Beta
শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫

এক সপ্তাহ পর খুলল এস আলমের ৯ কারখানা

s-alam-sugar-mill-qyzgwelwwhwjlui8pj0f6qgn1fgeupmohqvi5sku1k
[publishpress_authors_box]

‘অনিবার্য’ কারণ দেখিয়ে বন্ধ করা নয়টি কারখানা এক সপ্তাহ পর বুধবার খুলে দিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায় গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। গত ২৪ ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে কারখানাগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল গ্রুপটি।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ওই নয় কারখানায় ১২ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক রয়েছেন। কারখানা ফের চালুর খবর পেয়ে এদিন সকালেই কাজে যোগ দেন তারা।

তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কারখানাগুলো এখনই উৎপাদনে যেতে পারছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এসব কারখানায় কর্মরতরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পাবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।    

গত ২৪ ডিসেম্বর এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের সই করা নোটিসে বলা হয়েছিল, ‘অনিবার্য কারণবশত’ ৯টি কারখানা বন্ধ করা হচ্ছে।

একই কর্মকর্তা আরেক নোটিসে কারখানা খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানালেও এর সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

কারখানাগুলো হলো- এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল (এনোফ), এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড, ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, চেমন ইস্পাত লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ও এস আলম স্টিল।

এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, “শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবি মেনেই কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

“এর আগে কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও শ্রমিক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পান। তবে কারখানার উৎপাদন এখন বন্ধ থাকবে। কারণ পণ্য উৎপাদনের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমাদের নেই। আমদানিরও সুযোগ নেই। ফলে সব কারখানা থেকে উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।”

এস আলম গ্রুপের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “আমাদের হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছে। শুধু কারখানা নয়, গ্রুপের সব ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ। ঋণপত্র খোলার সুযোগ নেই। ফলে পণ্য আমদানি করে কারখানা চালুর সুযোগ রাখা হয়নি। আমাদের আবেদনে সাড়াও মেলেনি।

“তাছাড়া একাধিক কারখানার সম্পদ নিলামে তোলা হয়েছে। শ্রমিকদের অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে কারখানাগুলো কতদিন এভাবে খোলা রাখা যাবে, আমরা নিশ্চিত নই।”

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ পেয়ে একে একে সাতটি বেসরকারি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকগুলোর কর্তৃত্ব হারায় গ্রুপটি।

গত ১ ডিসেম্বর তাদের কাছে পাওয়া ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ ফেরত পেতে মামলা করে জনতা ব্যাংক। এ ধরনের মামলা এস আলমের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম।

এরপর ১৯ ডিসেম্বর এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদ, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং পরিবারের ৯ সদস্যের ১২৫টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় চট্টগ্রামের আদালত এই নির্দেশ দিয়েছিল।

এর মধ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর নিজেদের বিনিয়োগ ধ্বংসের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম।

নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্য উপদেষ্টাদের কাছে এই নোটিস পাঠান তিনি।

তাতে বলা হয়, সরকার ছয় মাসের মধ্যে এস আলম গ্রুপের চলমান অর্থনৈতিক সংকটের সমাধান না দিলে আন্তর্জাতিক সালিশি কার্যক্রম শুরু করবে তারা।

সেই নোটিসের খবর বাংলাদেশে জানাজানির পরপরই ৯টি কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল এস আলম গ্রুপ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত