অবাধে সেগুন গাছ লাগানো এবং বাঁশঝাড় কেটে ফেলার কারণে সুবলং ঝরনাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের ঝিরি-ঝরনাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার।
তিনি বলেন, “ঝিরি-ঝরনার পানি পাহাড়ের মানুষ ব্যবহার করে, এগুলাই হলো ওয়াটারশেড। পাহাড়ের এই ঝিরি-ঝরনা, ছড়াগুলো পাড়ার পথে নিয়ে যেত, আমাদের ট্রেডিশনের সঙ্গে এই ছড়াগুলো জড়িত। এগুলো আমাদের রক্ষা করতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে আপনারা আর সেগুন গাছ লাগাবেন না, বাঁশ গাছ লাগান।”
মঙ্গলবার সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অ্যানেক্স হলরুমে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সেগুন গাছের পাতা বিষাক্ত উল্লেখ করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, সেগুন গাছে কোনও পাখি বসে না, এর গোড়ায় কোনও আগাছাও জন্মায় না। কিন্তু সেগুন গাছের দাম বেশি।
দাম বেশি হওয়ায় প্রচুর সেগুন গাছ লাগানো হলেও এই গাছ পাহাড়ের মানুষের জন্য কল্যাণ নয় বরং অকল্যাণ বয়ে এসেছে বলে মনে করেন কাজল তালুকদার।
তিনি আরও বলেন, “পাহাড়ে এখন আগের মতো আর বাঁশঝাড় নেই। কর্ণফুলী পেপার মিল শুরু হয়েছিল সাজেকের কাচালং, মাচালংয়ের বাঁশঝাড়কে দেখিয়ে, এখানে কাগজপত্র তৈরি করা হয়। এখন আর আগের মতো বাঁশ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে সাধারণত বাঙালিরা মাটি কেটে ঘর করে, পাহাড়িরা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর বানায়। এখন এই ঐতিহ্যগুলোও আধুনিকতার কারণে হারাতে বসেছে।”
সভায় জলবায়ু পরিবর্তনের উপর স্থানীয় সরকারের উদ্যোগ ‘লোকাল গভর্মেন্ট ইনিশিয়েটিভে অন ক্লাইমেট চেঞ্জ-লজিক’ প্রকল্পের জেলা কর্মকর্তা পলাশ খীসা সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান, লজিক প্রজেক্টের মনিটরিং স্পেশালিস্ট টিএম সেলিম।
আরও বক্তব্য দেন প্রজেক্টের ক্লাইমেট চেঞ্জের ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর আমেনা ইয়াসমিন, ইয়ুথ এনগেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটর শাকিলা ইসলাম, ইয়ুথ অর্গানাইজেশার পপি ডাক্তার, সুজাতা চাকমাসহ অন্যরা।