Beta
বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

সৈকতে দুর্গা বেশে সম্প্রীতি ছড়ালেন নওশাবা

[publishpress_authors_box]
[publishpress_authors_box]
দুর্গা সেজে হাজির হলেন অভিনেত্রী ও মডেল নওশাবা। সমুদ্রের তীরে দুর্গার সাজে অনেক বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি।

সামাজিক সংগঠন টুগেদার উই ক্যান ও ফটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠান মোমেন্টওয়ালার যৌথ উদ্যোগে নওশাবার ছবির গল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
ছবিতে আছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, যুদ্ধবিরোধী অবস্থান, পরিবেশ বিপর্যয়ে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাবসহ নানা দিক।

গত ৫ ও ৬ অক্টোবর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে এসব থিমে ছবি ধারণ করা হয়। ছবি তোলা এবং সার্বিক নির্দেশনায় কাজ করেছেন আলোকচিত্রী নাজমুল হোসাইন।

এ নিয়ে সকাল সন্ধ্যার সঙ্গে কথা হয় নওশাবার। তিনিই জানালেন এ কাজের পেছনের ভাবনা।

“আমরা সবসময়ই সম্প্রীতির কথা বলি, শিল্পের কথা বলি, ভালোবাসার কথা বলি। সে জায়গা থেকেই মনে হয়েছে, এ বছরই কেন না? এ বছর আমরা দুর্গাকে আরেকটু বড় করে দেখতে চেয়েছি। দুর্গাকে সমুদ্রের সাথে মতো বিশাল রূপে দেখতে চেয়েছি।”

“নারী বিষয়টিই প্রকৃতির মতো। প্রকৃতির একটা বিরাট অংশ সমুদ্র। সমুদ্রের একটা প্রলয় আছে, শান্ত রূপ আছে-সৌম্যতা আছে, বিদ্রোহ আছে। সে জায়গা থেকেই আমরা দুর্গাকে সমুদ্রের কাছে নিয়ে দেখতে চেয়েছি। দুর্গার কস্টিউম, গেট-আপ, আর্ট ডিরেকশন, ক্যামেরার কাজ এটা সকলে মিলে আমরা করেছি।”

নওশাবা আরও বলেন, “সেই ছোটবেলা থেকেই যখন নানুবাড়িতে যেতাম, পুরনো ঢাকায়, একই উঠোনেই তুলসী গাছ দেখতাম, পথ পেরুলেই গির্জা দেখতাম, নিজেও মিশনারি স্কুলে পড়েছি। এরপরে যখন চারুকলায় এসেছি কখনোই বুঝতাম না যে, পাশে জনাথন আছে, নাকি পাশে বড়ুয়া কেউ আছে, নাকি সাহা।

“যতদিন যাচ্ছে তত দেখতে পাচ্ছি যে নামগুলো খুব আলাদা করে আসছে। আমাদের বাংলাদেশ তো আসলে এমন পরিচয় বহন করে না। যেখানে লালনের জন্ম। সেখানে তো আসলে আমরা ভেদাভেদের মধ্যে চলে যাবো তা মানতে কষ্ট হয়। আমরা আমাদের অবস্থান, আমরা আমাদের চাওয়া, আমরা কীভাবে গান গাইতে চাই, কথা বলতে চাই, ভাব প্রকাশ করতে চাই, একে অপরকে আষ্টেপৃষ্ঠে ভালোবেসেই করতে চাই। সেটাই আসলে এ ফটোস্টোরির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।”

“যে যুদ্ধবাজ পৃথিবী আমরা তৈরি করে ফেলেছি, তার ফলে প্যালেস্টাইনে যা হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও আমরা কথা বলতে চেয়েছি, পরিবেশকে নষ্ট করে ফেলছি, পরিবেশকে নষ্ট করে ফেলছি, পরিবেশকে নষ্ট করা মানে প্রকৃতির শুদ্ধতাকে নষ্ট করা।”

“এরকম এক ধরনের জায়গা থেকে সকল ভাবনাকে একজোট করে আমরা কাজটা করেছি।”

সবগুলো ছবি প্রকাশ করা হয়েছে ‘জল চিত্র’ এবং ’টুগেদার উই ক্যান’ ফেইসবুক পাতায়। তারপর থেকেই ‘দারুণ’ সাড়া পাচ্ছেন টিমের সবাই; যা তাদের ‘অভিভূত’ করেছে বলে জানালেন নওশাবা।

“এ কটা দিন নির্ঘুম রাত গেছে। আমার টুগেদার উই ক্যান এবং ফটোগ্রাফি টিম মোমেন্টওয়ালার। আমরা আসলে যে উদ্দেশ্যে কাজটা করেছি সেই ম্যাসেজটা মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারবো কিনা, যা বলতে চেয়েছি, একজন শিল্পীর মন থেকে সেটা বলতে পারবো কিনা, মানুষের যে পরিমান ফিডব্যাক, তাতে ভীষণ ভীষণ ভালো লাগছে। আশা জাগছে।”
“রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে দেশে সাম্প্রদায়িক শান্তি ও সম্প্রীতি বিনাশের নানা অপতৎপরতা দেখা যাচ্ছে। এক ধরণের ভীতি ও আতংক তৈরিরও চেষ্টা করা হচ্ছে নানাভাবে। এমন একটি কাজ করতে ভয় পাচ্ছিলেন তারাও।”

“চারদিকে তো শুধু দীর্ঘশ্বাসের কথা শুনতে পাই, এই কাজটা করার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কোনো স্পন্সর পাচ্ছিলাম না। সবাই একধরনের ভীতির মধ্যেই ছিল… করাটা ঠিক হবে কি না!“
“তবে আমরা টুগেদার উই ক্যান এবং মোমেন্টওয়ালা চার বছর ধরেই কাজ করে আসছিলাম একসাথে। আমাদের বন্ধুবান্ধব মিলেই এ দলটা।”

“…অনেকেই এগিয়ে এসেছেন সহযোগিতায়। কেউ সাহস যুগিয়েছেন কেউবা প্রত্যক্ষভাবে নানা সহযোগিতা দিয়েছেন।”
“এ কাজে যারা আমাদের সহযোগিতা করেছে তারা না থাকলে কাজটি করতে পারতাম না। শাড়ি দিয়েছে খুঁত, অঙ্গরাগ, গয়না দিয়েছে কাদম্বরী, ডিভাইন ইকো রিসোর্ট দু’দিন থাকার জন্য ফ্রি ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সেলফ হিলিং হাব-এর বন্ধুরাসহ অনেকেই যেভাবে পেরেছেন সহযোগিতা করেছেন। সকলের প্রতি ‍কৃতজ্ঞতা জানাই।”

সকলের প্রতি শারদীয় শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন নওশাবা ও তার বন্ধুরা।

আরও পড়ুন