Beta
সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪

নিউ ইয়র্কে ইউনূস-মোদী বৈঠক হচ্ছে না : হিন্দুস্তান টাইমস

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদী
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদী
[publishpress_authors_box]

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে বুধবার ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে একটি বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানানো না হলেও বৈঠকটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই সংশ্লিষ্টদের বরাতে জানাল হিন্দুস্তান টাইমস।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ ধরনের বৈঠক ভারতীয় পক্ষের এজেন্ডার অংশ নয়। এছাড়া তিনদিনের সফরে নরেন্দ্র মোদী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাবেন, যেখানে ২১ সেপ্টেম্বর তিনি ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে কোয়াড লিডারস সামিটে যোগ দেবেন এবং ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘সামিট ফর দ্য ফিউচার’-এ ভাষণ দেবেন।

এক কর্মকর্তা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদী নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে কিছু দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে সূচিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে তার কোনও বৈঠক নেই।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতন হলে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তবে সম্প্রতি ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যের পাশাপাশি ভারতের প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যদের সমালোচনামূলক মনোভাব ঢাকার প্রস্তাবে নয়াদিল্লির সাড়া না দেওয়ার কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারতে অবস্থানকালে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে মন্তব্য করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন। তিনি পরামর্শ দেন, বাংলাদেশ তার প্রত্যর্পণ চাইতে পারে এবং শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য সব রাজনৈতিক দল “ইসলামপন্থী”- এমন “বক্তব্য” থেকে ভারতকে সরে আসতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ অন্য সদস্যরাও বারবার শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন। একইসঙ্গে তিনি এটাও স্বীকার করেছেন যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ ভারত সরকারের জন্য ‘বিব্রতকর পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করবে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার পর ২৯ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এই সফরে ইউনূস-মোদী বৈঠক হবে কিনা জানতে চাইলে সম্প্রতি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না যে হচ্ছে বা হচ্ছে না। তারা যদি চায় যে দেখা করবে না, আমাদের তো জোর করে দেখা করার কিছু নেই।”

এদিকে, নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে সম্প্রতি পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ তথ্য জানায়। যদিও এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে থাকেন। বাংলাদেশের সরকারপ্রধানও এ ধরনের বৈঠক করেন।

গত বছর জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচটি দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান এবং উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গতবছর শেখ হাসিনারও বৈঠক হয়নি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত