প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয়েছে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাসেবা।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান সকাল সন্ধ্যাকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি বলেন, “পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। জরুরি বিভাগ আবার চালু হয়েছে। রোগীরা সেবা নিচ্ছেন।”
এর আগে জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীদের সঙ্গে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের কর্মচারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যার ফলে বন্ধ হয়ে যায় পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা।
মারামারির ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে ডা. আবুল কেনান বলেন, “ব্ল্যাড ব্যাংকে সকালের দিকে একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে জুলাই আন্দোলনে আহত আর কর্মচারীদের সঙ্গে। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এটাতো চলতে পারে না, তাই আমি দ্রুত সবাইকে নিয়ে বসি।”
উপস্থিত আইন-শৃংখলা বাহিনী, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কর্মচারী, ছাত্র প্রতিনিধিসহ সবাইকে নিয়ে আলোচনা শেষে সমঝোতায় পৌঁছেন বলে জানান এই চিকিৎসক।
তিনি বলেন, “আমরা একটা সমঝোতায় পৌঁছেছি। সমস্যা মিটে গেছে। চিকিৎসা চালু হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত থাকবে বলেই আশা করি।”
মারধরের ঘটনার বিষয়ে হাসপাতালটির একাধিক কর্মচারী সকাল সন্ধ্যাকে জানান, বেলা সাড়ে ১১ টার পর থেকে জরুরি বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের ভেতরে সেনাবাহিনী আর প্রধান ফটকে পুলিশে অবস্থান দেখা যায়। মারামারির পর কর্মচারীরাও হাসপাতাল থেকে চলে যায়। তখন জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারগুলো ফাঁকা পড়ে থাকে।
তবে মারামারির আগে যারা টিকিট কেটেছিলেন তারাও চিকিৎসা নিতে পারেননি বলে জানান এক ওয়ার্ড মাস্টার।
একাধিক কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরেই এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মচারীদের নানা ধরনের দ্বন্দ্ব চলছে। এর মধ্যে রবিবার রাতে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের কর্মী রফিককে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার সকালে তারা কর্মবিরতি পালন করেন।
সেই কর্মবিরতির মধ্যেই তাদের ওপর আবার হামলা চালানো হয়।
তবে অভ্যুত্থানে আহত চিকিৎসাধীন মামুন নামের এক রোগী জানান, হাসপাতালের দালাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “ফিজিওথেরাপি নিতে গিয়েছিলেন আমাদেরই কয়েকজন। তখন তাদের ওপর হামলা চালায় হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারি আর দালাল।”