ভালো মানের বিদেশি কোচের অধীনে অনুশীলনের স্বপ্ন দীর্ঘদিনের ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্তের। কিন্তু বিদেশি কোচ তো জোটেই না বরং নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতির জন্য নিজেকেই সারাক্ষণ কোচিং করাতে হয় নিজেকে। অবাক হলেও সত্যি, পল্টনের ছোট্ট জিমনেসিয়ামের ঘিঞ্জি পরিবেশে দিনের পর দিন একা একা অনুশীলন করে চলেছেন এসএ গেমসে সোনাজয়ী ভারোত্তোলক।
বাজে পরিবেশে অনুশীলন করতে গিয়ে গত বছর এশিয়ান গেমসের আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। দুর্বল শরীর নিয়ে তারপরও অংশ নেন চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে।
যদিও চীনের জিয়াংশু জিমন্যাশিয়াম স্পোর্টস সেন্টারে অনুষ্ঠিত মেয়েদের ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণিতে বি-গ্রুপে পাঁচ প্রতিযোগীর মধ্যে হন চতুর্থ । সেবার তোলেন ১৭৫ কেজি। স্ন্যাচে তিনি সর্বোচ্চ ৭৭ কেজি ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৯৮ কেজি ওজন তোলেন। তার গ্রুপে সর্বোচ্চ ২১৫ কেজি তোলেন ইন্দোনেশিয়ার সাবিথা রামদানি।
সর্বশেষ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার পর ঘরোয়া আসরে নিয়মিতই অংশ নিয়ে চলেছেন। রবিবার যেমন সপ্তম আন্তঃসার্ভিস জাতীয় ভারোত্তোলনে অংশ নিয়েই নতুন রেকর্ড গড়ে সোনা জেতেন মাবিয়া।
পল্টন ভারোত্তোলন জিমনেসিয়ামে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে এই প্রতিযোগিতা। এতে অবশ্য ৭১ কেজি ওজন শ্রেণীতে অংশ নেন মাবিয়া। এই ইভেন্টে স্ন্যাচে ৮৫ কেজি এবং ক্লিন এন্ড জার্কে ১১১ কেজি ওজন তোলেন। সব মিলিয়ে তিনি ১৯৬ কেজি ওজন তুলেছেন। তিনটিতেই তিনি গড়েছেন নতুন জাতীয় রেকর্ড। গত মার্চে বাগেরহাটে এই প্রতিযোগিতায় নিজে যে রেকর্ড গড়েছিলেন। সেটা টপকে এবার গড়লেন আবারও রেকর্ড।
তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না মাবিয়া। আগামী ৬-১৬ ডিসেম্বর বাহরাইনের মানামায় অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপ। এই পারফরম্যান্স তাকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা যোগাবে। সকাল সন্ধ্যাকে মাবিয়া বলেন, “আমার কোনও কোচ নেই। দীর্ঘদিন ধরে কোচের জন্য আবেদন করেও ফেডারেশন বা অলিম্পিক কোনও কোচ দেননি। তাই বাধ্য হয়ে নিজের কোচিং নিজেকেই করাতে হয়। তারপরও যে পারফরম্যান্স হচ্ছে তাতে আমি খুশি। এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো কিছু করতে চাই। এই পারফরম্যান্স টপকে যেতে চাই সেখানে।”
৬ ডিসেম্বর প্রতিযোগিতা শুরু হলেও মাবিয়ার ইভেন্ট আরও পরে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে মাবিয়া ঢাকা ছাড়বেন ১০ ডিসেম্বর। মাত্র অল্প কয়েকদিনের অনুশীলনে তারপরও ভালো কিছু করার আশা বাংলাদেশ আনসারের এই ভারোত্তোলকের।