কোচ পিটার বাটলারের বিপক্ষে বিদ্রোহই করেছেন জাতীয় নারী দলের ফুটবলাররা। তার অধীনে অনুশীলনে অংশ নেননি তারা। বাটলার থাকলে গণ অবসর নেওয়ার হুমকির কথা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকাল সন্ধ্যাকে বুধবারই জানিয়েছিলেন কয়েকজন ফুটবলার।
বৃহস্পতিবার আর কোনও লুকোচুরি নয়। আনুষ্ঠানিকভাবে গণঅবসরের হুমকি দিলেন ফুটবলাররা।
সন্ধ্যায় এক যোগে ফুটবলাররা বাফুফে ভবনের নিচে এসে বাটলারের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। তিন পাতার এক বিবৃতিও দিয়েছেন গণমাধ্যমের হাতে।
সেখানে তুলে ধরেছেন কোচের সঙ্গে তাদের নানা অসংগতি। এতে সই করেছেন অধিনায়ক সাবিনা, মনিকা, শামসুন্নাহার, সানজিদা, ঋতুপর্ণাসহ ১৭ ফুটবলার।
পিটার বাটলারের অধীনে অনুশীলন না করার কথা স্পষ্ট করেই লেখা রয়েছে সেই বিবৃতিতে। সেখানে বলা হয়, ‘‘আমরা আশা করছি, বাফুফের মাননীয় সভাপতি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আশু সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন। এর আগপর্যন্ত আমরা পিটারের অধীনে কোনও ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশ নেব না।’’
বাটলারকে নিয়ে বাফুফে সিদ্ধান্ত বদল না করলে গণ অবসরের কথাও লেখা হয়েছে বিবৃতিতে।
ফুটবলাররা লিখেছেন, “যেহেতু গত অক্টোবরের পর কোনও ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফে কোনও চুক্তি নবায়ন করেনি, তাই আইনত বাফুফে আমাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে না।
“তারপরও যদি সে রকম কিছু করার সিদ্ধান্ত হয় এবং পিটার বাটলারকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকে, তবে আমরা একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হব। ভেবে নেব, দেশের নারী ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।’’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বল এখন বাফুফের কোর্টে। তারা পিটার বাটলারকে রেখে দেবে নাকি জাতীয় দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের চাওয়া মেনে নেবে সেটাই দেখার বিষয়।
জাতীয় নারী দলের ফুটবলাররা এমন সময় অনুশীলন বয়কট করলেন যখন আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটো ম্যাচ খেলতে যাওয়ার কথা তাদের।
সেখানে প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২৬ ফেব্রুয়ারি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে অংশ নেবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এরপর ২ মার্চ একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন ফুটবলাররা।
মেয়েদের সঙ্গে বাটলারের দূরত্ব শুরু হয় সাফ ফুটবল থেকে। অক্টোবরে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই মারিয়া, মাসুরা, কৃষ্ণার মতো সিনিয়রদের বাদ দিয়ে একাদশ সাজিয়েছিলেন এই কোচ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই ম্যাচ হারতে হারতেই কোনোরকমে ড্র করে বাংলাদেশ। অনাকাঙ্ক্ষিত ড্রয়ের পরই মনিকা চাকমা প্রকাশ্যে আনেন বাটলারের সিনিয়র ফুটবলারদের অপছন্দের কথা। এরপর ফুটবলারদের চ্যালেঞ্জের মুখে ভারতের ম্যাচে কোচ সিনিয়রদের নিয়েই একাদশ সাজাতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং দারুণ জয়ে তার ফল মেলে।
ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় সাবিনা-ঋতুপর্ণারা। নৈতিকভাবে এই বিজয়িনীদের কাছে হার মানতে হয়েছিল বাটলারকে।
এরপরও বাফুফে নতুন করে এই ব্রিটিশ কোচকে নিয়োগ দেয় দুই বছরের জন্য। এখানেই মেয়েদের আপত্তি। কিন্তু বাফুফের দাবি হচ্ছে, তারা বাটলারকে দিয়েই চালাবে মেয়েদের ফুটবল। এজন্য এক বাফুফে কর্তাকে দিয়ে মেয়েদের বেশ হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।