ইন্দোনেশিয়া থেকে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৭০ হাজার টন কয়লা নিয়ে বুধবার সকালে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছেছে। ফলে এক মাস বন্ধ থাকার পর ১ ডিসেম্বর থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে আবারও উৎপাদন শুরুর আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, বুধবার সকালে আসা কয়লাবোঝাই জাহাজ থেকে কয়লা খালাস শুরু হয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা এটিই কয়লার প্রথম চালান।
তিনি জানান, কয়লার জোগান আসায় রবিবার থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে যাবে।
এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গত ৩১ অক্টোবর দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচালন) মনোয়ার হোসেন মজুমদার তখন জানিয়েছিলেন, জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনার চুক্তি হয়েছিল। জাপানি ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি গত আগস্টে শেষ হয়েছে।
৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাইয়ে উৎপাদনে আসে। ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার অপর ইউনিটটি গত ডিসেম্বরে চালু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, সুমিতমোর সরবরাহ করা কয়লা শেষ হওয়ার আগেই নিয়ম অনুযায়ী কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির দরপত্র আহ্বানের কথা থাকলেও শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে কয়লা ক্রয় আটকে যায়।
জানা যায়, তিন বছরে কয়লা সরবরাহের জন্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছিল। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ তুলে কনসোর্টিয়াম অব বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় গত জুলাইয়ে। ফলে কয়লা আমদানিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
সব প্রক্রিয়া শেষ করে কয়লা আমদানিতে এ মাস পর্যন্ত সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা আশা করছেন, কয়লা চলে আসায় আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শরু করে তা জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব হবে।