নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায়, সে বিষয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার খুলনায় এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, অপরাধ করলে দোষীকে যেমন ছাড় দেওয়া যাবে না, একইভাবে ভুয়া মামলা দায়েরকারীদেরও ছাড় দেওয়া যাবে না। উভয়কেই আইনের আওতায় আনতে হবে।
খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিভাগীয় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়নে সুশীল সমাজকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব সন্তোষজনক পর্যায়ে না পৌঁছালেও পরিস্থিতির ক্রমোন্নয়ন ঘটছে। হয়তো জনগণ যত দ্রুত চাচ্ছে, তত দ্রুত এর উন্নয়ন ঘটছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন ঘটাতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।”
তিনি বলেন, আগস্টে থানা থেকে অস্ত্র লুট হওয়ার পর যৌথবাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে যে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের কথা ছিল, সেটি আশানুরূপ হয়নি। এর সঙ্গেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সম্পর্ক রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসময় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম বেগবান করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
কোনও অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “কেউ অপরাধ করলে মব জাস্টিসের নামে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। অপরাধীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নিকট সোপর্দ করতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।”
যুব সমাজের মধ্যে মাদকের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “মাদক গ্রহণের মাধ্যমে যুব সমাজের ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের উন্নয়নের আরেকটি অন্তরায় দুর্নীতি নামক মহাব্যাধি। এটি রোধ করা ছাড়া সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। মসজিদের ইমামদেরকেও তাদের খুতবায় এ বিষয়টি নিয়মিত গুরুত্বের সঙ্গে আলোকপাত করতে হবে।”
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, র্যাব মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হক।
সভায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, র্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, পাসপোর্ট ও বহিরাগমন অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক ও বিভিন্ন ধর্মীয় নেতারা অংশ নেন।
