সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার পর গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষক রায়হান শরীফকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, “ডা. মো. রায়হান শরীফ (২১৩৮৯২), প্রভাষক (কমিউনিটি মেডিসিন), শহীদ এম, মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জ-কে ফৌজদারি অপরাধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।”
সাময়িক বরখাস্ত থাকা অবস্থায় শিক্ষক রায়হান শরীফ বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্ত হবেন উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সোমবার এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার পর গ্রেপ্তার হয়ে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন রায়হান। তারা বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।
রায়হান সিরাজগঞ্জ সদরের কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক তিনি।
রায়হান আগে থেকে একটি পিস্তল বহন করতেন বলে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। তিনি ওই অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখাতেন বলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
গত সোমবার বিকালে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ গিয়ে অস্ত্রসহ তাকে থানা নিয়ে আসে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম মঙ্গলবার জানান, ডা. রায়হান শরীফের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি অবৈধ। অবৈধ পিস্তল ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেছে পুলিশ।
রায়হানের কাছ থেকে একাধিক গুলি ও ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের প্রতি তার ঝোঁক রয়েছে বলে জানান এক পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে আহত শিক্ষার্থী আরাফাতের বাবা আবদুল্লাহ আল আমিন শিক্ষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা করেছেন বলে ওসি জানান। দুটি মামলাই হয় সোমবার রাতে।
আরাফাতের বাবা করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রায়হান শরীফ সব সময় ব্যাগে অস্ত্র ও ছোরা নিয়ে ক্লাসে এসে অস্ত্র টেবিলের ওপর রেখে পড়াতেন। শিক্ষার্থীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্লাসে না আসতে বললে তিনি তাদের ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
সোমবার একটি পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের বকাবকি করার এক পর্যায়ে ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে রায়হান শিক্ষার্থী আরাফাতকে গুলি করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।