অন্তত চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া পি কে হালদারের প্রসঙ্গ উঠে এল সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের এক মামলার শুনানিতে।
পি কে হালদারের পাচার করা অর্থের প্রসঙ্গ টেনে তার সঙ্গে পলকের সম্পদের তুলনা করলেন স্বয়ং বিচারক।
সোমবার দুদকের একটি মামলায় ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেনের আদালতে হাজির করা হয়েছিল পলককে। যার বিরুদ্ধে রয়েছে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা।
সেই মামলার শুনানিতে বিচারক আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “তার (পলক) এত কম টাকা, সম্পদ তো অনেক কম। শুনানি করার সময় আপনারা তো বলেন হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। ওদিকে পি কে হালদার তো পাঁচ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে।”
পলকের পক্ষে শুনানি করেন ফারজানা ইয়াসমিন রাখি। তিনি বলেন, “পলক সাহেব নিয়মিত ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেছেন। তার সম্পদের সকল উৎস সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। তার যে সম্পদ ছিল, সেই সম্পদই আছে। কেবল সম্পদের বাজারমূল্য বেড়েছে। যে কারণে তার মানি লন্ডারিংয়ের যে অভিযোগ তার কোনও উপাদান নেই।”
তিনি পলকের জামিন চাইলে তার বিরোধীতা করেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
তিনি বলেন, “মানিলন্ডারিং দেশে-বিদেশে যেকোনো জায়গায় হতে পারে। মামলা তদন্ত হয়ে আসুক। তাদের মতো জায়গায় থেকে দুর্নীতি করা, এ অবস্থায় যদি তাদের জামিন দেওয়া হয় তাহলে অন্যরা অপরাধ করতে উৎসাহিত হবে।”
দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। এরপর তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
যাত্রাবাড়ি থানার এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন জুনাইদ আহমেদ পলক। দুদকের মামলায় নতুন করে তাকে গ্রেপ্তার দেখাতেই আজ আবেদন করেছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন। সেই শুনানিতেই উঠে আসে এসব কথা।
আদালতের অনুমতি নিয়ে কথাও বলেন পলক। সাবেক এই ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বিচারককে বলেন, “বিচার ব্যবস্থা এনালগ করে রেখেছেন। না হলে আজকে আদালতে আসতে হতো না। কারাগারে বসে হাজিরা দিতাম। করোনার সময় চালু করেছিলাম। তখন অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল, তবু চেষ্টা করেছি। পরে আর বিষয়টি নিয়ে এগোনো যায়নি।”