Beta
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

অবিশ্বাস্য রিয়াল মাদ্রিদে হৃদয় ভাঙল ম্যান সিটির

real madrid-8
[publishpress_authors_box]

একবার নয়, দু-দুবার পিছিয়ে পড়া। তাও আবার প্রতিপক্ষের মাঠে। কোন প্রতিপক্ষ? ম্যানচেস্টার সিটি, যাদের মাঠে কখনও জেতার রেকর্ড নেই। অতীত ইতিহাস কিংবা বর্তমান পরিস্থিতি- কোনোটাই পক্ষে যাচ্ছিল না। কিন্তু দলটা তো রিয়াল মাদ্রিদ এবং মঞ্চটা যখন চ্যাম্পিয়নস লিগের তখন আগে থেকে কোনও সিদ্ধান্তে যাওয়া বোকামি। মাদ্রিদের অভিজাতরা সেটাই প্রমাণ করল। অবিশ্বাস্য ফুটবলে ম্যান সিটির হৃদয় ভেঙে শেষ ষোলোতে দিয়ে রাখল এক পা।

চ্যাম্পিয়নস লিগ নকআউট পর্বে প্লে অফের প্রথম লেগে ম্যান সিটিকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। দুই দফা পিছিয়ে পড়েও ইনজুরি টাইমের নাটকীয়তায় ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল লস ব্লাঙ্কোস। ইনজুরি টাইমে তাদের জয়ের নায়ক জুড বেলিংহাম। এই ইংলিশ মিডফিল্ডারের গোলটাই দ্বিতীয় লেগের আগে সুবিধাজনক জায়গায় রাখল রিয়ালকে। কারণ ফিরতি লেগ খেলবে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে।

দুই লেগের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে ড্র করে আসতে পারাও কখনও কখনও জয়ের সমান। ম্যান সিটির মাঠে যেহেতু কখনও জয়ের রেকর্ড ছিল না, সেই হিসাবে রিয়ালের জন্য ড্র-ও হতে পারতো বিশাল অর্জন। কিন্তু বেলিংহাম গোল করে রিয়ালকে শুধু এগিয়েই রাখলেন না, ম্যান সিটিকে একরকম বিদায়ের বিষাদ রাগিনীও শুনিয়ে দিলেন।

এবারের মৌসুমে ম্যান সিটির বাজে সময় যাচ্ছে। এরপরও চ্যাম্পিয়নস লিগের প্লে অফে তাদের ভীষণ সমীহ করেছিলেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়ের কারণে ইতালিয়ান কোচ এই ম্যাচকে ‘ক্লাসিকো’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তির বলা কথাটা মাঠের ফুটবলেও দেখা মিলল। ক্লাসিকোর উত্তাপ-উত্তেজনা সবই ছিল। ম্যান সিটির বিপক্ষে রিয়ালের হয়েছে হাড্ডিহাড্ডি লড়াই। কোনোমতে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউটের প্লে অফ নিশ্চিত করা সিটিজেনরা দুর্দান্ত ফুটবলে কাঁপিয়ে দেয় রিয়ালের রক্ষণ। প্রথম গোলটাও তাদের। ১৯তম মিনিটে আর্লিং হলান্ডের গোলে এগিয়ে যায় পেপ গার্দিওলার দল। ইয়োস্কো গার্দিওলের বুক দিয়ে নামিয়ে দেওয়া বল ছোটবক্সের সামনে থেকে জালে জড়ান নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।

প্রথমার্ধেই গোলশোধের বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছে রিয়াল। কিন্তু ভিনিসিয়ুসের শট বার কাঁপিয়ে ফিরে এলে, গোলকিপার এদেরসন চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়ালে সমতায় ফেরা হয়নি সফরকারীদের। ফলে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে রিয়াল।

বিরতি থেকে ঘুরে এসে আবারও সুযোগ তৈরি, আবারও এদেরসনের দারুণ সেভ। তবে ৬০ মিনিটে আর রক্ষা হয়নি। কিলিয়ান এমবাপ্পের লক্ষ্যভেদে খেলায় ফেরে রিয়াল। বক্সের খানিকটা বাইরে থেকে ফেদে ভালভার্দের নেওয়া ফ্রি কিক প্রতিহত হয়ে ফিরে এলে পেয়ে যান দানি সেবায়োসে। তার ভাসিয়ে দেওয়া বল এমবাপ্পের পায়ের ওপরের দিকের অংশে লেগে জড়িয়ে যায় জালে।

এই সেবায়োসের ভুলের খেসারত ৮০ মিনিটে দিতে হয়েছে রিয়ালকে। নিজেদের বক্সের সামান্য একটু ভেতরে তিনি ফাউল করে বসেন ফিল ফডেনকে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে ঠাণ্ডা মাথায় স্পট কিক থেকে গোলে করে আবার সিটিকে এগিয়ে নেন হলান্ড। ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে ওঠে আনন্দের ঢেউ। তবে সেটা থেমে যেতে সময় লাগেনি। ৬ মিনিট পরই ব্রাহিম দিয়াস তার সাবেক ক্লাবের জালে বল জড়ালে ম্যাচে দ্বিতীয়বার সমতা ফেরায় রিয়াল।

রিয়ালের গোল উৎসব তখনও থামেনি। ইনজুরি টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে বেলিংহামের লক্ষ্যভেদে দুর্দান্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। ম্যান সিটির নড়বড়ে রক্ষণভাগ শেষে গিয়েও ভুল করলে বল পেয়ে যান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। আগুয়ান গোলকিপারের ওপর দিয়ে চিপ করেছিলেন তিনি। তবে বল লক্ষ্যে ছিল না। ততক্ষণে বলের কাছাকাছি পৌঁছে জালে ঠেলে দিয়ে বিজয় উল্লাসে মাতেন বেলিংহাম।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত