Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

জ্যেষ্ঠতম আমলা মতিউল ইসলামের স্মৃতিকথন-২

মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম

জীবিত বিশিষ্ট আমলাদের মধ্যে সর্বাধিক বয়োজ্যেষ্ঠ নিঃসন্দেহে মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অর্থ সচিব। তার জন্ম ১৯৩০ সালে, ১৯৪৬-এ কোলকাতা থেকে ম্যাট্রিকুলেশন; তিনি চেয়েছিলেন দাঁতের ডাক্তার হতে কিন্তু তার সার্কেল অফিসার বাবার চাওয়া ভিন্ন— তাকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হতে হবে। ভর্তি হলেন কমার্স কলেজে, কিন্তু ১৯৪৭-এর ভারত ভাগ, কলেজটাকেও ভাগ করল, একাংশ এসে সৃষ্টি হলো চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ। চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হতে পড়াশোনা ও আর্টিকেলশিপ শুরু করলেন। এর মধ্যে বড় ভাই নুরুল ইসলাম ১৯৫০ সালে সিএসপি হলেন (বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে অবসর নেন); সেই প্রেরণাতে মতিউল ইসলাম প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসলেন এবং ১৯৫২ সালে সিএসপিতে উত্তীর্ণ হয়ে কর্মজীবন শুরু করলেন। ইংরেজিতে লিখিত তার স্মৃতিকথা ‘রিকালেকশনস অব অ্যা সিভিল সার্ভেন্ট টার্নড ব্যাংকার’-এর তিনটি অধ্যায় অনূদিত হলো।

(প্রথম পর্বের পর)

(১৯৬১-১৯৬২)
১৯৬১ সালে আমাকে জেলা প্রশাসক হিসেবে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়, ততোদিনে গভর্নর জাকির হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন জেনারেল আজম খান। প্রেসিডেন্ট জাকির হোসেনকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেন। কোনো বড় প্রকল্প হাতে নেবার প্রশ্নে আমার এক বছর চট্টগ্রামে অবস্থান খুব সল্প সময়। কক্সবাজারকে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করতে আমি সাদেক খানকে দায়িত্ব দিই, তিনি তখন চলচ্চিত্র প্রযোজনার সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবকে এক খণ্ড জমি দিতে ওয়াপদা’কে বাধ্য করি। প্রেসক্লাব নির্মাণের জন্য তহবিল যোগাড় করি, গর্ভনর জেনারেল আজম খান কেবল ভিত্তি প্রস্তুরই স্থাপন করেননি, নির্মাণ শেষে উদ্বোধনও করেন। রাষ্ট্রপ্রধানগণ এলে চট্টগ্রাম তাদের সফরসূচিতে রুটিনভুক্ত হয়ে পড়ত। মালয়েশিয়ার রাজা ও রানী, থাইল্যান্ডের রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজ এবং রানী সিরিকিট ১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম সফর করেন। প্রটোকলের কাজ আমার অনেকটা সময় নিয়ে নিতো, আমার স্ত্রী মিসেস ইসলাম আমার সাথে দায়িত্বটা শেয়ার করতেন।

প্রথম পর্ব: জ্যেষ্ঠতম আমলা মতিউল ইসলামের স্মৃতিকথন-১

জেনারেল আজম খান

আমি বার্মাতে (মায়ানমার) আমার প্রতিপক্ষ মঙ্গডুর ডেপুটি কশিনার মেজর টিন ইউ-র সাথে সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বর্ডার কনফারেন্স করতে যাই। মেজর টিন ইউ একজন চমৎকার ভদ্রলোক, কক্সবাজার থেকে আমাদের মঙ্গডু নিয়ে যাবার জন্য নৌবাহিনীর বোট পাঠালেন। প্রতিনিধিদের মধ্যে আর ছিলেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট এবং কক্সবাজারের এসডিও।

সে সময় পূর্ব পাকিস্তান চালের বড় ধরনের ঘাটতিতে ভুগছিল, সরকারের পক্ষ চোরাচালানির মাধ্যমে চাল আনাকে উৎসাহিত করা হচ্ছিল, বিনিময়ে যাবে কোহিনুর ক্যামিকেলসে উৎপাদিত নারীর প্রসাধন সামগ্রী। ফ্যাশনদুরস্ত বার্মিজ নারীদের কাছে এগুলোর অনেক চাহিদা। বার্মিজ নৌবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের দিকে আসা চালের নৌকা গুলোকে নিয়মিতই বাধা দিত, কোনো কোনো নৌকাতে সুপারির মতো বৈধ আমদানি দ্রব্য থাকলে সেগুলোও বাধার সম্মুখীন হতো। সীমান্ত সম্মেলনে আমরা বার্মিজ নৌবাহিনীর অপ্রয়োজনীয় হেনস্তার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নালিশ জানাতাম আর মেজর টিন ইউ-র ভঙ্গিটা ছিল বরাবরই ক্ষমা প্রার্থনার। কনফারেন্সের পর তিনি আমাদের বুথিডং নিয়ে গেলেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় জাপানি সেনাবাহিনীর সাথে এখানেই ব্রিটিশদের পূর্ব নির্ধারিত যুদ্ধ হয়। জাপানিদের অগ্রযাত্রা এখানেই আটকে যায়। এখানে সব ব্রিটিশ প্রাণ দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল গ্রেভস কমিশন তাদের কবর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে।

কক্সবাজারে ফেরার জন্য আমরা যখন নৌবাহিনীর বোটে উঠলাম মেজর টিন ইউ তাতে কয়েক বস্তা চাল উঠিয়ে দিলেন এবং হাসতে হাসতে বললেন, আমাদের জব্দ করা কিছু চাল ফিরিয়ে নিন।

আমার সময়ে আইয়ুব খান চট্টগ্রামে দুবার সফর করেছেন। একটি সফরের লক্ষ ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে কাপ্তাই বাধ উদ্বোধন করা। সে সময় আইযুব খান অত্যন্ত অজনপ্রিয় ছিলেন, চট্টগ্রামসহ সব শহরে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল চলছে। স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে একটি সাইফার বার্তা এলো তাতে বলা হয়ে চট্টগ্রাম সফরকালে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের জীবনের উপর হুমকি আসতে পারে, আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আমার সময়ে আইয়ুব খান চট্টগ্রামে দুবার সফর করেছেন। একটি সফরের লক্ষ ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে কাপ্তাই বাধ উদ্বোধন করা। সে সময় আইযুব খান অত্যন্ত অজনপ্রিয় ছিলেন, চট্টগ্রামসহ সব শহরে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল চলছে। স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে একটি সাইফার বার্তা এলো তাতে বলা হয়ে চট্টগ্রাম সফরকালে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের জীবনের উপর হুমকি আসতে পারে, আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের পরিবর্তিত পরিকল্পনা হচ্ছে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট থেকে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে সড়কপথে কাপ্তাই না এনে অ্যাম্ফিবিয়ান প্লেনে আনা হবে। রুট বদলানোর এই তথ্য কমিশনার এসপি ও আমার মধ্যেই সীমিত থাকলো, সড়ক পথের নিরাপত্তা আগের মতোই বহাল রাখা হলো।

প্রেসিডেন্টকে বিদায় জানানোর জন্য চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে কিছু সংখ্যক ভিআইপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, ফজলুল কাদের চৌধুরী অনুরোধ করলেন তাকেও যেনো আমন্ত্রণ জানাই এবং তাকে সামান্য সময়ের জন্য প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলার সুযোগ দিতে সম্মত হই। ১৯৬২-র সংবিধান অনুযায়ী সামরিক আইনে সাজাপ্রাপ্তদের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলে তাকে সম্মত করালেন যে একটি প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ জারি করিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রণের এই বাধাটি অপসারণ করবেন। আর তা প্রত্যাহার হতেই এফ কিউ চৌধুরী নির্বাচনে লড়াই করার যোগ্য হয়ে গেলেন। দুর্ভাগ্যবশত মন্ত্রী জাকির হোসেন এবং এফ কিউ চৌধুরী দু’জন একই নির্বাচনী এলাকার। যখন শুনলেন এফ কিউ চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন জাকির হোসেন দ্রুত নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলেন। নির্বাচিত হয়ে ফজলুল কাদের চৌধুরী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার হলেন। প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করলেন, আপনারা স্পিকার চেয়ে ছিলেন আমি দিয়েছি ‘লাউড স্পিকার’।

ফজলুল কাদের চৌধুরী আমার এই সহায়তা ও অবদানের কথা কখনো ভোলেননি যা তাকে স্পিকার করেছে এবং কখনো কখনো ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও প্রদান করেছে। চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই-এর সফরকালে তার সম্মানে আয়োজিত বাঙ্কোয়েটে আমি অন্যান্য ভিআইপিদের সাথে প্রধান অতিথির জন্য নির্ধারিত টেবিলে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। চৌধুরী সাহেব সেদিন প্রকাশ্যেই বলেছেন ইসলাম সাহেবের জন্য তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছেন।

(১৯৬২-১৯৬৬)
১৯৬২ সালে আমি আমার মূল মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব হিসেবে ফিরে আসি, তখন ময়মসিংহের একজন অজানা আইনজীবী আবদুল মোনেম খান জেনারেল আজম খানের স্থলে গভর্নর হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। মোনেম খান আমার মধ্যে একজন স্বেচ্ছা-সহযোগী মিত্র পেয়ে গেলেন যিনি তার শিক্ষা ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থনৈতিক সমর্থন যোগাবেন। ১৯৬৩ সালে আমি ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের ৫০ মিলিয়ন ডলারের আইডিএ ঋণের জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাথে দর কষাকষি করতে ওয়াশিংটন যাবার জন্য ৩ সদস্যের দলে অন্তর্ভূক্ত হলাম। এটাই ছিল পাকিস্তানের জন্য প্রথম আইডিএ ঋণ, তিন সপ্তাহ ধরে দর কষাকষি চললেও কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছিল না। বিশ্ব ব্যাঙ্ক ওয়াসপার চেয়ারম্যান নিয়োগ অনুমোদন নিয়ে অনমনীয় ছিল, আমরাও তা প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করেছি। তবে আমাদের প্রত্যাবর্তনের পর আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছি। করাচির হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মালিক পাকিস্তান সার্ভিসেস লিমিটেড পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল নির্মাণের জন্য সরকারি জমি বরাদ্দ পেল, সে সময় আমি একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। রাজস্ব বিভাগের হিসেব করা জমির দাম ১৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে তারা যখন অপারগতা প্রকাশ করল, তবে তার বদলে কোম্পানির ১৩ লক্ষ টাকার সমমানের শেয়ার প্রদানের প্রস্তাব করল, আমি দ্রুত তাতে সম্মতি জানালাম এবং সে সাথে মূল কোম্পানিতে সরকারের একজন ডিরেক্টর নিয়োগ প্রদানের সুযোগ রাখার সম্মতিও আদায় করে নিলাম। আমার কাছে তখন জমি হস্তান্তরের নগদ টাকা আদায়ের আর্থিক বিধির অনুগত থাকার চেয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য একটি পাঁচ তারকা হোটেল প্রকল্পই ছিল অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কোনো প্রাইভেট কোম্পানির শেয়ার গ্রহণের জন্য সরকারি সম্পত্তি হস্তান্তরের কোনো আইনি সুযোগ ছিল না।

করাচির হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মালিক পাকিস্তান সার্ভিসেস লিমিটেড পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল নির্মাণের জন্য সরকারি জমি বরাদ্দ পেল, সে সময় আমি একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। রাজস্ব বিভাগের হিসেব করা জমির দাম ১৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে তারা যখন অপারগতা প্রকাশ করল, তবে তার বদলে কোম্পানির ১৩ লক্ষ টাকার সমমানের শেয়ার প্রদানের প্রস্তাব করল, আমি দ্রুত তাতে সম্মতি জানালাম এবং সে সাথে মূল কোম্পানিতে সরকারের একজন ডিরেক্টর নিয়োগ প্রদানের সুযোগ রাখার সম্মতিও আদায় করে নিলাম।

বৈষম্য মোচনের একটি উদ্যোগ হিসেবে হাউস বিল্ডিং ফিনান্স কর্পোরেশনের সদর দফতর করাচি থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়। আমি তাতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচালক নিযুক্ত হই। আর এর চেয়ারম্যান ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম চিফ সেক্রেটারি আজিজ আহমেদের ভাই। প্রথম বৈঠকেই আমার প্রস্তাব ছিল যতোদিন না বৈষম্য অপসারিত হয় হাউস বিল্ডিং ফিনান্স কর্পোরেশনের সম্পদ থেকে প্রদত্ত ঋণের ৭৫ ভাগ পাবে পূর্ব পাকিস্তান এবং ২৫ ভাগ পাবে পশ্চিম পাকিস্তান। আমার প্রস্তাবে বোমা বিস্ফোরণ ঘটলেও শেষ পর্যন্ত বোর্ড প্রস্তাবটি অনুমোদন করল।

আবদুল মোনেম খান

১৯৬৩ সালে অর্থমন্ত্রী মোহম্মদ শোয়েবকে চেয়ারম্যান করে ন্যাশনাল ফিনান্স কমিশন গঠন করা হলো, লক্ষ্য পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজমান বৈষম্যের পরিমাপ করা এবং বৈষম্য হ্রাস করতে পদক্ষেপ সমূহের সুপারিশ প্রণয়ন করা। পূর্ব পাকিস্তান থেকে কমিশনের সদস্য হলেন ড. নুরুল হুদা, ড. নুরুল ইসলাম এবং জনাব রশিদ। অর্থমন্ত্রী মুহাম্দ শোয়েব আমাকে কশিনের সেক্রেটারি হিসেবে পেতে চাইলেন। কিন্তু গভর্নর মোনেম খান আমাকে দিতে সম্মত হলেন না। তার জন্য আমি ছিলাম অপরিহার্য একজন। শোয়েব ও একরোখা একটি অবস্থান নিলেন, পূর্ব পাকিস্তান থেকে হয় আমাকে দিতে হবে নতুবা কাউকেও নয়। দুই চূড়ান্ত অভিমতের মধ্যে একটি সমঝোতা করে আমি একই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কাজ করেছি আবার ভিন্ন অফিস ও স্টাফ নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে ন্যাশনাল ফিনান্স কমিশনের সেক্রেটারি হিসেবে কাজ চালিয়ে গেছি। আমাকে অবিরাম দুই রাজধানীর আসা যাওয়া করতে হয়েছে এবং দুই বসকেই সন্তুষ্ট রাখতে হয়েছে। এ জন্য আমার বেতন-ভাতাদিও প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় দুই সরকারকে ভাগাভাগি করে দিতে হয়েছে। এ ধরণের ব্যবস্থা সম্ভবত এই একটি মাত্র ক্ষেত্রেই ঘটেছে।

বৈষম্য হ্রাস নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন করাচিতে সাক্ষর হয়েছে আর আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাওয়ালপিন্ডি গিয়ে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের কাছে তা দাখিল করতে হবে। আমি যখন রিপোর্টটি প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের কাছে হস্তান্তর করি তার প্রশ্ন ছিল সুপারিশ মালার কোনো সারাংশ কি আছে যা তিনি পড়তে পারেন। দুর্ভাগ্যবশতঃ তা ছিল না, রিপোর্টটিং ছিল খুব সংক্ষিপ্ত।

ন্যাশনাল ফিনান্স কমিশনে আমার কার্যকাল শেষ হবার পর আমাকে ওয়াশিংটনে ইকনমিক কাউন্সিলর পদে নিয়োগের আদেশ দেওয়া হলো, কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাকে কাউন্সিলরের মর্যাদা দিতে আপত্তি করায় পদটি গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

(১৯৬৬-১৯৬৭)
১৯৬৬ সালে প্রাদেশিক অর্থসচিবকে রাজশাহী বিভাগের কমিশনার হিসেবে বদলি করা হলে সচিবের পদটি শূন্য হয়ে গেল। আমাকে বিষ্মিত করে অপর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে চাকরির কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই অর্থসচিব নিযুক্ত হলেন। আমি চিফ সেক্রেটারিকে অনুরোধ করলাম আমাকে যেন কোনো লাইন মিনিষ্ট্রিতে বদলি করে দেওয়া হয় কিন্তু সে অনুরোধ তিনি প্রত্যাখ্যান করলেন। আমাকে কোনো লাইন মিনিষ্ট্রিতে পদায়ন করার বিষয়টি বিবেচনার আগে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হলো আমাকেই অর্থসচিবকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পরবর্তী ৩ মাস আমি তাকে প্রশিক্ষণ দিলাম বিশেষ করে কিভাবে এম এম আহমেদ, গোলাম ইসহাক খান প্রমুখের মতো সিনিয়র সেক্রেটারিদের সামাল দেবেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৬৬ সালে আমি শিক্ষা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেলাম।

শিক্ষা সচিব হিসেবে আমার কর্মকাল সংক্ষিপ্ত তবুও এটা ছিল খুব ফলপ্রসু এবং কৌতুললোদ্দীপক। এসময় মোনেম খান ছিলেন গভর্নর, অপর একটি নিবন্ধে তার নেওয়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। একই সময় নতুন শিক্ষা নীতি আলোচিত ও বাস্তবায়িত হতে শুরু করে— এতে আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর দুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অগ্রগামী ভূমিকা নিই, শিক্ষা খাতের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পও এগিয়ে নিয়ে যাই। বিশ্ব ব্যাঙ্ক প্রযুক্তিগত শিক্ষা প্রসারের জন্য আইডিএ ক্রেডিট প্যাকেজ প্রদানের বিষয় বিবেচনা করছিল, ঋণ নিয়ে দর কষাকষি করতে আমার ওয়াশিংটন যাবার কথা। কিন্তু প্রস্তাবটি আমাকে প্রত্যাখ্যান করতে হলো কারণ আমার দীর্ঘ অনুপস্থিতি নতুন শিক্ষানীতি এবং উন্নয়ন কাজের বাস্তবায়নের গতি মন্থর হয়ে যাবে। আমার অনুরোধে আমার পূর্বসুরীকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবার জন্য নির্বাচিত করা হলো। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ইউনাইটেড স্টেটস এডুকেশনাল ফাউন্ডেশন প্রদত্ত বৃত্তির প্রশ্নে যে বৈষম্য বিরাজমান আমি সে প্রশ্নের সাথেও জড়িত হয়ে পড়লাম।

উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশগমণের জন্য প্রার্থী নির্বাচন কমিটিতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে থাকেন শিক্ষা সচিব ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর। পূর্ব পাকিস্তানি প্রার্থীদের বৈধ হিস্যা উপেক্ষা করে অধিংকাংশ বৃত্তি পশ্চিম পাকিস্তানি প্রার্থীদের প্রদান করার এতোদিনকার যে চর্চা, আমি কঠোরভাবে তার বিরোধিতা করি। বৃত্তি প্রদানের প্রশ্নে সাম্যের নীতি মেনে চলার প্রস্তাব আমি করি এবং বিষয়টি ইসলামাবাদে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসকে জ্ঞাত করানো হয়। ইসলামাবাদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এডুকেশনাল অ্যাটাশে আমার সাথে দেখা করতে আসেন এবং পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষোভ প্রশমনের আশ্বাস দেন।

শিক্ষা সচিব হিসেবে আমার কর্মকাল সংক্ষিপ্ত তবুও এটা ছিল খুব ফলপ্রসু এবং কৌতুললোদ্দীপক। এসময় মোনেম খান ছিলেন গভর্নর, অপর একটি নিবন্ধে তার নেওয়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। একই সময় নতুন শিক্ষা নীতি আলোচিত ও বাস্তবায়িত হতে শুরু করে— এতে আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর দুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অগ্রগামী ভূমিকা নিই, শিক্ষা খাতের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পও এগিয়ে নিয়ে যাই।

কেন্দ্রীয় শিক্ষা সচিব কুদরতউল্লাহ শাহাব অত্যন্ত জ্যেষ্ঠ একজন আইসিএস অফিসার, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রে ও জাপানে গিয়ে আমার পছন্দের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় দেখে আসার জন্য ফোর্ড ফউন্ডেশনের একটি বৃত্তি যোগাড় করে দেন। আমি ফিরে এসে কিছু কিছু নীতিমালা এবং তাদের কিছু চর্চা পূর্ব পাকিস্তানে প্রয়োগ করবো এই প্রত্যাশা। আমি অনেক নতুন ধারণা নিয়ে ফিরে এলাম কিন্তু আমার ট্যুর-নোট লেখার সময়ও দেওয়া হলো না। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী জানালেন যে আমাকে বাণিজ্য ও শিল্প বিভাগের সচিব করা হয়েছে। আমি আমার বড় ভাই নুরুল ইসলামের স্থলভিষিক্ত হবো, তাকে রাওয়ালপিন্ডিতে চিফ কন্ট্রোলার ইমপোর্ট ও এক্সপোর্ট পদে বদলি করা হয়েছে।

(১৯৬৭-১৯৬৯)
বাণিজ্য ও শিল্প সচিব হিসেবে বিশাল এক রাজত্বের উত্তরাধিকারী হয়েছি। ইপিআইডিসি ডিরেক্টর অব সাপ্লাই অ্যান্ড ইন্সপেকশন, ফিল্ম ডেভেলাপমেন্ট কর্পোরেশন এবং ফরেস্ট ডেভেলামেন্ট কর্পোরেশনের প্রশাসনিক মন্ত্রণালায় বাণিজ্য ও শিল্প। আমি এফডিসির চেয়ারম্যান একই সঙ্গে ফিল্ম সেন্সর বোর্ডেরও চেয়ারম্যান। এফডিসির প্রজেকশন রুমে সেন্সরের সার্টিফিকেটের জন্য দাখিল করা সিনেমাগুলো প্রদর্শিত হতো। আমি কখনো যত্রতত্র সেন্সরের কাচি চালাইনি বরং কোনো দৃশ্য আঘাত করার মতো বিবেচিত হলে খান আতাউর রহমানের মতো প্রযোজক ও পরিচালকদের সুযোগ দিয়েছি যেন সবচেয়ে কম ব্যয়ে তার পুনঃচিত্রায়ন করে নিতে পারেন। আমি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল চেইনের মালিক পাকিস্তান সার্ভিসেস লিমিটেড এর পরিচালক মনোনীত হই। সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের জন্য সিমেন্ট ও কয়লা আমদানির দায়িত্বও আমার বিভাগের। এসব  জটিল কাজগুলোর সমাধানে আমি নিজেই অংশ গ্রহণ করতাম, করাচি থেকে যাতে যথারীতি নিয়মিত শিপমেন্ট হয় তা নিশ্চিত করতে আমাকে প্রায় পশ্চিম পাকিস্তান সফর করতে হতো।

১৯৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাকে আইসেনহাওয়ার ফেলেশিপ প্রদান করে। এই সুযোগটি নিতে আমি যেমন আগ্রহী ছিলাম না তেমনি পূর্ব পাকিস্তান সরকারও আমাকে অব্যহতি দিতে রাজি ছিল না। পরে ১৯৫০ ব্যাচের সিএসপি আবুল খায়েরকে আমার জায়গায় নির্বাচিত করা হয়। ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত একদিন আমাকে ফোনে জানালেন পাকিস্তান ব্রাজিল বাণিজ্য সম্পর্ক ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে এখানকার যে প্রতিনিধিদল ব্রাজিল যাবে তাতে আমাকেও তারা আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। আমি সবিনয়ে তা প্রত্যাখান করে আমার জয়েন্ট সেক্রেটারি কাজী ফজলুর রহমানকে প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্ত করলাম।

পূর্ব পাকিস্তানের জন্য শিল্প উৎপাদনের কাঁচামাল এবং নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের আমদানি জন্য বিদেশি মুদ্রার উচ্চতর বরাদ্দের দরকষাকষি আমার বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রতি ছ’মাস অন্তর পাকিস্তান সরকার আমদানি নীতি নিয়ে আলোচনা করত এবং নতুন আমদানি নীতি প্রণয়ন করত। পূর্ব পাকিস্তানকে যাতে যথাযথ বরাদ্দ প্রদান করা হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমি সবগুলো সভায় যোগ দিতাম। ব্যক্তিখাতে নতুন কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের জন্য ইউএস এআইডি ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ প্রদান করে। ১৯৬৭-৬৮ সালে উদ্বোধন করা কিছু প্লান্ট এখনো চালু আছে। স্ট্যার্লিং টি গার্ডেনস, শিপিং কোম্পানি, বহুজাতিক কোম্পানি সমূহের জ্যেষ্ঠ চুক্তিভিত্তিক পদসমূহের নিয়োগ বৈষম্য দূর করতে আমি কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজমেন্টকে পরামর্শ দিই তারা যেন তাদের নিয়োগ নীতিতে পরিবর্তন এনে পশ্চিম পাকিস্তানি প্রার্থীদের চেয়ে স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের অগ্রাধিকার প্রদান করেন।

মির্জা নুরুল হুদা

১৯৬৯ এর মার্চে জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক আইন জারি করেন, প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং দুজন গভর্নরকে বিদায় করে দেন। মোনেম খান তার আগেই পদত্যাগ করলে ডক্টর মির্জা নুরুল হুদাকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছিল ফলে কুঠারাঘাত পড়ে তার উপর। ডক্টর হুদা গভর্নরের পদ মাত্র ৪৮ ঘণ্টা ধরে রাখতে পেরেছিলেন। পাকিস্তান এয়ারফোর্সের প্রধান এয়ারমার্শাল নূর খানকে ডেপুটি মার্শাল অ্যাডমিনিষ্ট্রেটর নিয়োগ করা হয়েছিল। শ্রমিকদের জন্য নতুন মঞ্জুরি নীতিমালা প্রণয়ণের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে।

বাণিজ্য ও শিল্পের সচিব হিসেবে আমাকে পাট ও কাপড় কল শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য মঞ্জুরি কমিটির চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়েছিল। এ নিয়ে চূড়ান্ত সভাটি হবার কথা করাচিতে সেখানে পূর্ব পাকিস্তানের একজন প্রতিনিধি পাঠাবার কথা। সে সময় আমি শেখ মুজিবের ফোন পাই, তিনি অনুরোধ করলেন আওয়ামী লীগের শ্রমিক নেতা আবদুল মান্নানকে যেন প্রতিনিধি দলে রাখি, আমি তখনি তা করলাম। শিগগির নূর খানের সাথে আমার সম্পর্ক এতো ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠে যে ১৯৭৮ সৌদি আরবে একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে ফেরার সময় আমি করাচিতে অবতরণ করলাম, এবং নূর খানের সাথে সাক্ষাৎ করলাম, তিনি অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাকে গ্রহণ করলেন।

আমি পদাধিকারবলে আইডিবিপি (ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ডেভলাপমেন্ট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তান)-র পরিচালক ছিলাম, প্রথমে এর সদর দফতর ছিল করাচি কিন্তু বৈষম্য দূর করতে পরে তা ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। এ সময় ব্যাঙ্ক ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আইডিএ ঋণ বরাদ্দ লাভ করে যার ৭৫ ভাগ পূর্ব পাকিস্তানে শিল্প উন্নয়নে এবং ২৫ ভাগ পশ্চিম পাকিস্তানে শিল্প উন্নয়নে ব্যয় হবার কথা। দুর্ভাগ্যবশত রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণে এই ঋণ বরাদ্দ বাতিল হয়ে যায়।

ইসলামাবাদে অর্থমন্ত্রণালয়ে ইকনমিক অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনে (ইএডি) আমি যুগ্ম সচিব নিযুক্ত হই, আমি পশ্চিম পাকিস্তান গমণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমি ১৯৭০-এর আমদানি নীতি সংক্রান্ত শেষ বৈঠক যোগ দিতে যখন ইসলামাবাদ পৌঁছি, আমাকে এস্টাবলিশন্টে ডিভিশন থেকে একটি নোটিশ প্রদান করা হয় যে, আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং আমার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষা করতে হবে। পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে আমার ১৭ বছর চাকরি জীবনের এখানেই সমাপ্তি।

করাচির কমিশনার আমার সহকর্মী বেশ দেরিতে আমাকে জানান যে একজন মুসলিম লীগ নেতা এবং একজন সেনা ঠিকাদার আমি সম্ভবত যাদের প্রত্যাখ্যান করে থাকতে পারি তারা করাচির একটি পার্টিতে আমার সেই সহকর্মীর উপস্থিতিতে জানিয়েছেন রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদরে দুর্নীতিবাজ অফিসারদের তালিকায় আমার নাম যুক্ত হয়েছে। আমার তখন মনে হলো শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে একটি পুরোনো কয়লার ডিপো সরিয়ে সেখানে একটি নতুন তেলের ডিপোর জন্য বরাদ্দ প্রদান করতে তিনি হুমকি প্রদান করেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত এই কয়লার ডিপোর মালিক আমার ডেপুটি সেক্রেটারি নুরুল আমিনকে কয়লার ডিপো রাখার পক্ষে একটি বড় অঙ্কের ঘুষ সেধেছিলেন। ফলে তেলের ডিপোর জন্য বরাদ্দ দেওয়া ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না।

আমি চাকরি হারালাম কিন্তু নুরুল আমিন হারালো তার জীবন। সেনাবাহিনী তাকে তুলে নেয়। তার গাড়িটি রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

(সমাপ্ত)

অনুবাদক: কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক।
ইমেইল: [email protected]

আন্দালিব রাশদী।প্রতিকৃতি অঙ্কন: সব্যসাচী মজুমদার
ad

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত