Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

মৃত্যুর মুখ থেকে ম্যাডোনাকে ফিরিয়েছে যারা

madonna_child
[publishpress_authors_box]

পপ সংগীতের রানি হিসেবে পরিচিত ম্যাডোনার মাতৃরূপটাও ফুটে উঠেছে তার এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে।

বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে এই গায়িকা গত বছর থেকে শুরু তিন মহাদেশব্যাপী ‘সেলিব্রেশন’ ট্যুরের এক গুচ্ছ ছবি শেয়ার করার পাশাপাশি একটি পোস্টও দেন।

পোস্টে তিনি লিখেন, সেলিব্রেশন ট্যুরের আগে তার যে মুমূর্ষু অবস্থা তৈরি হয়েছিল, সেখান থেকে আবার সুস্থ হয়ে ফিরে আসার জন্য সন্তানরাই রেখেছে মূল ভূমিকা। 

ম্যাডোনা লিখেন, আমার প্রতিভাবান বাচ্চাদের কথা না বললেই নয়- যারা আমাকে এ পর্যন্ত আসতে সাহায্য করেছে।

উত্তর আমেরিকা, ইউরোপের নানা শহর ঘুরে ম্যাডোনার এই বৈশ্বিক ‘সেলিব্রেশন’  ট্যুরটি শেষ হবে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে। ট্যুরের সূচিতে ম্যাডোনার মোট ৮১টি স্টেজ পারফর্মেন্স ছিল।

এরমধ্যে মেক্সিকো সিটিতে শুক্রবার তার সেলিব্রেশন সিরিজের ৮০ তম শো-র  ঠিক আগের দিনটিতে পোস্টটি ইনস্টাগ্রামে দেন ম্যাডোনা।

নিজের সন্তানদের নিয়ে তিনি লিখেন, “তাদের প্রত্যেকে ‘মঞ্চে নিজস্ব অনন্য প্রতিভা’ নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। তাদের জন্য বেঁচে থাকার উদ্দীপনাই আমাকে ফিরিয়ে এনেছিল।”

সেলিব্রেশন ট্যুরের শুরুর কথা ছিল গত বছর জুলাইয়ের ১৫ তারিখে। কিন্তু তার ঠিক মাস খানেক আগেই ১৪ জুন ম্যাডোনা অসুস্থ হয়ে পড়েন।  তখন ম্যাডোনার বন্ধু এবং দীর্ঘদিনের ম্যানেজার গাই ও’সিয়ারি জানান, ‘গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ’ হওয়ার পরে এই গায়িকা আইসিইউতে ছিলেন।

এই পপ আইকন কয়েকদিন পরে হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন।

যদিও তার অসুস্থতার ধরন কী তা নিয়ে ম্যাডোনা কিংবা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তখন সেভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জটিল রোগী পরিচর্যা কেন্দ্রের চিকিৎক ড. এলিসন ফক্স-রবিচাদ তখন দাবি করেছিলেন, ম্যাডোনা ‘সেপসিস’ এ আক্রান্ত।

মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যাকটেরিয়া যখন বেড়ে যায় এবং রক্ষার বদলে মানুষেরই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রমণ করে অকেজো দেয়- সেই অবস্থাকে ‘সেপসিস’ বলে।

‘সেপসিস’ সংক্রমণ হতে পারে মূত্রনালী, পাকস্থলিতে, ফুসফুসে সহ নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। তারপর পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। সেপসিসে আক্রান্ত প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনই মারা যান।

ড. এলিসন ফক্স-রবিচাদ বলছেন, সেপসিসে আক্রান্ত রোগীরা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পরের পাঁচ বছরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি থাকেন এবং যেকোনও মুহূর্তে মারা যেতে পারেন।

২০২৩ সালের জুন থেকে কনসার্ট শুরু করার লক্ষ্যে রিহার্সেল শুরু হয় এপ্রিলে। কিন্তু ম্যাডোনা অসুস্থ পড়েন। এদিকে এই গায়িকার প্রথম অ্যালবাম বের হওয়ার চার দশক পূর্তিকে সামনে রেখে আয়োজিত সেলিব্রেশন ট্যুরে তার সন্তানদেরও পারফর্মেন্সের পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। সে অনুযায়ী রিহার্সেলও করছিল তারা। 

সুস্থ হয়ে দুই মাস পর ম্যাডোনা অক্টোবরে লন্ডনে তার সেলিব্রেশন কনসার্ট শুরু করতে পারেন।

গত ডিসেম্বরের ট্যুরে ম্যাডোনা তার ভক্তদের জানিয়েছিলেন, তিনি প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি  কোমায় চলে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে তার সন্তানদের কথা চিন্তা করে ফিরে আসতে পেরেছেন।    

কনসার্টগুলোয় ম্যাডোনার কন্যা ১৮ বছর বয়সী মার্সি জেমস পিয়ানো বাজিয়ে ১৯৯২ সালের অ্যালবাম ইরোটিকায় ম্যাডোনার গান ব্যাড গার্ল পরিবেশন করেন। এই শো-গুলোতে ম্যাডোনার আরেক ১৮ বছর বয়সী সন্তান ডেভিড যখন গিটার বাজান, তখন তারই ১১ বছর বয়সী দুই জমজ ভাই-বোন স্টেলা এবং এস্টার মঞ্চে নাচে এবং গানের মডেলের ভূমিকা নেয়।   

এর আগে ২০১৯ সালে ম্যাডোনার ‘ম্যাডাম এক্স’ সফরে তার বড় মেয়ে লর্ডেস লিওন ও পরিচালক গাই রিচির সঙ্গে ম্যাডোনার সন্তান রোকো রিচিও পারফর্ম করেছিলেন।

বৃহস্পতিবারের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ম্যাডোনা আরও লিখেছেন, তিনি অসুস্থ হওয়ার পরও তার সন্তানরা কখনই অনুশীলন বন্ধ করেনি। তারা কখনওই তাকে উৎসাহিত এবং সমর্থন করা বন্ধ করেনি।

গ্ল্যামার গায়িকা ম্যাডোনা লিখেন, রিহার্সেলের ভেতরও বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছিল এবং এর কারণে তিনি গর্বিত।

ম্যাডোনা তার পোস্টের শেষে লিখেছেন, “যদি তারা সবাই পরবর্তী জীবনে ভিন্ন কিছুও বেছে নেয়, তবুও তারা এ বছরের রক্ত, ঘাম ও অশ্রুর কথা ভুলবে না নিশ্চয়ই। আমিও ভুলবো না।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত