Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

কান উৎসবে নাসিরুদ্দিন শাহ্‌: আরিফিন শুভ’র প্রশংসা, বাংলাদেশে অভিনয়ের আগ্রহ প্রকাশ

কান চলচ্চিত্র উৎসবের চতুর্থদিনে লেখকের সঙ্গে নাসিরুদ্দিন শাহ্‌।
কান চলচ্চিত্র উৎসবের চতুর্থদিনে লেখকের সঙ্গে নাসিরুদ্দিন শাহ্‌।
[publishpress_authors_box]

চার যুগ আগে অভিনয় করেছিলেন ‘মন্থন’ সিনেমায়। সেটি ছিল নাসিরুদ্দিন শাহ্‌ অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। সেই স্মৃতি রোমন্থনেই এবার কান চলচ্চিত্র উৎসবে জীবনে প্রথমবারের মতো হাজির হলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী এই অভিনেতা।

এবারের উৎসবে চতুর্থ দিনে ‘মন্থন’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে ‘কান ক্লাসিকে’। গুজরাটের দুগ্ধখামারীদের ওপর কর্পোরেট আগ্রাসন ঘিরে বর্ষীয়ান নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের ধ্রুপদি এই ছবিকে সম্মান জানিয়ে এই বিভাগে ঠাঁই দিয়েছে উৎসব কর্তৃপক্ষ।

শ্যাম বেনেগালের ক্যারিয়ারে ‘মন্থন’ ছিল তাঁর পরিচালিত তৃতীয় ছবি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবারের উৎসবে যোগ দিতে পারেননি এই নির্মাতা। এসেছেন ৭৮ বছর বয়সী অভিনেতা নাসিরুদ্দীন শাহ্‌ তার স্ত্রী রত্না পাঠক ও অন্য কলাকুশলীদেরকে নিয়ে।

প্রদর্শনী শেষে ফেস্টিভাল অ্যারেনায় মুখোমুখি হলাম অভিনেতা নাসিরুদ্দীন শাহ্’র। উৎসবে আসার উপলক্ষ জানতে গিয়ে এল শ্যাম বেনেগাল প্রসঙ্গ। তখনই লুফে নিলাম, বেনেগালে’র বঙ্গবন্ধু বায়োপিক নির্মাণ প্রসঙ্গটি।

কান ক্ল্যাসিকে উৎসবের চতুর্থদিনে নাসিরুদ্দিন শাহ্‌ অভিনীত ‘মন্থন’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়।

বললেন, “বঙ্গবন্ধু বায়োপিক ছবিটি আমি দেখেছি। খুবই ভালো ছবি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয়, শ্যাম বেনেগালের ছবিটি ব্যাপকভাবে প্রদর্শিত হয়নি। কিন্তু আমি মনে করি, মূল চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন তিনি দারুণ করেছেন। আমি ছবিটি উপভোগ করেছি। ছবিটি দারুণ ইনফরমেটিভ, ইন্টারেস্টিং এবং নাটকীয়।”

আলাপে এরপরই এল, ২৯ বছর পর কানে প্রতিযোগিতা বিভাগে ভারতীয় ছবি ঠাঁই নেওয়ার প্রসঙ্গ। জানতে চাইলাম, কেন এত বছর লাগলো? উত্তরে নাসিরুদ্দীন শাহ্ প্রথমে কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়ে পরে আবার নিজেকে সামলে নিলেন।

বলেন, “যারা এই উৎসবে যোগাযোগগুলো করেন আমি বলবো তাদের ব্যর্থতা।”

পরেই যোগ করেন, “সত্যি বলতে, এ নিয়ে আমার তেমন কোন অভিজ্ঞতা নেই। আমি আগেই বলেছি, আমি প্রথমবার কানে এসেছি। ভারতীয় ছবির মানের কথা যদি বলি তবে বলতেই হয়, তা বাড়ছে। আমাদের ছবি নাচ-গানে ভরপুর। এবং আমরা খুব দ্রুত সামনে এগোচ্ছি। খুব ধীরে হলেও বিভিন্ন ঘরানার ছবি আমরা নির্মাণ করছি। আমি নিশ্চিত, আগামী দশ বছরে ভারতীয় সিনেমায় ব্যাপক পরিবর্তন আপনি দেখতে পাবেন।”

বাংলাদেশের ছবি দেখেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, “না দেখা হয় নি। শ্যাম বেনেগালের বায়োপিক দেখেছি।”

এরপরই হেসে বললেন, “আমি কখনো বাংলাদেশে ছবি করার অফার পাইনি। পেলে খুব খুশি হতাম। আমি দুইবার বাংলাদেশে গিয়েছি থিয়েটারে পারফর্ম করতে। কিন্তু সিনেমা করাটা হয়নি। আপনার মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশের নির্মাতাদের, আমার দরজা সবার জন্য খোলা।”

আলাপের শেষে জানতে চাইলাম, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য কী পরামর্শ দিবেন?

খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে নাসিরুদ্দীন বললেন, “ফরমুলা ছবি দিয়ে আপনি ইন্ডাস্ট্রি ভরে ফেলতে পারেন না। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের দর্শক ভালোভাবে তা বুঝতে পারবে। এই ধরনের ছবি নেতিবাচক প্রভাব রাখে ইন্ডাস্ট্রিতে। আপনার জানা উচিত, ভালো-খারাপের মধ্যে পার্থক্য। জানা উচিত কেন আপনি তা পছন্দ করবেন, কেন নয়!”

এমন সিরিয়াস কথায় বিদায় নিতে চাইলাম না। বললাম, বাংলায় কিছু বলবেন?

মুখের হাসিটা বিস্তৃত হলো। বললেন- ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত