প্রবীণ সাংবাদিক কামাল আহমেদকে প্রধান করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন করেছে সরকার।
বাসস জানিয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রবিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরীন, দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সচিব আখতার হোসেন খান, টেলিভিশন মালিক সমিতির প্রতিনিধি, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রডকাস্ট জার্নালিজম সেন্টারের ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ, সাংবাদিক ও মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক জিমি আমির, ডেইলি স্টারের বগুড়া প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের উপ-সম্পাদক টিটু দত্ত গুপ্ত এবং ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন।
কমিশন শিগগিরই তাদের কাজ শুরু করবে এবং সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নেওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদমর্যাদা ও বেতন পাবেন এবং সুবিধাদি ভোগ করবেন। তবে, তাদের কেউ যদি সুবিধা না নিয়ে স্বেচ্ছায় কাজ করতে চান, তবে তাকে অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
আরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক একে আজাদ খানকে প্রধান করে ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে।
এ কমিশনের সদস্যরা হলেন-
- অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিক অধিদপ্তর, বিএসএমএমইউ
- অধ্যাপক লিয়াকত আলী, চেয়ারম্যান, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশন
- অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার, গাইনোকলজিস্ট
- অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, শিশু স্নায়ুতন্ত্র বিভাগ
- এস এম রেজা, সাবেক সচিব
- অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
- ডা. আজহারুল ইসলাম, আইসিডিডিআর, বি
- অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, স্কয়ার ক্যান্সার সেন্টার, স্কয়ার হাসপাতাল,
- অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, চিফ কনসালটেন্ট, গ্রিন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেউয়ার অ্যান্ড রিসার্চ
- ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান, বিজ্ঞানী, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য বিভাগ, আইসিডিডিআর, বি
- উমারয়ের আফিফ, ৫ম বর্ষ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।
শ্রম সংস্কার কমিশন
বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের শ্রম সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
এ কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন-
- ড. মাহফুজুল হক, সাবেক সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
- ড. জাকির হোসেন, অধ্যাপক, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- তপন দত্ত, সভাপতি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, টিইউসি
- অ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম, সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ লেবার কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন
- ম. কামরান টি রহমান, সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন
- চৌধুরী আশিকুল আলম, সভাপতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ
- সাকিল আখতার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন
- তাসলিমা আখতার, আলোকচিত্রী ও শ্রমিক আন্দোলন সংগঠক
- শিক্ষার্থী প্রতিনিধি
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর তোফায়েল আহমেদকে প্রধান করে আট সদস্যের স্থানীয় সংস্কার কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ কমিশনের সদস্যরা হলেন-
- অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা, ওসমান, সাবেক চেয়ারম্যান, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- এ এম এম নাসির উদ্দিন, সাবেক সচিব
- অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট
- ড. মাহফুজ কবির, পরিচালক, বিআইএসএস
- মাসুদা খাতুন শেফালী, নির্বাহী পরিচালক, নারী উদ্যোগ কেন্দ্র
- প্রফেসর ড. মো. তারিকুল ইসলাম, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
- শিক্ষার্থী প্রতিনিধি
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন
১০ সদস্যের নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভিন হককে।
এ কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন-
- মাহীন সুলতান, সিনিয়র ফেলো, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট
- সারা হোসেন, অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট
- ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি
- কল্পনা আক্তার, সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন
- হালিদা হানুম আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
- সুমাইয়া ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র
- নিরুপা দেওয়ান, সাবেক সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
- ফেরদৌসী সুলতানা, সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক
- নিশিতা জামান নিহা, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারে প্রথমে ছয়টি কমিশন গঠন করে। এগুলো হচ্ছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন। পরে স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার, নারী বিষয়ক ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয় সরকার।
সোমবারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কমিশন অবিলম্বে এর কার্যক্রম শুরু করবে এবং সংশ্লিষ্ট সব মতামত বিবেচনা করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।
কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সরকারি পদমর্যাদা, বেতন বা সম্মানি ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন; তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন প্রধান বা কোনও সদস্য অবৈতনিক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে চাইলে বা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে না চাইলে তা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন করতে পারবেন।
প্রজাতন্ত্রের সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যক্তিকে কমিশনের সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এসব কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিশনের কার্যালয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে।