প্রথম ধাপে নতুন করে ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে মালয়েশিয়ার ভিসা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
তিনি বলেন, এসব শ্রমিককে ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি মনোনিবেশ করবেন।
শুক্রবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমরা পুরো ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি এবং অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলছি। আমাদের শ্রমিক দরকার, কিন্তু তাদের আধুনিক দাস হিসেবে গণ্য করা যাবে না, সেটা বাংলাদেশ বা অন্য কোনও দেশের শ্রমিকই হোক না কেন।”
আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশকে মালয়েশিয়ার বা মালয়েশিয়ায় বিদেশি যে কারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সতর্ক থাকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
ড. ইউনূস ‘চার দশকেরও বেশি সময় ধরে একে অপরের পরিচিত’ উল্লেখ করে বলেন, ঢাকায় তার পুরনো বন্ধুকে স্বাগত জানাতে পেরে তিনি ‘খুবই খুশি’ হয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর শিক্ষকদের সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।
বাসস জানিয়েছে, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তারা রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের তিনটি মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এতে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনশক্তি রপ্তানি, উচ্চশিক্ষা সহযোগিতা, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
এছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আসিয়ানে ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে উত্থাপিত হয়। মালয়েশিয়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আসিয়ানের পরবর্তী চেয়ার হতে যাচ্ছে।
ড. ইউনূস জানান, তাদের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ‘ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ এবং বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলোর সমস্যা দ্রুততার সঙ্গে সমাধানের ওপর জোর দেন।
আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, তারা দুর্নীতি, শাসনব্যবস্থা ও মৌলিক অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর ব্যাপারে আপস করেন না।
তিনি আরো বলেন, যত দ্রুত সম্ভব যৌথ কমিশনের বৈঠক হতে পারে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার কোনও প্রধানমন্ত্রীর এটি প্রথম বাংলাদেশ সফর।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে তার সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা ছেড়ে যান।