Beta
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

কোনও দেশই পাচার অর্থ ৫ বছরের আগে ফেরত আনতে পারেনি : গভর্নর

ahsan h monsur
[publishpress_authors_box]

পাচার করা অর্থ দেশে ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তার ধারাবাহিকতা পরবর্তী সরকারকে ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইআরএফ আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, অন্যথায় অন্তর্বর্তী সরকার যে উদ্যোগ নিচ্ছে তার সুফল মিলবে না।

ঢাকার পল্টন টাওয়ারে ইআরএফ মিলনায়তনে ‘সেমিনার অন বাংলাদেশ ম্যাক্রোইকোনোমিক ল্যান্ডস্কেপ : চ্যালেঞ্জেস ইন দ্য ব্যাংকিং সেক্টর অ্যান্ড দ্য পাথ এহেড’ শীর্ষক এ সেমিনার হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আলী।

গভর্নর বলেন, “কোনও দেশই পাচার করা টাকা ৫ বছরের আগে ফেরত আনতে পারেনি। আমরা চেষ্টা করছি। এই সরকারের পক্ষে সম্ভব না হলে পরবর্তী সরকার যেন এই কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যায়।”

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে। তবে বিদেশি মুদ্রা ও রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। রিজার্ভের পতন কিছুটা হলেও থামানো গেছে। আইএমএফের কাছ থেকে এখনও এক টাকাও আসেনি। কিন্তু রেমিট্যান্স ২৪ শতাংশ বেড়েছে। এ মাসে ৩০ শতাংশ ছাড়াবে। এ বছর রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ছাড়াবে। এর মূল কারণ টাকা পাচার ঠেকানো গেছে।

ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখার উদ্যোগ কাজে লেগেছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনও ডলার এখন বিক্রি হচ্ছে না। ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে ডলারের দরের ব্যবধান নেই বললেই চলে।

রেমিটেন্সের দর পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, “দুবাইয়ে একটা গ্রুপ ডলার ম্যানুপুলেশন করতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা এতে প্রভাবিত হয়নি।”

গভর্নর বলেন, “আমানতের প্রবৃদ্ধি কমার কারণে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে। নীতি সুদহার বৃদ্ধির বাড়ার কারণেই যে কমেছে, সেটা নয়।”

“ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ ছিল ১২ শতাংশ। সেটা কমে এখন ৯ শতাংশ হয়েছে। এখন ব্যাংকগুলোকে বেসরকারি খাতে ঋণ দিতে হবে। শুয়ে শুয়ে পয়সা কামানো ব্যাংকিং নয়”, যোগ করেন তিনি।

ব্যাংকি খাতের সংস্কার নিয়ে গভর্নর বলেন, কোনও একক পরিবার যদি একটি ব্যাংকের ৮৭ শতাংশ টাকা নিয়ে যায় সেই ব্যাংক দাঁড়াতে সময় লাগে। এত কিছুর পরেও ইসলামী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারা ঋণ দেওয়া শুরু করেছে।

ব্যাংকিং খাত সংস্কারে নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হার এখন অনেক বেশি স্থিতিশীল। রিয়েল ইফেক্টিভ এক্সচেঞ্জ রেটও ভালো। আমাদের রেমিটেন্সের প্রবাহ ভালো।”

ইআরএফ এর সহ-সাধারণ সম্পাদক মানিক মুনতাসিরের সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালা।

অনুষ্ঠানে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বিনিয়োগ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি খাত হলো, ব্যাংক ও রাজস্ব খাত। তবে এনবিআরের কার্যকর সংস্কার না হলে ব্যাংক খাত এগোবে না।

তিনি বলেন, পাচারের টাকা ফেরত আনা সম্ভব। এজন্য পাচারকৃত অর্থের আলটিমেট বেনিফিশিয়ারি কে তা খুঁজে বের করতে হবে।

পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমরা এক সময় প্রবেলম ব্যাংক ছিলাম। এই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৫৪ শতাংশ। এখন সেই ব্যাংকটি একটি ভালো ব্যাংকের পরিণত হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কারণে।”

ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য পরিচালক নিয়োগের নীতিমালা আরও সুগঠিত করার সুপারিশ করে তিনি বলেন, আইটি বেইজড সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাহলে পলাতক কেউ ই-কেওয়াইসি দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, মুদ্রা পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে অন্য ব্যাংকের রিয়েল টাইম ইন্টিগ্রেশন থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত