মশাবাহিত ডেঙ্গুসহ অন্যান্য রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সাজাতে ৬০ দিনের মধ্যে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সারাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়।
রুলে এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছে আদালত।
প্রতিদিনই সারাদেশে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গু রোগে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৭৪ হাজার ৮০০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩৬৭ জনের।
ডেঙ্গুসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বনী ইসমাইল গত সপ্তাহে এ রিট আবেদনটি করেন।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীর ওপর আদেশ ও রুল জারি করা হয়েছে।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আশিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ।
আইনজীবী মাহিন বলেন, “কিভাবে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার এবং ডেঙ্গুর বিস্তার কমাবে, এ বিষয়ে কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়ে সরকার ৩০ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে। আর ৬০ দিনের মধ্যে মশাবাহিত রোগটির বিষয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।”
ডেঙ্গু প্রতিরোধে কীভাবে কাজ করতে হবে তা সরকারি সংস্থা থেকে বের করা সম্ভব না জানিয়ে তিনি বলেন, “উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এ কমিটি এ সংক্রান্ত গবেষণালব্ধ বিষয় দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে টেকনিক্যাল এক্সপার্ট প্রয়োজন পড়ে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো এভাবেই করেছে।”
শুনানির সময় আদালত ডেঙ্গুতে মৃত্যু নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জানিয়ে আইনজীবী মাহিন বলেন, “আমরা আদালতে বলেছি, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের কলকাতায় ডেঙ্গুর সমস্যা অনেকটা মিটিয়ে ফেলেছে। মালয়েশিয়াতেও করেছে। কোর্টের ভিউ হলো, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের বিশেষ মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের যে সংখ্যা জানিয়েছে, আনঅফিসিয়ালি সংখ্যা আরও অনেক বেশি।