পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জা এবং ছোট মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শকের স্ত্রী ও মেয়ের আয়কর নথি জব্দ চেয়ে দুটি আবেদন করেন। সংস্থাটির পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন।
পরে আদালত তাদের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেয়।
বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জার আবেদনে বলা হয়, তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন এবং ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার স্ত্রীকে এসব অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন প্রতীয়মান হওয়ায় মামলা করা হয়েছে।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। এ অবস্থায় আয়কর অফিস থেকে নথি জব্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অন্যদিকে বেনজীর আহমেদের ছোট মেয়ে তাহসীন রাইসার আবেদনে বলা হয়, তাহসীন রাইসা ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশ ও র্যাবের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তাহসীন রাইসাকে অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।
ভাইসহ সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের আয়কর নথি জব্দের আদেশ
ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করার অভিযোগে বুধবার পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ও তার ভাই এ বি এম শাহারিয়ারেরও আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।
এদিন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) দুদকের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
পৃথক দুই আবেদনে হারুন ও তার ভাই শাহারিয়ারের আয়কর নথি জব্দের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর রহুল ইসলাম খান।
হারুনের আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়, আসামি হারুন অর রশীদ সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০৬ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কর সার্কেল-১২৯, কর অঞ্চল-০৬, ঢাকার টিআইএন ৫১২১৪৭১১৩২৭০ এর সব আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। এ অবস্থায় আয়কর অফিস থেকে রেকর্ডপত্র জব্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
শাহারিয়ারের আয়কর নথি জব্দের আবেদন বলা হয়, আসামি এ বি এম শাহারিয়ার ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
আসামি হারুন অর রশীদ বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার ভাইকে অপরাধে সহায়তা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কর সার্কেল- ২০৩, কর অঞ্চল-১০, ঢাকার টিআইএন ৫৬৬৬২২৪৫৭২০৫ এর সব আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। এ অবস্থায় আয়কর অফিস থেকে রেকর্ডপত্র জব্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
