Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনে নতুন নির্দেশনা

বাংলাদেশের প্রশাসন পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়।
বাংলাদেশের প্রশাসন পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়।
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসেছে নতুন নির্দেশনা; তাতে বলা হয়েছে- কী করা যাবে, কী করা যাবে না।

সরকারি অর্থে বিদেশ ভ্রমণ, বিদেশে কর্মশালা-সেমিনারে অংশগ্রহণ করা যাবে না। সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয়ও থাকবে বন্ধ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় বাদে অন্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকবে।

কোভিড মহামারি পর ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা অর্থনীতিতে লাগার পর দুই বছর আগে ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে কৃচ্ছ্রসাধনের নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। তবে ওই বছরের শেষ দিকে এসে ওই সব নির্দেশনা শিথিল করা হয়।

তবে গত মাসে চলতি অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের সময় কৃচ্ছসাধন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, “মূল্যস্ফীতি আমাদের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চাহিদার রাশ টেনে ধরা এবং সরবরাহ বৃদ্ধি করার দিকে আমরা বিগত দুটি বাজেটে সর্বাত্মক মনোযোগ নিবদ্ধ করেছিলাম। এ প্রেক্ষিতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক সুফল পাওয়ার জন্য সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণের পাশাপাশি সহায়ক রাজস্বনীতি, অর্থাৎ ব্যয় হ্রাস, কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় নিরুৎসাহিতকরণসহ বিভিন্ন কৃচ্ছসাধণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

“এতদসত্ত্বেও মূলত আমদানিজনিত মূল্যবৃদ্ধি এবং দেশের অভ্যন্তরে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটিজনিত কারণে দেশে মূল্যস্ফীতি অনমনীয়ভাবে ৯ শতাংশের উপরে অবস্থান করছে। সেকারণে আগামী অর্থবছরের বাজেটে আমরা ফিসক্যাল কনসোলিডেশন তথা বাজেট ঘাটতি হ্রাস এবং সীমিত কলেবরে হলেও কৃচ্ছসাধন অব্যাহত রাখব।”

বাজেটের ওই ঘোষণা বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার অর্থ বিভাগ থেকে কৃচ্ছ্রসাধনের পরিপত্র জারি হয়।

তাতে বলা হয়েছে, সরকারের নিজস্ব অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ, ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। তবে এ ধরনের ভ্রমণ অত্যাবশ্যকীয় হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে বিদেশে ভ্রমণ করা যাবে।

যেসব ক্ষেত্রে বিদেশভ্রমণ করা যাবে, সেগুলো হলো- পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের দেওয়া স্কলারশিপ বা ফেলোশিপের আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি কোর্সে অংশ নেওয়া।

বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠান কিংবা উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে এবং সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বৈদেশিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করা যাবে।

সেই সঙ্গে প্রিশিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) বা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপট্যান্স টেস্টের (এফএটি) আওতায় বিদেশভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির ২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে জারি করা পরিপত্র কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। একান্ত অপরিহার্য হলে পিএসআই বা এফএটির আওতায় বিদেশভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে কৃচ্ছ্রসাধনে আরও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন বাজেটের আওতায় বিভিন্ন অর্থনৈতিক কোড থেকে কত অর্থ ব্যয় করা যাবে, তার দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরিপত্রে।

তাতে বলা হয়েছে, সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। এছাড়া বিদ্যুৎ, পেট্রল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।

পরিচালন বাজেটের আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়–সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ছাড়া নতুন আবাসিক, অনাবাসিক বা অন্যান্য ভবন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকবে। চলমান নির্মাণকাজ ন্যূনতম ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে থাকলে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।

পরিপত্রে বলা হয়, সব ধরনের যানবাহন কেনা (মোটরযান, জলযান, আকাশযান) খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো ‘টিওঅ্যান্ডই’ভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।

ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে বলে পরিপত্রে জানানো হয়েছে।

এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের অনুকূলে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে ‘জিওবি (বাংলাদেশ সরকার) বাবদ’ সংরক্ষিত এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুকূলে ‘থোক বরাদ্দ’ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবির সম্পূর্ণ অংশ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত