তাকে হৃদরোগ বিষয়ে পড়ে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে হয়।
“কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে লিড সাইকোলজিস্ট হিসেবে কেউ নিজেকে ক্লেইম করতে পারেন কি না, সে নিয়ে দেশে কোনও রেগুরেটরি বডি নেই। যে বডি তাকে স্বীকৃতি দেবে।
“দেশে মেন্টাল হেলথ অ্যাক্ট, ২০১৯ এ সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্টের সংজ্ঞা দেওয়া আছে। কিন্তু রেগুলেটরি বডি না থাকায় যে কেউ আত্মস্বীকৃত হিসেবে মনোবিজ্ঞানী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে।”
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, আগামী জুনে মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম নিয়ে নতুন প্রকল্প শুরু হবে এই কর্মকৌশলের অধীনে। তখন কোথাও কোনও অপচিকিৎসার মতো কিছু হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পথ তৈরি হবে।